জুমবাংলা ডেস্ক : ঝড়ে প্রকৃত ক্ষতি সরকারি হিসেবের চেয়েও কয়েকগুণ বেশি বলে জানিয়েছেন সংসদ সদস্য ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। এসময় তারা দুর্গত উপকূলে দ্রুত পুনর্বাসন ও সুপেয় পানি সরবরাহে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।
তারা বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত ও প্রবল জলোচ্ছ্বাসে দক্ষিণ-পশ্চিম (সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট) উপকূলে লাখ লাখ মানুষ বসতবাড়ি ও জীবিকা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। খাদ্য ও সুপেয় পানির সংকট চরমে উঠেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
মঙ্গলবার (৪ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)-তে উন্নয়ন সংস্থা ‘লিডার্স’ এবং নাগরিক সংগঠন ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’ আয়োজিত মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তারা।
‘ঘূর্ণিঝড় রিমাল দুর্গত উপকূলের বর্তমান পরিস্থিতি ও জরুরি করণীয়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র। আলোচনায় অংশ নেন খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামান, বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য (সাতক্ষীরা) লায়লা পারভীন সেজুতি, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মীর মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রসুল বাবুল, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, ডিআরইউ’র কল্যাণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ, সচেতন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাকিলা পারভীন, ফেইথ ইন একশনের তীমন বাড়ই প্রমুখ। ধারণাপত্র উত্থাপন করেন লিডার্সের লিডার্সের অ্যাডভোকেসি অফিসার তমালিকা মল্লিক।
সংসদ সদস্য মোঃ রশীদুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খুলনার পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলা। সেখানে বেড়িবাঁধ, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, মৎস্য ঘের, ফসল ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সুপেয় পানির উৎসগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনে পশুপাখির মৃত্যুসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে ত্রাণ ও পূনর্বাসনে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা যথেষ্ট নয়।
উপকূলীয় এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সমন্বয়ের জন্য উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠনের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, ঝড়ে প্রকৃত ক্ষতি সরকারি হিসেবের চেয়েও কয়েকগুণ বেশি। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ত্রাণের থেকে জরুরি লবণপানি নিয়ন্ত্রণ। লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণ করা গেলে কৃষিকাজ করেই উপকূলের মানুষ তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।
সংসদ সদস্য লায়লা পারভীন সেজুতি বলেন, দুর্যোগে সব থেকে বেশি দুর্ভোগের শিকার নারী ও শিশুরা। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সুন্দরবনসহ পরিবেশ সুরক্ষায় নজর দিতে হবে।
শরীফ জামিল বলেন, ঝড়ে মৃত্যু কম হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। নদ-নদী ও পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করে বিজ্ঞানসম্মত উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, ভৌগলিক অবস্থান, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ভঙ্গুর অবকাঠামো, দারিদ্রতা, দীর্ঘমেয়াদী লবণাক্ততা, সংকটাপন্ন কৃষি, প্রভৃতির কারণে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। ওই এলাকাকে বিশেষ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।