নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে গ্রিনল্যান্ড গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানায় চুরির অপবাদে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হৃদয়কে (১৯) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
পুলিশ ও র্যাব সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৩০ জুন) রাতে গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী থানাধীন হরিনাচালা সেলিমনগরে অভিযান চালিয়ে শফিকুল ইসলাম (৩০) নামের এক নিরাপত্তাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হাটমাদনগর গ্রামের বাসিন্দা। ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনার মাধ্যমে তাঁর সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে, মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে গাজীপুর নগরীর বাসন থানার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকা থেকে র্যাব-১ এর পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেন আরও একজন নিরাপত্তাকর্মী বেলাল হোসেন ওরফে বেলাল (৪৩)– যিনি সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার পাটগ্রামের বাসিন্দা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন র্যাবের গাজীপুর কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার কে এম এ মামুন খান চিশতী। পরে তাঁকে থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এ ঘটনার আগেই গত রোববার (২৯ জুন) ওই কারখানার শ্রমিক হাসান মাহমুদ মিঠুন (২৮)–কে গ্রেপ্তার করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। তাঁর রিমান্ড শুনানির তারিখ আগামী রোববার ধার্য করেছেন আদালত।
কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “অন্য জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম অভিযান চালাচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (২৭ জুন) রাত ৮টা থেকে শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টার মধ্যে গাজীপুরের কোনাবাড়ী কাশিমপুর রোডে অবস্থিত গ্রিনল্যান্ড গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানায় চুরির অপবাদ দিয়ে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হৃদয়কে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত হৃদয় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শুকতারবাইদ গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালামের ছেলে। তিনি গাজীপুরের হারিনাবাড়ী এসরারনগর হাউজিং এলাকায় মা ও বোনের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং ওই কারখানার ডাইং সেকশনে অস্থায়ীভাবে কর্মরত ছিলেন।
ঘটনার পর কারখানাসহ আশপাশের শ্রমিকরা হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে। পুলিশ কারখানার সিসিটিভি ফুটেজ জব্দ করে তদন্ত শুরু করে।
এ ঘটনায় হৃদয়ের বড় ভাই লিটন মিয়া বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।