জুমবাংলা ডেস্ক: টিউলিপ চাষে সাফল্য পেয়েছেন গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার দেলোয়ার হোসেন-সেলিনা হোসেন দম্পতি। ২ শতাংশে শুরুর বাগানের আয়তন গত চার বছরে দাঁড়িয়েছে এক বিঘায়। এবার তাদের বিস্তৃর্ণ বাগানে ফুটেছে ১২ রঙের প্রায় ৭০ হাজার দৃষ্টিনন্দন টিউলিপ ফুল। বাগানটির অবস্থান শ্রীপুরের কেওয়া পূর্বখণ্ড গ্রামে। ২০২০ সালে প্রথমবার দেশে টিউলিপ ফুল ফুটিয়ে সারা জাগায় এ দম্পতি। তাদের দাবি, চারা রোপণের পর চতুর্থবারের মত গাছে ফুল ধরেছে।
প্রথম বছর তাদের টিউলিপ বাগানের আয়তনের ছিল মাত্র ২ শতাংশ। সফলতা পেয়ে ক্রমান্বয়ে বাগানের আয়তন বাড়িয়েছেন। ১৫ বছর ধরে ফুল ব্যবসায় জড়িত এ দম্পতি ‘মৌমিতা ফ্লাওয়ার্স’ নামে ফুল চাষের একটি প্রতিষ্ঠানও গড়ে তোলেন। তাদের টিউলিপ ও অন্যান্য ফুল-ফলের প্রকল্পে কাজ করছেন ২৫ নারী ও পুরুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৃথিবীতে টিউলিপ ফুলের ১৫০টির বেশি জাত আছে। টিউলিপ ফুল চাষে বিশ্বে সবচেয়ে সফল দেশের নাম নেদারল্যান্ডস। যদিও বর্তমানে বেশি কিছু শীতপ্রধান দেশে এ ফুলের চাষ হচ্ছে। দেলোয়ার-সেলিনা দম্পতি জানায়, প্রতিবছর নেদারল্যান্ডস থেকেই টিউলিপের বাল্ব (অঙ্কুরিত বীজ) আমদানি করেন তারা।
২ শতাংশে শুরুর বাগানের আয়তন গত চার বছরে দাঁড়িয়েছে এক বিঘায়। গত ৯ জানুয়ারি টিউলিপের বাল্ব রোপণের ২১ দিনের মাথায় ফুল ফুটে বের হয়। একটি গাছে একটিই ফুল ধরে। গাছগুলো ২৮ ইঞ্চি পর্যন্ত বাড়ে। টবে সাজিয়ে রাখার জন্য আদর্শ ফুল টিউলিপ।
সেলিনা হোসেন জানান, বাংলাদেশের পরিবেশে টিউলিপ চাষ নিয়ে বেশ কয়েক বছর গবেষণা করেছেন তারা।
এরপর ২০২০ সালে পরীক্ষামূলক টিউলিপ চাষ করে সফলতা দেখেন। পরে প্রতি বছর ক্রমান্বয়ে ফুলটির চাষের আওতা বাড়িয়েছেন।এবার পুরোপুরি বাণিজ্যিক উৎপাদনে নেমেছেন এ দম্পতি।বাগান থেকে কেটে বিক্রির পাশাপাশি পটেও গাছসহ টিউলিপ ফুল বিক্রি করছেন। তিন থেকে পাঁচটি টিউলিপের গাছসহ পটের দাম ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা। দৃষ্টিনন্দন বাগানটি দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা।তবে সুদৃশ্য বাগান দর্শনে উদ্যোক্তরা নির্ধারণ করেছেন ১০০ টাকার প্রবেশ ফি।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, “নেদারল্যান্ডস এখন টিউলিপ ফুল রপ্তানি করছে। আমরা চেষ্টা করলে ব্যাপকহারে এ ফুল উৎপাদন করে রপ্তানির খাতায় নাম লেখাতে পারি।”তিনি জানান, এ বছর পঞ্চগড়, যশোর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বাগেরহাট, রংপুর ও জামালপুরের কয়েকটি এলাকায় তিনি টিউলিপ বাল্ব সরবরাহ করেছেন। এসব বাগানে নিয়মিত পদ্ধতিগত সহায়তাও দিচ্ছেন। তার আশা, একদিন বাংলাদেশের ফুলপ্রেমীদের বাড়ির আঙিনায় জায়গা করে নেবে টিউলিপ। নেদারল্যান্ডসের সহায়তার আশ্বাস
শনিবার সকালে এ টিউলিপ বাগান পরিদর্শনে আসেন নেদারল্যান্ডসের বাংলাদেশ হাই কমিশনের হেড অব মিশন থিজ উডস্ট্রা। তিনি বাগান দেখে উচ্ছ্বসিত। এ সময় বাংলাদেশে টিউলিপ চাষের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে এ ফুলচাষি দম্পতিকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, “টিউলিপ বাংলাদেশের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি করবে। নেদারল্যান্ডস ও ইউরোপে এ টিউলিপের ব্যাপক বাজার আছে। “বাংলাদেশের নারী-পুরুষ এ টিউলিপ চাষ করে স্বাবলম্বী হতে বাজার তৈরি করতে পারে।” বাংলাদেশে টিউলিপ চাষে সহযোগিতার আশ্বাস দেন নেদারল্যান্ডস হাই কমিশনের হেড অব মিশন থিজ উডস্ট্রা। বিডিনিউজ২৪
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।