জুমবাংলা ডেস্ক: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে কৃষি উদ্যোক্তা কমেলা বেগম নানা ধরনের ফসল উৎপাদনসহ গবাদি পশু পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি কৃষিপণ্য বাজারে বিক্রি করে প্রতি বছর এখন লক্ষাধিক টাকা আয় করেন তিনি। শুধু তাই নয়, পর্যায়ক্রমে স্বাবলম্বী করে তুলছেন গ্রামের অনেক নারীকেও।
প্রায় ১৮ বছর আগে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাবাড়ী ইউনিয়নের কটিয়া গ্রামের আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন কমেলা বেগম। আশরাফুল ইসলাম সে সময় কোনো পেশার সঙ্গে জড়িত না থাকায় অর্ধাহারে-অনাহারে তাদের দিন কাটাতে হতো। কমেলা বেগম গৃহকর্মীর কাজ নিতে বাধ্য হয়েছিলেন।
২০১৩ সালে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা একশনএইড বাংলাদেশের অধীনে কমেলা বেগমসহ আরও ৩০ জন নারী দলবদ্ধ হয়ে কৃষি, সেলাই, পশু পালনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে সংস্থাটির পক্ষ থেকে প্রশিক্ষিতদের পুঁজি সরবরাহ করা হয়। এরপর কমেলার পরিশ্রমে ঘুরে যায় তাদের ভাগ্যের চাকা। পুঁজি সুবিধা নিয়ে কমেলা বেগম ১৩ শতক আবাদি জমি ও বাড়ির ভিটার বিভিন্ন অংশে প্লট করে লাউ, কুমড়া, পেঁপে, আদা, রসুন, পেঁয়াজসহ বিবিধ মসলা, মরিচ, বেগুন, মুলা, পালংশাক, লালশাক, বৌতা শাক, টমেটো, কুমড়া আবাদ করে বিক্রি করেন। বিক্রয় লাভজনক হলে নিজের জমির পাশাপাশি অন্যের জমি ইজারা নিয়ে আবাদের পরিধি বৃদ্ধি করেন। এ ছাড়াও তিনি বাড়িতে গাভিসহ হাঁস-মুরগি পালন করতে থাকেন। সব মিলিয়ে তাঁর আয় বছরে লক্ষাধিক টাকা। এলাকায় সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
কমেলা বেগম জানালেন, তাঁর ইচ্ছা-শক্তির জন্যই এ পর্যন্ত আসতে পেরেছেন তিনি। স্বামীকে নিয়ে সারাদিন ফসলের পরিচর্যা করেন। সঙ্গে এমব্রয়ডারির কাজও করে থাকেন। দুই ছেলে এক মেয়ে তাঁর। পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো আছেন কমেলা। তাঁর ছেলেমেয়েরা এখন স্কুলে যায়।
শুধু নিজের ভাগ্য ফিরিয়েই কমেলা বেগম থেমে থাকেননি। ভাগ্য ফেরাতে চেয়েছেন অন্যদেরও। গ্রামের অভাবী মেয়েদের নিয়ে ‘শিমুল নারী কৃষক দল’ নামে ৩০ সদস্যের একটি সমিতি গঠন করেছেন। এ সমিতিতে প্রতি সদস্য সপ্তাহে ২০ টাকা করে সঞ্চয় জমা রাখেন। সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে জমি ইজারা নিয়ে সেখানেও আবাদ করা হয়। তাঁর উদ্যোগের ফলে গোবিন্দগঞ্জের সুবিধাবঞ্চিত অনেক নারী কর্মের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। তিনি এ সাফল্যের পেছনে একশনএইড বাংলাদেশের প্রশিক্ষণ ও পুঁজির অবদান থাকায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
একশনএইড বাংলাদেশের উপব্যবস্থাপক অমিত রঞ্জন দে জানান, গোবিন্দগঞ্জে নারীদের আরও এগিয়ে চলার পথে সঙ্গী হতে প্রতিষ্ঠান সবসময় তৎপর। তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখেছেন, কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য আলাদা কোনো শেড না থাকায় নারীরা বাজারে এসে বিব্রতবোধ করেন। এর সুযোগ নিয়ে ব্যাপারীরা তাদের কাছে গিয়ে সস্তায় কৃষিপণ্য ক্রয় করে নিয়ে আসেন। এতে নারীরা উপযুক্ত লাভ থেকে বঞ্চিত হন। নারী কৃষি উদ্যোক্তারা নিজেদের উৎপাদিত ফসল নিজেরাই বাজারে এনে বিক্রি করতে পারেন– তার লক্ষ্যে শেড তৈরিতে একশনএইড বাংলাদেশ বাজার কমিটির সঙ্গে শিগগির উদ্যোগ নিতে চলেছে।
সূত্র: সমকাল।
দেশের ইতিহাসে সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।