জুমবাংলা ডেস্ক: চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা আবারো বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাক্রান্ত ১১ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ৮০১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণ হার রেকর্ড ৩৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, এন্টিজেন টেস্ট ও আটটি ল্যাবে গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের ২ হাজার ৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করায় ৮০১ জন পজিটিভ হয়েছে। এদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪৬৯ জন ও ১৪ উপজেলার ৩৩২ জন।
উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ হাটহাজারীতে ৬৬ জন, রাউজানে ৪০ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৩৮ জন, বোয়ালখালীতে ৩৭ জন, পটিয়ায় ৩৬ জন, আনোয়ারায় ২৮ জন, সন্দ্বীপে ২৩ জন, বাঁশখালীতে ২০ জন, সীতাকু-ে ১৯ জন, মিরসরাইয়ে ১২ জন, ফটিকছড়িতে ৫ জন, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ায় ৩ জন করে এবং চন্দনাইশে ২ জন রয়েছেন। জেলায় এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মোট সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা ৭৫ হাজার ৩৬৩ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৫৬ হাজার ৯০৯ জন ও গ্রামের ১৮ হাজার ৪৫৪ জন।
গতকাল করোনায় শহরের চার ও গ্রামের সাত রোগী মারা গেছে। ফলে মৃতের সংখ্যা এখন ৮৮৫ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ৫৪৩ জন ও গ্রামের ৩৪২ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ২৬৩ জন। জেলায় মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৫৪ হাজার ১৬১ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭ হাজার ৫৪৯ জন এবং ঘরে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছে ৪৬ হাজার ৬১২ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ১৬৫ জন এবং ছাড়পত্র নেন ১৩৮ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ২ হাজার ৩৬০ জন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে প্রথম ভাইরাসবাহক শনাক্ত হওয়ার পর গতকালের সংক্রমণ হার সবচেয়ে বেশি। এর আগে, একদিনের সর্বোচ্চ সংক্রমণ হার ছিল ১১ জুলাই, ৩৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এদিন নতুন ৮২১ জন পজিটিভ শনাক্ত ও ৯ রোগীর মৃত্যু হয়। করোনায় একদিনে সবচেয়ে বেশি ১৫ রোগীর মৃত্যু হয় ১৯ জুলাই। এদিন ৯২৫ জনের দেহে ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ছিল ৩৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। চব্বিশ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ সংক্রমণ ধরা পড়ে ১৩ জুলাই, ১ হাজার ৩ জন। সংক্রমণের হার ৩৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এদিন করোনায় মৃত্যুবরণ করে ১০ জন।
এদিকে, গতকাল ১১ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে চলতি মাসের প্রথম চব্বিশ দিনে চট্টগ্রামে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৭৮ জনে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, এন্টিজেন টেস্টে গতকাল সবচেয়ে বেশি ৮৬৩ রোগীর পরীক্ষা হয়েছে। এতে শহরের ৮৬ ও গ্রামের ২৩৮ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ২৬৫ জন করে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। বিআইটিআইডি’র ল্যাবে শহরের ৭০ ও গ্রামের ১১ জন এবং চমেক ল্যাবে শহরের ১১২ ও গ্রামের ৬ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন।
ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ৪৫ টি নমুনার মধ্যে শহরের ৯ ও গ্রামের ২০ টিতে ভাইরাস সনাক্ত হয়। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ৫৮ টি নমুনায় শহরের ২১ ও গ্রামের ৯ টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে ৩৮৩ নমুনা পরীক্ষা হলে শহরের ৭৩ ও গ্রামের ৪২ টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৮৪ টি নমুনার মধ্যে গ্রামের একটিসহ ৩৯ টি, মা ও শিশু হাসপাতালে ৬৬ টির মধ্যে গ্রামের ৪ টিসহ ৩১ টি এবং মেডিকেল সেন্টারে ৪৯ নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের একটিসহ ৩৪ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও এপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
এদিন চট্টগ্রামের কোনো নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, এন্টিজেন টেস্টে ৩৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ, বিআইটিআইডি’তে ৩০ দশমিক ৫৬, চমেকে ৪৪ দশমিক ৫৩, সিভাসু’তে ৬৪ দশমিক ৪৪, আরটিআরএলে ৫১ দশমিক ৭২, শেভরনে ৩০ দশমিক ০২, ইম্পেরিয়ালে ৪৬ দশমিক ৪৩, মা ও শিশু হাসপাতালে ৪৬ দশমিক ৯৭ এবং মেডিকেল স্টোর হাসপাতাল ল্যাবে ৬৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।