জুমবাংলা ডেস্ক : চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পোশাক রপ্তানিকারক ১০টি প্রতিষ্ঠান পণ্য রপ্তানি করছে; কিন্তু সেই রপ্তানি পণ্যের মূল্য দেশে আসছে না– এমন সন্দেহ থেকে তদন্তে নেমে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা পাচারের তথ্য পেয়েছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানগুলো কানাডা, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানির আড়ালে ওই অর্থ পাচার করে।
গতকাল সোমবার কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায়।
প্রতিষ্ঠান ১০টি হলো— সাভারের প্রজ্ঞা ফ্যাশন লিমিটেড, গাজীপুরের পিক্সি নিট ওয়্যারস ও হংকং ফ্যাশনস লিমিটেড, ঢাকার ফ্যাশন ট্রেড, এমডিএস ফ্যাশন, থ্রি-স্টার ট্রেডিং, ফরচুন ফ্যাশন, অনুপম ফ্যাশনওয়্যার লিমিটেড, স্টাইলজ বিডি লিমিটেড ও ইডেন স্টাইল টেক্স।
শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফখরুল আলম বলেন, ‘অর্থ পাচারকারীদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষপ নেওয়া হচ্ছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বিল অব এক্সপোর্ট জালিয়াতি করে অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইএক্সপি ব্যবহার করে পণ্য রপ্তানি করেছে। এ ছাড়া বিল অব এক্সপোর্টের ২৪ নম্বর কলামে নমুনার কোড ২০ ব্যবহার করেছে। এ ক্ষেত্রে পুরো চালানের রপ্তানিমূল্য বিদেশে পাচার হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দলিল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো ১ হাজার ২৩৪টি চালানে এমন জালিয়াতি করেছে। এসব চালানে রপ্তানি হয়েছে ৯ হাজার ১২১ টন পণ্য। তারা কানাডা, রাশিয়া, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, পানামাসহ ২২ দেশে এসব পণ্য রপ্তানি করে পাচার করেছে ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৬৬ হাজার ৯১৮ মার্কিন ডলার বা ৩০০ কোটি টাকা।
রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে টি-শার্ট, টপস, মেয়েদের পোশাক, ট্রাউজার, বেবি সেট ও পোলো শার্ট। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিল অব এক্সপোর্ট ও ইএক্সপিতে দেওয়া তথ্যেরও মিল পাওয়া যায়নি। বিল অব এক্সপোর্টে উল্লিখিত সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ওই ১০ প্রতিষ্ঠানের কোনোটিই এই ব্যাংকে লিয়েন করা নয়। তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সঙ্গে সাউথইস্ট ব্যাংকের সম্পর্ক না থাকায় এ ব্যাংকের মাধ্যমে বিল অব এক্সপোর্টে উল্লিখিত সেলস কন্ট্র্যাক্ট বা ইএক্সপির রপ্তানি মূল্য প্রত্যাবসিত হয়নি বা হওয়ার সুযোগ নেই।
কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রজ্ঞা ফ্যাশন লিমিটেড ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩৯১টি রপ্তানি চালানে ৯২ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার ২৪৫ টাকা পাচার করেছে। ফ্যাশন ট্রেড ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ২৪৬টি চালান পাচার করে ৬৮ কোটি ৩৫ লাখ ৮৪ হাজার ২৩৬ টাকা। এ ছাড়া এমডিএস ফ্যাশন ২০২০ সালে ১৮২টি চালানে ৪৪ কোটি ১ হাজার ৫৫১ টাকা; হংকং ফ্যাশনস ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৫৬টি চালানে ৪০ কোটি ৬৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৬ টাকা; থ্রি-স্টার ট্রেডিং ২০২০ সালে ১২০টি চালানে ২৫ কোটি ৯২ লাখ ৮ হাজার ৮৬৯ টাকা; ফরচুন ফ্যাশন ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ৫৯টি চালানে ১২ কোটি ৯৪ লাখ ৫৬ হাজার ৬২৩ টাকা; অনুপম ফ্যাশনওয়্যার লিমিটেড ২০২০ সালে ৪২টি চালানে ৭ কোটি ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ২০৩ টাকা; পিক্সি নিট ওয়্যারস লিমিটেড ২০২০ সালে ২০টি চালানে ৫ কোটি ৬ লাখ ২৪ হাজার ৩৪১ টাকা; স্টাইলজ বিডি লিমিটেড ২০২০ সালে ১০টি চালানে ২ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৯০২ টাকা এবং ইডেন স্টাইল টেক্স ২০২০ সালে ৮টি চালানে ১ কোটি ৬৪ লাখ ৭৭ হাজার ৮১৬ টাকা পাচার করেছে।
রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে ২ দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।