আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়া থেকে গ্যাস না নিলে অস্ট্রিয়া-জার্মানির বাঁচা মুশকিল। জার্মানিকে সতর্কবার্তা অস্ট্রিয়ার। ইউক্রেনকে আরো অস্ত্র দিচ্ছে জার্মানি। খবর ডয়চে ভেলে’র।
সম্প্রতি রাশিয়ার গ্যাসে এমবার্গো বসানোর প্রস্তাব দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অধিকাংশ দেশ তাতে সায়ও দিয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে অস্ট্রিয়া সতর্কবার্তা দিয়েছে। অস্ট্রিয়ার অর্থমন্ত্রী বলেছেন, তারাও চান, রাশিয়ার উপর আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি হোক। বস্তুত, সে কারণেই রাশিয়ার উপর থেকে গ্যাস এবং তেলের নির্ভরশীলতা কমানোর চেষ্টা করছে অস্ট্রিয়া। যত দ্রুত সম্ভব তা সম্পূর্ণ কমিয়ে ফেলা হবে। কিন্তু বাস্তব হলো, রাশিয়ার গ্যাসের উপর অস্ট্রিয়া ৮০ শতাংশ নির্ভরশীল। ফলে অদূর ভবিষ্যতে তা শূন্য করা সম্ভব নয়। ফলে এমবার্গোর বিষয়ে আরো আলোচনা প্রয়োজন বলে তারা মনে করে।
অস্ট্রিয়া এবিষয়ে জার্মানিকেও সতর্ক করেছে। অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, জার্মানিও অস্ট্রিয়ার মতো রাশিয়ার গ্যাসের উপর চূড়ান্তভাবে নির্ভরশীল। এই পরিস্থিতিতে জার্মানিরও প্রস্তাবটি নিয়ে আরো ভাবা দরকার। জার্মানি অবশ্য আগেই জানিয়েছে, রাশিয়ার গ্যাসের উপর নির্ভরশীলতা যত দ্রুত সম্ভব কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে তারা।
মারিউপলে উদ্ধারকাজ
শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১২টায় মারিউপলে উদ্ধারকাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী। একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি বলেছেন, সমস্ত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে শুক্রবার বেলা ১২টায় মারিউপলে আটকে থাকা বাসিন্দাদের উদ্ধার করা হবে। রেডক্রস এবং জাতিসংঘ সাহায্য করবে। তবে রাশিয়া এবিষয়ে অবগত কি না, তা স্পষ্ট করেননি ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী।
মারিউপলের কারখানায় এখনো বহু বেসামরিক মানুষ আটকে। সেখান থেকে কিছু মানুষকে উদ্ধার করা গেলেও সকলকে এখনো বাইরে আনা যায়নি। উদ্ধারকাজে রাশিয়া অসহযোগিতা করছে বলেও অভিযোগ। শুক্রবার সেখান থেকেও সাধারণ মানুষদের বার করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, এই নিয়ে চতুর্থবার মারিউপল থেকে বেসামরিক মানুষদের উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে। তবে শেষপর্যন্ত তা সম্ভব হবে কি না, তা অনেকটাই নির্ভর করছে রাশিয়ার উপর।
আরো অস্ত্র দেবে জার্মানি
সম্প্রতি চেক রিপাবলিক এবং স্লোভেনিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে জার্মানি। ওই চুক্তিতে বলা হয়েছে ওই দুইটি দেশ তাদের ভারি সমরাস্ত্র ইউক্রেনকে দেবে। বদলে অত্যাধুনিক জার্মান সমরাস্ত্র ওই দুইটি দেশকে দেবে জার্মানি। চেক রিপাবলিক ইউক্রেনকে রাশিয়ার তৈরি প্রচুর অস্ত্র দেবে বলে জানিয়েছে। স্লোভেনিয়ার সঙ্গে আগেই এমন চুক্তি করেছিল জার্মানি। স্লোভেনিয়া ইউক্রেনকে সোভিয়েত আমলের টি-৭২ ট্যাঙ্ক দেবে বলে জানিয়েছে। তার বদলে স্লোভেনিয়াকে জার্মানি দেবে আধুনিক মার্ডার এবং ফক্স উইল ট্যাঙ্ক।
মার্কিন গোয়েন্দাদের দাবি
এপ্রিল মাসে কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করেছিল ইউক্রেন। সম্প্রতি মার্কিন গোয়েন্দা সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই যুদ্ধজাহাজটির তথ্য অ্যামেরিকাই প্রথম ইউক্রেনকে দিয়েছিল। তবে একইসঙ্গে দাবি করা হয়েছে, যুদ্ধজাহাজটি ধ্বংসের ক্ষেত্রে অ্যামেরিকার কোনো হাত নেই। এবিষয়ে অ্যামেরিকার সঙ্গে ইউক্রেন কোনো পরামর্শও করেনি। জাহাজটি ধ্বংস হওয়ার পরে অ্যামেরিকা তা জানতে পেরেছে। ইউক্রেন নেপচুন অ্যান্টি-শিপ মিসাইল ব্যবহার করে জাহাজটি ধ্বংস করেছিল বলে জানা গেছে।
অ্যামেরিকার দাবি, তাদের মতো অন্য দেশ থেকেও গোয়েন্দা রিপোর্ট নেয় ইউক্রেন। তার ভিত্তিতে নানা পরিকল্পনা করে তারা। কিন্তু সেই পরিকল্পনায় অন্য দেশের কোনো ভূমিকা থাকে না।
ইউক্রেনের জন্য ছয় দশমিক পাঁচ মিলিয়ন
ইউক্রেনের জন্য ছয় দশমিক পাঁচ মিলিয়ন ডলার তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডোনাররা। সম্প্রতি ওয়ারশতে একটি ডোনার কনফারেন্সে গেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে একাধিক ডোনার সব মিলিয়ে ইউক্রেনের জন্য ছয় দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার অর্থ সাহায্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
জেলেনস্কি তাদের স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এই মুহূর্তে ইউক্রেনের প্রয়োজন অন্তত সাত বিলিয়ন ডলার। তবে ইউক্রেনকে নতুন করে তৈরি করার জন্য আরো অনেক বেশি অর্থ দরকার। জেলেনস্কির হিসেব, অন্তত ৬০০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।