নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন মৎস্য অধিদপ্তরের প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম দ্রুত বাস্তবায়ন এবং সদ্য সৃজিত নতুন পদগুলোতে অতি দ্রুত নিয়োগের দাবিতে সোমবার গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (গাকৃবি) এ এক শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে মানববন্ধনটি সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। এ মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেন অনুষদীয় ডিন প্রফেসর ড. মুর্শিদা খান সহ সিনিয়র শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
২০১৫ সালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন ৩৯৫ টি পদ মাৎস্যবিজ্ঞান গ্র্যাজুয়েটদের জন্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ১০ বছর অতিক্রম করলেও অর্গানোগ্রামের বাস্তবায়ন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধন করেছেন। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের মৎস্য খাতের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে কার্যকর করতে হবে। আর এ জন্য প্রয়োজন প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রামের দ্রুত বাস্তবায়ন এবং নতুন সৃজিত পদে দক্ষ জনবল নিয়োগ।
মানববন্ধনে ফিশারিজ অনুষদের মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী খায়রুল বাশার বলেন, ‘দেশে পুষ্টির চাহিদা পূরণে মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদীয় শিক্ষার্থীরা অন্যতম ভূমিকা পালন করে অথচ বিদ্যমান অনেক সাকুর্লারে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমাদের যথেষ্ঠ পড়াশুনা থাকলেও আমরা আবেদন পর্যন্ত করতে পারিনা যা অত্যন্ত হতাশাজনক’। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে অনুষদীয় আরেক শিক্ষার্থী নুরে জিহাদ বলেন, ‘বিদ্যমান অর্গানোগ্রামের দ্রত বাস্তবায়ন না ঘটালে আমরা আরো কঠোর আন্দোলনের ডাক দিব’।
এ জন্য নতুন পদ সৃষ্টি করে ফিশারিজ শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রধান উপদেষ্টা এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার প্রতি বিনীত আহ্বান জানান তিনি। এ সময় অত্র অনুষদের সিনিয়র শিক্ষক ও পরিচালক (আন্তর্জাতিক বিষয়ক) প্রফেসর ড. মো. আমজাদ হোসেন বলেন, বর্তমান অনেক সার্কুলারে উল্লেখ করা পদগুলো মূলত মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীদের জন্যই, অথচ আমাদের শিক্ষার্থীরাই আজ বঞ্চিত হচ্ছে যা দেশের জন্য ভালো সংবাদ নয়’।
অন্যদিকে ফিশারিজ অনুষদের ডিন বলেন, শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন যৌক্তিক বিধায় সংহতি জানাই। বিদ্যমান সমস্যার দ্রুত সমাধান করে সংশ্লিষ্ট অর্গানোগ্রামের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য কতৃর্পক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। এ মানববন্ধন করার আগে শিক্ষার্থীদের নিকট গণস্বাক্ষর নেয়া হয় যার একটি অনুলিপি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর প্রেরণ করা হবে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে একটি প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়, যেখানে বিসিএস (মৎস্য) ক্যাডারের জন্য নতুন করে ৩৯৫টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এতে পূর্বের ২৪২টি পদসহ মোট ৬৩৭টি পদ সৃষ্টির কথা উল্লেখ করা হয়। প্রস্তাবনায় বলা হয়, এসব নতুন পদের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে এবং পদের বেতনস্কেল নির্ধারণ করে মৎস্য অধিদপ্তরের রাজস্ব বাজেট থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করতে হবে। এছাড়াও কিছু শর্ত যুক্ত করা হয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ক্যাডার রুলস সংশোধন, নিয়োগবিধি হালনাগাদ এবং এই নিয়োগ প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে তিন বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। অথচ এর বাস্তবায়ন বিগত ১০ বছরে না হওয়ার প্রতিবাদ স্বরূপ সারাদেশের মৎস্যবিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট অনুষদ ও বিভাগগুলোর শিক্ষার্থীরা আজ একযোগে এ মানববন্ধন পালন করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।