লাইফস্টাইল ডেস্ক : সুস্থ থাকার জন্য ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখার বিকল্প নাই। যদি একবার মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখতেন তবে বুঝতেন প্রতিটা কোনে কি পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া আর ভাইরাসে ভরা। তাই ঘরের শুধুমাত্র মেঝেই নয়, পরিষ্কার রাখতে হবে ঘরের প্রতিটি কোন এবং বস্তু। এছাড়াও ধুলা, মাটি, বালি, চুল আর মরা চামড়াও পাবেন। শুনতেই যেমন গা ঘিনঘিনে লাগছে, আদতেও ব্যাপারটা এমন অপরিচ্ছন্নই। তাই নিজের বাসস্থান পরিচ্ছন্ন রাখুন।
অনেকেই আছেন প্রতিদিন ঘরবাড়ি পরিষ্কার করেন আবার অনেকেই সেই সময় পান না। আসুন দেখে নেই ঘরের বিভিন্ন জায়গা কবে আর কীভাবে পরিষ্কার করবেন।
পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক দুজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী এনবিসি নিউজের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী লেখাটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এদের একজন ইউনিভার্সিটি অব গুলেফের মাইক্রোবায়োলজিস্ট জ্যাসন টেটরো। দ্যা জার্ম কোড এবং দ্যা জার্ম ফাইল নামক বইয়ের রচয়িতা তিনি। অন্যজন সিম্পলি ক্লিন এবং দ্য অরগ্যানিক্যালি ক্লিন হোম বইয়ের রচয়িতা পরিচ্ছন্নতা বিশেষজ্ঞ বেকি র্যাপিনচাক।
চাদর এবং বালিশের কভার
উপর দিয়ে যতই পরিষ্কার দেখাক, বিছানার চাদর, বালিশের কভার বা পর্দা জাতীয় জিনিস অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার করেন না। বিশেষ করে বিছানার চাদর ও বালিশের কভারে ঘাম, তেল, খুশকি ইত্যাদি মিশে অনেক বেশি নোংরা হয়। এগুলো নিয়মিত বিরতিতে পরিষ্কার না করলে নানারকম ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রতি দুই সপ্তাহে একবার অন্তত এগুলো বিছানার চাদর ও বালিশের কভার, কুশন কাভার, কাথা ইত্যাদি গরম পানি দিয়ে ধোয়া উচিৎ।
বেসিন ও সিংক
এগুলো প্রতিদিন ধোয়া উচিৎ যেহেতু সবচেয়ে বেশি নোংরা হয়। সবচেয়ে বেশি নোংরা বলা হচ্ছে কারণ দাঁত ব্রাশ, মুখ ধোয়া, হাত ধোয়ার কাজে ব্যবহৃত হয় বেসিন। আর রান্নাঘরের সিংকে থালাবাসন ও খাবার জিনিস ধোয়ার কারণে এখানে ময়লা, খাদ্যকনার পাশাপাশি তেল ও নানারকম জীবাণু লেগে থাকে। তাই প্রতিদিনই একবার করে এগুলো পরিষ্কার করুন। বিশেষ করে সিংকে কাঁচা মাছ বা মাংস ধোয়ার পর অবশ্যই ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করুন।
কার্পেট, পাপোষ এবং রাগস
এক থেকে দুই সপ্তাহ পরপর এগুলো ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করা উচিৎ। আর বাড়িতে যদি পোষা প্রাণী থাকে সেক্ষেত্রে প্রতি সপ্তাহে পরিষ্কার করুন। ভ্যাকুয়াম ক্লিনার না থাকলে খোলা জায়গায় রোদে দিয়ে ঝাড়ু দিয়ে হলেও পরিষ্কার করুন। আর সেই সঙ্গে গরম পানি ও জীবাণুমুক্তকরন মিশিয়ে ওই জায়গার মেঝে মুখে ফেলুন।
বাথরুম
বলা হয় ঘরের এই জায়গায় সবচেয়ে বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে। তাই সপ্তাহে একদিন বাথরুম পরিষ্কার করুন। বাথরুমের সিংক এবং টয়লেটের ছয় ফিট নীচ পর্যন্ত ই.কোলি নামক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। তাই সপ্তাহে একদিন এগুলোতে জীবাণুমুক্তরন ছেটাতে হবে।এছাড়াও বাথরুমের শাওয়ারের পর্দা ও বাথটাবও অন্তত দুই সপ্তাহ পরপর ডিপ ক্লিন করুন।
তোয়ালে
গোসলের তোয়ালে স্ট্যাফ এবং ফেক্যাল ধরণের ব্যাকটেরিয়ার ভাণ্ডার বলা যায়।গা মোছার কাজে ব্যবহৃত গামছা বা তোয়ালে ভেজা থাকলে এসবের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। এছাড়াও চুলে খুশকি হওয়ার জন্য দায়ি ফাঙ্গিও জন্মাতে পারে।অন্যদিকে রান্নাঘরের তোয়ালেতেও নানারকম ব্যাকটেরিয়া জন্মায়।তাই প্রতি সপ্তাহে একদিন এগুলো গরম পানি দিয়ে জীবাণুনাশক ব্যবহার করে ধুতে হবে। আর যদি কাঁচা মাছ মাংস ধরে হাত মোছেন, তাহলে সেদিনই ধুয়ে ফেলতে হবে।
বাসন মাজার স্পঞ্জ
একটি বাসন মাজার স্পঞ্জের প্রতি স্কয়ার ইঞ্চি জায়গায় কোটি কোটি ব্যাকটেরিয়া থাকবে। তবে এর সবগুলোই যে ক্ষতিকর, তা না। শুধু সাবান আর পানি দিয়ে ধোয়া তাই নিরাপদ না। স্পঞ্জগুলো সাধারণত ফুটন্ত পানিতে অন্তত দুই মিনিট ধরে ডুবিয়ে রেখে ধুতে হবে। দুইদিন পরপর এভাবে ধুলেই ভালো হবে।
দরজার হাতল ও নব
পুরো বাসা ঝকঝক করলেও আমরা দরজার হাতল, নব ইত্যাদি পরিষ্কারের কথা ভুলে যাই। অথচ এগুলোও কিন্তু জীবাণুর আধার। বিশেষ করে বাড়ির প্রধান দরজা, বাথরুম ও রান্নাঘরের দরজা।তাই সপ্তাহে অন্তত একদিন এগুলো জীবাণুনাশক ব্যবহার করে মুছে ফেলতে হবে।
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel