জুমবাংলা ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিপথ বলছে, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার ওপর দিয়ে তা স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে। এতে এ দুই জেলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এখানকার উপকূলীয় এলাকা ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় চট্টগ্রামে প্রায় ১৭ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে ১০৩০টি আশ্রয়কেন্দ্রও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে প্রায় পাঁচ লাখের বেশি মানুষকে আশ্রয় দেয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামে স্থায়ী ৫৩০টি এবং অস্থায়ী ৫০০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এতে প্রায় পাঁচ লাখের বেশি মানুষকে আশ্রয় দেয়া যাবে। এছাড়া নির্দেশনা অনুযায়ী ১৫ উপজেলার ইউএনওরা এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে ও উদ্ধার তৎপরতার জন্য রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আট হাজার এবং সিসিপি’র আট হাজার ৮৮০ মিলিয়ে মোট ১৬ হাজার ৮৮০ স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে ১১৬টি, বাঁশখালীতে ১২২টি, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় ৯৪টি, ফটিকছড়িতে ১১২টি (অস্থায়ী), হাটহাজারিতে ১৮টি (অস্থায়ী), মীরসরাইতে ৮৫টি, রাঙ্গুনিয়ায় ২১৭টি (অস্থায়ী), রাউজানে দুটি, সীতাকুণ্ডে ২৫টি, বোয়ালখালীতে ৮টি, চন্দনাইশে ৬টি, পটিয়ায় ১২৬টি (অস্থায়ী), সাতকানিয়ায় ৪টি, আনোয়ারায় ৫৮টি, লোহাগাড়ায় ২৭টি (অস্থায়ী) এবং কর্ণফুলীতে ১০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা সিডরের চেয়েও শক্তিশালী হতে পারে। বৃহস্পতিবার (১১ মে) অধিদফতরের পরিচালক আজিজুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হবে। বর্তমান গতি-প্রকৃতি অনুযায়ী সিডরের চেয়েও শক্তিশালী হতে পারে ঘূর্ণিঝড় মোখা।
এদিকে, কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেল থেকে প্রাপ্ত ঘূর্ণিঝড় মোখার ৫১টি সম্ভাব্য যাত্রাপথের বেশিরভাগ পথ নির্দেশ করছে যে, এটি (মোখা) চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে।
স্থলভাগে আঘাতের সময় ঘূর্ণিঝড় মোখার বাতাসের গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার। আর এ গতিতে মোখা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূল অতিক্রম করলে, এ দুই জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলো ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জলবায়ু গবেষক পলাশ আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপ, টেকনাফ, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।
সম্ভাব্য এ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ২৫০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার এবং বরিশাল বিভাগ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোয় ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে বলে জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।