আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গ্রিনল্যান্ডের সর্বোচ্চ বরফচূড়ায় বৃষ্টিপাতের ঘটনা ঘটেছে। ছিটেফোঁটা নয়, কয়েক ঘণ্টা ধরে বেশ ভালো মাত্রায় বৃষ্টি ঝরেছে সেখানকার বরফচাঁইয়ের ওপর।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টার জানিয়েছে, গত ১৪ আগস্ট যখন গ্রিনল্যান্ডের ৩২১৬ মিটার উঁচু বরফচূড়ায় বৃষ্টিপাত হয়, তখন ৯ ঘণ্টা ধরে সেখানকার তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ওপরে ছিল। বরফচূড়ায় তাপমাত্রা সাধারণত কখনই হিমাঙ্কের ওপরে উঠে না। কিন্তু তিন দশকের কম সময়ের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা অন্তত তিন বার ঘটল। গত ১৪ থেকে ১৬ আগস্ট তিন দিনে মোট ৭ বিলিয়ন টন বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে গ্রিনল্যান্ডে।
১৯৫০ সালে তথ্য সংগ্রহ শুরুর পর থেকে যা সর্বোচ্চ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উষ্ণায়নের ফলে মেরুঅঞ্চলের বরফ যে হারে গলছে, তাতে এই বৃষ্টিপাতকে নতুন উদ্বেগ হিসেবে দেখছেন বিজ্ঞানীরা।
গ্রিনল্যান্ডে এই বৃষ্টিপাতের বিষয়ে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যামন্ট-ডোহার্টি আর্থ অবজারভেটরির গ্ল্যাসিওলোজিস্ট ইন্দ্রানী দাশ বলেন, বরফচূড়ার জন্য এটা কোনও ভালো লক্ষণ নয়। বরফের ওপর পানি খুব খারাপ, এতে বরফের উপরিভাগ বেশি গলতে থাকে।
বরফের চেয়ে পানির উষ্ণতা বেশি, শুধু তাই নয়, বরফের চেয়ে বৃষ্টির পানি গাঢ় বর্ণের। ফলে এই পানিতে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হওয়ার চাইতে শোষিত হয় বেশি। বরফগলা এই পানিই সাগর-মহাসগরে মিশে পানির উচ্চতা বাড়াচ্ছে।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, অ্যান্টার্কটিকার পর সবচেয়ে বেশি গলছে গ্রিনল্যান্ডের বরফ। আর গত কয়েক দশকে এই পানিই বৈশ্বিক সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চ ২৫ শতাংশ বাড়ার জন্য দায়ী। যেভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে, তাতে এই হার আরও বাড়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। বৃষ্টি এবং উচ্চ তাপমাত্রার কারণে দ্বিপটি জুড়ে বরফ গলার পরিমাণও বাড়িয়ে দিয়েছে। গত ১৫ আগস্ট যে পরিমাণ বরফ গলেছে, তা আগস্টের মাঝামাঝিতে স্বাভাবিকের চেয়ে সাত গুণ বেশি। জলবায়ুর পরিবর্তন গ্রিনল্যান্ডের বরফের যে প্রভাব ফেলেছে, তাতে নতুন সতর্কবার্তা হয়ে এসেছে এই রেকর্ড বৃষ্টিপাত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।