জুমবাংলা ডেস্ক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-৫ নির্বাচনী আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি এমপি। এ আসনের তাঁর শক্ত প্রতিদ্বন্ধি সাবেক এমপি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতারউজ্জামান।
শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুরকে বলা হয় বাংলাদেশের দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ। আর এই গাজীপুরেরই একটি আসন গাজীপুর-৫। বিএনপি ভোটের মাঠে না থাকায় এ আসনেও এক প্রকার নিশ্চিত হয়েছে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকির জয়। আর আসনে লড়াইটা হবে মূলত আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে বঞ্চিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী স্বতন্ত্রের। ঢাকার খুব লাগোয়া গাজীপুর-৫ আসনটিকে ঘিরে নির্বাচনি উত্তাপ চরমে পৌঁছেছে। নির্বাচনি প্রচারে নৌকার প্রার্থীরা আটঘাট বেঁধে নেমেছেন। অন্যদিকে, স্বতন্ত্রের প্রার্থীরাও পিছিয়ে নেই। তবে শুরু দিকে স্থানীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সাথে নৌকা প্রতীকের প্রার্থক্যটা বেশি থাকলেও দিনরাত সভা-সমাবেশ করে শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করেছেন নৌকার প্রার্থীরা। শেষ দিকের ব্যাপক প্রচারে গাজীপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীদের গতির কাছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের গতি অনেকটা জিমিয়ে পড়েছে। ফলে বলা যায় গাজীপুর-৫ আসনে শুরুতে ঘরের শত্রুতে কাবু হলেও এখন হাওয়া লাগতে শুরু করেছে নৌকা পালে।
জানা গেছে, এটি জাতীয় সংসদের ১৯৮ নম্বর আসন। কালীগঞ্জ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়ন, গাজীপুর সিটির ৩টি ওয়ার্ড এবং গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও বর্তমান সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দুইবারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী এমপি’র বাবা শহীদ ময়েজউদ্দিন আহমেদের জন্মস্থান এটি। এ আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে জেলায় পরিচিত রয়েছে। এ আসনে মেহের আফরোজ চুমকি আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য। বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি এ নির্বাচনী এলাকার ব্যাপক উন্নয়নও করছেন। এবারও তিনি দলের কাছে মনোনয়ন চেয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন। অন্যদিকে, এ আসনে আওয়ামী লীগের আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক এমপি, ডাকসু’র সাবেক ভিপি ও গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আখতারউজ্জামান। আর চুমকির প্রধান প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীই হচ্ছেন স্বতন্ত্রের আখতারউজ্জামান।
স্থানীয় আ’লীগ নেতৃবৃন্দ বলছেন চতুর্থবারের মত নৌকার মাঝি হবেন চুমকি। অন্যদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা বলছেন আখতারউজ্জমানই হবেন এবারের এমপি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারউজ্জামান বলেন, বিগত ১১টি বছর আমি জেলা পরিষদে বসে কালীগঞ্জে এমন কোন স্থান নেই যেখানে আমার দেওয়া সহওযাগীতায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। তাছাড়া সম্ভাবনার কালীগঞ্জে উন্নয়ন করার অনেক কিছু বাকী আছে, তাই সুযোগ পেলে তা করতে চাই।
মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা জণগনকে ভালোবেসে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশকে উন্নয়নের সর্বোচ্চ স্থানে নিয়ে গেছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ হওয়ার পথে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সবাই নিরাপদ, শান্তি ও স্বস্তিতে থাকে, দেশও এগিয়ে যায়। তাই শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চতুর্থবারের মতো নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান করেন এই নারী নেত্রী। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ জনপদে নৌকার মাঝি হিসেবে স্থানীয়দের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন বলেও তিনি আশা করেন।
এ আসনে আ’লীগের মেহের আফরোজ চুমকি ও স্বতন্ত্রের আখতারউজ্জামান ছাড়াও গণফোরামের মো. সোহেল মিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, সুপ্রিম পার্টির উর্মি ভান্ডারী ও ইসলামী ফ্রন্টের মো. আল আমিন দেওয়ান ও স্বতন্ত্রের মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন স্বপনসহ মোট ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ৭ জন থাকলেও এরই মধ্যে জাতীয় পার্টির ‘লাঙ্গল’প্রতীকের প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন নির্বাচন থকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
এ আসনে আসনে ১০৫টি ভোট কেন্দ্রের ৬৯৫টি বুথে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৬১৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধীকার প্রয়োগ করবেন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৭২ জন, নারী ভোটার সংখ্যা হলো ১ লাখ ৬৪ হাজার ৫৩৯ জন ও হিজড়া ভোটার ২ জন।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৯৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের মেহের আফরোজ চুমকি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির এ কে এম ফজলুল হক মিলন। তিনি পান ৭৫ হাজার ১১৮ ভোট। এর পর ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান চুমকি। ওইবার তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান চুমকি। ওই নির্বাচনে তিনি ২ লাখ ৭ হাজার ৬৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির এ কে এম ফজলুল হক মিলন পান ২৭ হাজার ৯৭৬ ভোট।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।