আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ ত্যাগ করা নিয়ে মিসরের একটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস এবং ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে)।
মিসরীয় সূত্র জানিয়েছে, হামাস ও জিহাদ উভয়ে দৃঢ়ভাবে বলে দিয়েছে যে বন্দীদের মুক্তির বিষয়টি ছাড়া আর কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে তারা আগ্রহী নয়।
সম্প্রতি কায়রো সফরকারী এক হামাস কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের জনগণ ইসরাইলি আগ্রাসন, গণহত্যা ও হত্যাযজ্ঞ অবসান চায় হামাস। আমরা সেটা নিয়ে আমাদের মিসরীয় ভাইদের সাথে আলোচনা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আরো বলেছি, আমাদের লোকজনকে সহায়তা করা অব্যাহত রাখতে হবে, সাহায্য আরো বাড়াতে হবে এবং উত্তর ও দক্ষিণের সব মানুষের কাছে তা অবশ্যই পৌঁছাতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আগ্রাসন বন্ধ হলে এবং সাহায্য বাড়লে আমরা তখন বন্দী বিনিময় করর জন্য প্রস্তুত হবো।’
কাতারের সমর্থন করা মিসরীয় পরিকল্পনার প্রথম ধাপে দুই সপ্তাহের (তা তিন বা চার সপ্তাহ বাড়তে পারে) যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। এ সময় ৪০ জন বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে। এর বিনিময়ে ইসরাইল ১২০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে ছেড়ে দেবে। এ সময়ে যুদ্ধে বিরতি থাকবে, গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ করবে।
মিসরের প্রস্তাবে দ্বিতীয় পর্যায়ে ‘ফিলিস্তিনি জাতীয় সংলাপের’ কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে ফাতাহর প্রাধান্যপূর্ণ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং হামাসের মধ্যে আলোচনা হবে। এর মাধ্যমে পশ্চিম তীর ও গাজায় একটি টেকনোক্র্যাট সরকার গঠন করার চেষ্টা হবে। এই সরকারই গাজার পুনর্গঠন তদারকি করবে, ফিলিস্তিনি পার্লামেন্ট এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজন করবে।
মিসরীয় প্রস্তাবের তৃতীয় ধাপে একটি ব্যাপকভিত্তিক যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। এ সময় সৈন্যসহ বাকি ইসরাইলি বন্দীদের মুক্তি দেয়া হবে। এর বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগারগুলোতে আটক নির্দিষ্ট সংখ্যক হামাস এবং ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ গ্রুপেরসহ নিরাপত্তা বন্দীদের মুক্তি দেয়া হবে। সম্ভাব্য মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে মারাত্মক অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত এবং ৭ অক্টোবরের পর আটক ব্যক্তিরাও থাকবে। এই পর্যায়ে ইসরাইল গাজা উপত্যকা থেকে তার বাহিনী সরিয়ে নেবে এবং বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীদেরকে তাদের বাড়িতে ফিরতে দেবে।
এদিকে শনিবার হামাসের পলিটব্যুরো নেতা ইসমাইল হানিয়া কাতারে তার আবাসস্থলে ফিরে গেছেন। আর রোববার মিসরীয় কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনার জন্য কায়রো গেছেন গাজার ইসলামিক জিহাদের একটি প্রতিনিধি দল।
একইসাথে রোববার রাতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসকে ধ্বংস না করা পর্যন্ত গাজায় হামলা থামানো হবে না বলে ফের ঘোষণা করেছেন। তিনি গাজায় ইসরাইলি অভিযানের তিনটি লক্ষ্যের কথা জানান। এগুলো হচ্ছে হামাসকে ধ্বংস করা, গাজার ক্ষমতা থেকে হামাসকে উৎখাত করা এবং পণবন্দীদের মুক্ত করা।
তবে নেতানিয়াহু বেশ চাপে আছেন। রোববারও তেল আবিবে গাজায় আটক ইসরাইলি সকল বন্দীর মুক্তির জন্য চুক্তি করতে হাজার হাজার লোক বিক্ষোভ করেছে। অবশ্য, উগ্রপন্থীরা এ ধরনের কোনো চুক্তি না করার জন্য হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছে।
সূত্র : টাইমস অব ইসরাইল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।