পৃথিবীতে কত রকম ঘুঘু আছে? অতি সংক্ষেপে জানা যাক বংশ পরিচয়। দুনিয়ায় বর্তমানে যে ২৮৯ রকম পায়রা দেখা যায়, তাদের সবারই আদিপুরুষ হচ্ছে বুনো কবুতর, আমরা যাদের জালালি কবুতর বলি। ওরাই হচ্ছে বুনো কবুতর। পায়রা বা কবুতর আর ঘুঘুরা হচ্ছে একই পরিবারের পাখি। এই পরিবারের পাখি প্রজাতির সংখ্যা ২৮৯টি।
বড়গুলোকে বলা হয় পায়রা ও অপেক্ষাকৃত ছোটগুলোকে ঘুঘু। পায়রাদের লেজ খাটো ধরনের, ঘুঘুদের লম্বাটে। ঘুঘুদের পা ছোট, ঘাড় খাটো। শরীরের তুলনায় মাথা ছোট ও গোলাকার। সুন্দর চোখ। ছোট ঠোঁট, আগার দিকটা ভেতরমুখো কিছুটা বাঁকা। ঠোঁটের মাঝখানটা পাতলা। নাকের ছিদ্র সুস্পষ্ট। ঠোঁট নলাকৃতির। শরীরে ছাই ও বাদামি রঙের ভাগ বেশি। পালক চ্যাপ্টা ধরনের। সহজে মাটিতে নামতে পারে। দ্রুত উড়তেও পারে। আচমকা ঘুরতে পারে। বাসা বাঁধার মৌসুম ছাড়া ঝাঁকে থাকতে পছন্দ করে। সবারই গলার স্বর মিষ্টি ও মোলায়েম ধরনের। এরা শত্রুকে আক্রমণ করতে পারে না বা জানে না।
ঘুঘুদের খাদ্য: ধান, গম, তিল, সরিষাসহ নানা রকম শস্য ও বীজ, শাক-সবজি, নরম ঘাসও খায় শরীরে লবণের চাহিদা পূরণের জন্য। অনেক প্রজাতির ঘুঘু ফলসহ পোকামাকড়-কীটপতঙ্গ খায়। সবাই জলপান করে ঠোঁট জলে ঢুকিয়ে, মাথা-ঠোঁট উঁচু করে। জলপানের দৃশ্য খুব চমৎকার। সবাই মাটিতে নামে। হাঁটতে জানে ভালো। বেশ চতুর।
বাসা, ডিম, বাচ্চা: সব ধরনের ঘুঘুই বাসা করে দায়সারা গোছের। কাঠি-কুঠি, শুকনো ঘাস-লতা ফেলে কোনো রকমে ডিম পাড়তে পারলেই যেন হলো। ঝোপঝাড়, গাছের ডাল-হোক উঁচু বা নিচুতে, পছন্দসই জায়গা পেলেই বাসা করে। বছরে কমপক্ষে এক জোড়া ঘুঘু ৩ বার বাচ্চা দেয়। ডিম খোয়া গেলে সে সংখ্যা ৫ বার পর্যন্ত পৌঁছুতে পারে। বাসা বাঁধার সময় সতর্ক থাকে। দুজইে বাসা তৈরি করে। জায়গা নির্বাচনে লাগায় ১-২ দিন। বাসা তৈরি শেষ হয় ২-৪ দিনে। বাসার কাছে ডিমখোকো সাপ দেখলে ভয়ে পালায়।
অধিকাংশ ঘুঘুই ২টি ডিম পাড়ে। সাদা রঙের, কোনো কোনো ডিমের রং ঘোলাটে হলদে। মেয়ে-পুরুষ পালা করে তা দেয়। তবে মেয়েটির ভাগে বেশি পড়ে। গড়ে ১২-১৭ দিনে ডিম ফোটে। মা-বাবা পালা করে খাওয়ায়। প্রথম দিকে ঘুঘুরা বাচ্চাদের এক ধরনের তরল খাদ্য পেট থেকে উগরে খেতে দেয়, এ সময় গলা-বুক কাঁপে ছন্দময় ভঙ্গিতে।
এই খাদ্যকে বলা হয় পায়রার দুধ। পায়রার দুধ? বিষয়টি বেশ মজার, তাই না? গড়ে ১০-১৩ দিন পরে বাচ্চারা ডানা মেলে উড়তে শেখে। স্বাবলম্বী হয় আরো ৬-১২ দিন পরে। বাচ্চারা হয় জন্মান্ধ আর খাই খাই স্বভাবের। নিজেদের মধ্যে মারামারি করে। খিদের কান্না বেশ দূর থেকে শোনা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।