জুমবাংলা ডেস্ক: চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনার সংক্রমণ শুরুর পর জেলায় একদিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ সময়ে ২২৮ জনের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১২ দশমিক ২১ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর ছয়টি ল্যাবে গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৮৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ২২৮ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২০৪ জন ও দশ উপজেলার ২৪ জন।
উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে সর্বোচ্চ ৭ জন, রাউজান ও সীতাকু-ে ৩ জন করে, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, সন্দ্বীপ ও পটিয়ায় ২ জন করে এবং সাতকানিয়া, আনোয়ারা ও বোয়ালখালীতে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৪৪ হাজার ৩১৯ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৩৫ হাজার ৫৩১ জন ও গ্রামের ৮ হাজার ৭৮৮ জন।
গতকাল করোনায় আক্রান্ত ৯ রোগীর মৃত্যু হয়। ফলে মৃতের সংখ্যা এখন ৪২৩ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ৩০৯ জন ও গ্রামের ১১৪ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৬৩ জন। জেলায় মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩৪ হাজার ৭৬৩ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৪ হাজার ৭৩৩ জন এবং ঘরে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩০ হাজার ৩০ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২৫ জন ও ছাড়পত্র নেন ১০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৩২৯ জন।
চট্টগ্রামে করোনার প্রথম করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ৩ এপ্রিল। সেই থেকে শুরু হয়ে এ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৯ রোগীর মৃত্যু হলো গতকাল। এর আগে, ৬ রোগীর মৃত্যু হয় ৭ এপ্রিল। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনে ৩৪ জন মৃত্যুবরণ করেন। ২ এপ্রিল ছাড়া প্রতিদিনই এক বা একাধিক রোগীর মৃত্যু হয়। তবে গতকালই শনাক্ত জীবাণুবাহকের সংখ্যা এ মাসের সর্বনিম্ন।
এর আগে, ৩ এপ্রিল ২৩২ জনের শরীরে ভাইরাস পাওয়া যায়, যা ছিল ৯ দিনের সর্বনি¤œ। তবে এদিন করোনায় চার জনের মৃত্যু হয়। করোনাকালের সর্বোচ্চ সংখ্যক সংক্রমণ ৯ এপ্রিলে ৫২৩ জন। এ সময়ে মারা যান ৫ করোনা রোগী। সংক্রমণের হার ১৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি আজ বাসস’কে জানান, ‘এটাই চট্টগ্রামে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এখনকার ভাইরাসটি একটু বেশি মারাত্মক। খুব দ্রুত রোগীকে কাবু করে ফেলে। আগে থেকে কোনো শারীরিক সমস্যা থাকলে সেটাকে অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয়। বলা হচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকার ভাইরাসটির মতোই আগ্রাসী জীবাণুতে এখানে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকদিন হাসপাতালে ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। গতকালই তিনি হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরে আসেন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৮০৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৪ জনসহ ৫২ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৪৩৪ জনের নমুনার মধ্যে ১০ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন। এরা সবাই শহরের বাসিন্দা। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ১৫৪ টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ২ টিসহ ৫৩ টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়।
নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ১২ টি নমুনার ৭ টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে। এসব নমুনার ৭ বাহকই শহরের বাসিন্দা।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে ৪০৬ টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ১৫ টিসহ ৫৯ টি এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৫২ টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৩ টিসহ ২৭ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এদিন চট্টগ্রামের কোনো নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়নি এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক গতকালের রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে বিআইটিআইডি’তে ৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ, চমেকে ২ দশমিক ৩০, সিভাসু’তে ৩৪ দশমিক ৪১, আরটিআরএলে ৫৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ, শেভরনে ১৯ দশমিক ৪৬ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৫১ দশমিক ৯২ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।