শুভাশীষ ভট্টাচার্য, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম-১১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ লতিফ প্রভাবশালী ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম চেম্বারের নিয়ন্ত্রণ তার হাতে। এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলমও ব্যবসায়ী মহলে লতিফের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
গত তিন মেয়াদে নানা সমীকরণে নৌকা প্রতীক নিয়ে লতিফ এমপি নির্বাচিত হলেও এবার তার ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন চট্টগ্রাম সিটির জনপ্রিয় কাউন্সিলর স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউল হক সুমন।
দীর্ঘ সময় ধরে নগর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাথে লতিফের দূরত্বের কারণে স্থানীয় নেতাকর্মীদের বেশিরভাগ অংশই স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমনকে জেতাতে কাজ করছেন। নির্বাচনী মাঠে প্রচার প্রচারণায় ইতোমধ্যে সুমন তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। শ্রমঘন এই আসনে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শ্রমিক শ্রেণীও সুমনের সমর্থনে মাঠে নেমেছে। ফলে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচনে আসা সুমনের সাথে লতিফ পেরে উঠতে পারেন কিনা সেটা নিয়েই চলছে ভোটারদের বিশ্লেষণ।
চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম চেম্বার অফ কমার্সের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছেন লতিফ। এই প্রতিষ্ঠানকে তিনি অনেকটা তার পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। সর্বশেষ এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনে তার অনুসারী মাহবুবুল আলম চেম্বারের দায়িত্ব ছেড়ে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতায় নামার পর চেম্বারের নতুন কমিটি হয়। সেখানেও লতিফ তার ছেলে ওমর হাজ্জাজকে সভাপতি ও আরেক ছেলে ওমর মুক্তাদিরকে পরিচালক বানিয়েছেন। আবার চেম্বারের সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলমের মেয়ে রাইসা মাহবুবকেও সহসভাপতি বানিয়েছেন। এসব বিষয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা লতিফের উপর ক্ষুদ্ধ। ইতোমধ্যে চেম্বারের বর্তমান কমিটির একজন সহসভাপতি পদত্যাগও করেছেন।
ব্যবসায়ি মহলে লতিফের এমন প্রভাব বিস্তার তার নির্বাচনী মাঠে প্রভাব ফেলছে। লতিফের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সাথে তার প্রতিপক্ষ গ্রুপের ব্যবসায়ীরাও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সুমনকে জেতাতে সক্রিয় হয়েছেন। ফলে ভোটের মাঠে লতিফের জন্য চতুর্মুখী প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে এম এ লতিফকে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি।
লতিফের প্রতিদ্বন্দ্বী জিয়াউল হক সুমন বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে ছাত্রলীগ, যুবলীগ হয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। স্রোতের বিপরীতে জিতে আসার অভিজ্ঞতা আমার আগে থেকেই আছে। এখন আমার সাথে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ছাড়াও ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষ সকল জনসাধারণ আমার জন্য কাজ করছে। এই আসনের মানুষের দীর্ঘদিনের যে বঞ্চনার ইতিহাস সেটা আমি পাল্টে দিতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারিসহ সাধারণ মানুষের সকল বিপদের মুহূর্তে আমি সব সময় ছিলাম, আছি এবং থাকবো। মানুষ আমার প্রতি যে ভালোবাসা দেখাচ্ছে তার প্রতিদান আমি অক্ষরে অক্ষরে দিবো। এখানকার অঞ্চলভিত্তিক সকল সমস্যা আমি ভোটারদের সাথে কথা বলে একটা একটা করে সমাধান করবো।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।