চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: আবৃত্তিশিল্পী সুমন বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য স্মরন্সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যা সাতটায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, চট্টগ্রাম অঞ্চল।
আবৃত্তিশিল্পী দেবাশীষ রুদ্রের সঞ্চালনায় এ সভায় ছিল আবৃত্তিশিল্পী সুমন বিশ্বাসের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, আবৃত্তি, সঙ্গীত ও স্মৃতিচারণ। বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদভুক্ত চট্টগ্রাম অঞ্চলের সংগঠনের আবৃত্তি কর্মীরা ছাড়াও এতে উপস্থিত ছিলেন পরিবারের সদস্য, সাংস্কৃতিক সহযোদ্ধা, স্বরনন্দনের আবৃত্তিকর্মীরা।
শুরুতে সঙ্গীতশিল্পী শ্রেয়সী রায়ের নিবেদিত গানের পর আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের নেতৃবৃন্দ প্রথমে প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। সুমন বিশ্বাসের রেকর্ডেড আবৃত্তির মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে স্বাগত কথা বলেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান। এর আগে সুমন বিশ্বাসের আত্মার শান্তির জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদভুক্ত চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ জানান। কোলকাতার আবৃত্তি সংগঠন শঙ্খমালা ও এর পরিচালক সুমন্ত্র সেনগুপ্তের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ জানান আবৃত্তিশিল্পী সুবর্ণা চৌধুরী ও বার্তা পাঠ করেন পুজমিতা দত্ত।
আবৃত্তি করেন পরিষদের নির্বাহী সদস্য আবৃত্তিশিল্পী হাসান জাহাঙ্গীর, তাসকিয়াতুন নুর তানিয়া, সেলিম রেজা সাগর। কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেনের বার্তা পাঠ করেন মাহবুবুর রহমান মাহফুজ। স্মৃতিচারণে অংশ নেন শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার মোসলেম উদ্দিন শিকদার, সংগঠক দুলাল দাশ গুপ্ত, বোধনের সভাপতি সোহেল আনোয়ার, বাতিঘর স্বত্বাধিকারী দীপঙ্কর দাশ ও স্বরনন্দনের নীলাদ্রি সেনগুপ্ত।
এ সময় সকলেই বলেন, সুমন বিশ্বাস; প্রতিভাবান একজন শিল্পীর নাম। দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে বিরতিহীনভাবে আবৃত্তিশিল্পে মগ্ন এক শিল্পীর নাম সুমন বিশ্বাস। আবৃত্তিতে তাঁর নিমগ্নতা এতটাই নিবিড় ছিল; অন্য অনেক শিল্পে পারঙ্গমতা সত্ত্বেও তিনি পরিচিতি পেয়েছেন, খ্যাত হয়েছেন আবৃত্তিশিল্পী হিসেবে। সুমন বিশ্বাসের প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে আসে সংস্কৃতি অঙ্গনে।
রাশেদ হাসান বলেন, ‘সুমন বিশ্বাস নেই, এ কথাটিই অবিশ্বাস্য। তাঁর হুট করে আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নেয়া ছিল খুবই আকস্মিক। এভাবে একজন প্রতিভাবান তরুণ শিল্পীর অকালে চলে যাওয়ার ক্ষতি অপূরণীয়। একই সাথে সুমন বিশ্বাস একজন ভালো সংগঠক ও আবৃত্তির শিক্ষক। নির্দেশক হিসেবে খুব অল্প বয়সে খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। তিনি তবলায় জাতীয় প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক প্রাপ্ত।’
২০১৯ সালে ‘কুড়ি বছর পর’ শিরোনামে সুমন বিশ্বাসের একক আবৃত্তি প্রশংসা কুড়িয়েছেন। সুমন বিশ্বাসের আবৃত্তির খ্যাতি চট্টগ্রাম শহর ছাড়িয়ে অন্য শহরেও তাঁকে পরিচিত করেছে। বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদভুক্ত সংগঠন স্বরনন্দনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
সুমন বিশ্বাসের ছোটবোন বিশ্বাস কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন। তিনি বলেন, আপনাদের সুমন যেমন আবৃত্তিতে স্বমহিমায় উজ্জ্বল হয়ে উঠছিল, আমাদের পরিবারেও সে ছিল মধ্যমণি। আমাদের সকলের চালিকাশক্তি ছিল ও। ওঁকে ছাড়া আমাদের জীবন শুনয় হয়ে গেছে। এ সময় মিলনায়তনে উপস্থিত সকলের চোখ সজল হয়ে উঠে। সুমন বিশ্বাসের মামাতোবোন সঙ্গীতশিল্পী ইন্দ্রাণী পাঠকের গানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।