রঞ্জু খন্দকার, গাইবান্ধা থেকে: লক্ষ্মীপুরের নিশান আহমেদ লালমনিরহাটের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন ও অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা। সম্প্রতি ইদের ছুটিতে বেড়াতে এসেছিলেন গাইবান্ধায়। গাইবান্ধার বন্ধু মো. জনি তাঁকে ঘুরতে নিয়ে গিয়েছিলেন ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে বালাসীঘাটে। কিন্তু সেখানে গিয়ে জনি, নিশান– দুজনই হতাশ।
নিশান ও জনি দেখেন, সময়ের খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্রের বুকে এখন ধু-ধু বালুচর, পানির নিশানাই তেমন নেই। অন্যবার এখানে ঘুরতে হতো নৌকায়। এবার ঘুরলেন ঘোড়ায়।
নিশান বলেন, বৈশাখে হাঁটুজল হয়ে যায় ছোট নদীগুলো। কিন্তু এ তো ব্রহ্মপুত্র! এর এ অবস্থা কবে থেকে?
জনি জানান, গত কোরবানির ইদেও তিনি এখানে বেড়াতে এসেছিলেন। তখন অবশ্য পানি ভালোই ছিল। এবার পানি না থাকায় চর দর্শন করতে হলো।
শুধু নিশান ও জনিই নন, ব্রহ্মপুত্রের বুকে ঘুরতে এসে হতাশ হয়েছেন অনেকেই। অন্যবার তাঁরা নদীতে নৌকায় করে ঘুরেছেন। নদী পার হয়ে চরে গেছেন। এবার নদীর বুকেই চর পড়েছে। সেখানেই ঘুরেছেন ঘোড়ায় চড়ে।
ইদের তৃতীয় দিন বালাসীঘাট গিয়ে দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে যেন দর্শনার্থীর ঢল। নানা বয়সী নারী-পুরুষের মিলনমেলা। তবে তরুণ-তরুণীর সংখ্যা বেশি।
দর্শনার্থী কয়েকজন জানান, তাঁরা বেশির ভাগই গাইবান্ধার বাসিন্দা। তবে গাইবান্ধায় থাকেন না। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বাস করেন। ইদের ছুটিতে গাইবান্ধা এসেছেন। তবে এবার বালাসীতে এসে তাঁরা হতাশ। ব্রহ্মপুত্রের প্রাণ যেন নিভু-নিভু। নদীর বুকজুড়ে বালুর মেলা।
এ জেলার ফুলছড়ি উপজেলার বাসিন্দা ফারুক হোসেন বলেন, বালাসীর বুকে এলে আগে প্রাণ শীতল হতো। এবার প্রাণ যেন মরুভূমির মতো তপ্ত হলো।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, গাইবান্ধায় খোলা জায়গায় ঘোরাঘুরি করার সবচেয়ে জনপ্রিয় জায়গা এই বালাসীঘাট। সে কারণে ইদের দিন থেকেই এখানে দর্শনার্থীর ভিড়। কিন্তু অনেকেই এসে হতাশ হয়ে ফিরছেন।
ঘাটের দোকানি খায়রুল ইসলাম বলেন, আগে লোকজন এখানে এসে অনেকক্ষণ সময় কাটাতো। বেচাবিক্রি ভালো হতো। এবার এসে অল্প সময়েই চলে যাচ্ছেন। বিক্রিও কম।
ঘোড়ার গাড়ির চালক সবুজ মিয়া চরে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার জন্য দর্শনার্থীদের ডাকছিলেন। তিনি জানান, এ ঘাটে ইদ উপলক্ষে ৫০টির বেশি ঘোড়ার গাড়ি চলছে। এবার তাঁদের কামাই ভালো।
ক্ষীণ ব্রহ্মপুত্রের বুকে নৌকার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন মাঝি আব্দুল কাদের। তিনি বললেন, নদী শুকিয়ে খালে পরিণত হয়েছে। তাই এবার তাঁদের কামাই নেই। আসছে বর্ষায় নদী আবার ভরে উঠবে। তখন কামাই বাড়বে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।