জুমবাংলা ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহতদের মৃত্যুসনদ পরিবর্তন করতে চিকিৎসকদের নির্দেশ দিয়েছিল ‘প্রশাসন’।
রোববার রাজধানীতে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোশতাক আহমেদ। তিনি বলেন, গুলির ঘটনাগুলোকে পাশ কাটিয়ে সাধারণ মৃত্যুর বর্ণনা দিয়ে মৃত্যুসনদ দিতে বলা হয়েছিল।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘হেফাজতে নির্যাতন ও দায়বদ্ধতা: প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকার’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় ডা. মোশতাক এ কথা বলেন। কে নির্দেশ দিয়েছিল– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওপরের নির্দেশ।
ঢামেকে এত লাশ ধারণের সক্ষমতাও ছিল না বলে উল্লেখ করেন ডা. মোশতাক। হেফাজতে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের বিষয়ে তিনি বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুলিশি মামলায় রিমান্ডের শিকার ব্যক্তিদের দায়িত্বরত চিকিৎসক মানসিক ও শারীরিক চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তথাপি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ২০ শতাংশ মানুষ পরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে। বাকিরা শারীরিকভাবে সুস্থ হলেও মানসিকভাবে ট্রমার শিকার হয়ে বেঁচে থাকেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল নোমানের সঞ্চালনায় সভায় হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের আওতায় হওয়া প্রথম মামলার রায় (জনি হত্যা) নিয়ে সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন আইনজীবী নাজমুল করিম। ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পল্লবী থানা পুলিশ হেফাজতে নিহত জনির পক্ষে প্রথম রায় দেন আদালত। সভায় জনির ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি বলেন, জনি হত্যা মামলার রায়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য বলা হলেও সেটি কার্যকর হয়নি। ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় তার পরিবার দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে।
প্যানেল আলোচক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক আর হক বলেন, সংশ্লিষ্ট হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের সুরক্ষার বিধান উল্লেখ রয়েছে। এ ধারার অধীনে প্রয়োজনে বিশেষ ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা আদালতের কাছে সুরক্ষার জন্য আবেদন করতে পারেন।
মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন বলেন, বিদ্যমান আইন সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণেও আইনের সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে না।
ব্লাস্টের অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন তাঁর বক্তব্যে কয়েক দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। এতে তিনি হেফাজতে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের আইনগত সুরক্ষার পাশাপাশি আর্থিক এবং সার্বিক সহায়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, একটি হটলাইন/হেল্প লাইন চালু করা যেতে পারে, যেখানে ভুক্তভোগীরা প্রতিকারের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।
সমাপনী বক্তৃতায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না দেশে বিদ্যমান তিনটি আইন যথাক্রমে দণ্ডবিধি, ফৌজদারি কার্যবিধি, বাংলাদেশ পুলিশ প্রবিধান যুগোপযোগী না হওয়ার কারণে তা সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হেফাজতে নির্যাতনের বিষয়ে বক্তব্য দেন ফামিয়া সাগর তোশমি।
ছাত্র-জনতার ‘স্বপ্নের বাংলাদেশ’ গড়ার কাজ শুরু হয়েছে : প্রধান উপদেষ্টা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।