বিনোদন ডেস্ক : ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রুনা খান। পর্দার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয় তিনি। এ কারণে বিভিন্ন সময় ফেসবুকে নিজের মতামত, ভালোলাগা, অপন্দের বিষয়গুলো তুলে ধরেন তিনি।
এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি নাটকের ভিডিও শেয়ার করেন তিনি। স্মৃতি রোমন্থন করে লেখেন, ‘২০০৬ বা ২০০৭-এ শুট করেছিলাম গাজীপুরে, যদি ভুল না করে থাকি।’
ভিডিওটি মূলত রুনা খান ও মোশাররফ করিম অভিনীত ‘দেয়াল আলমারি’ নামে একটি নাটকের। বেশ কিছুদিন ধরে নেটদুনিয়ায় এ নাটকের বিভিন্ন অংশ নিয়ে চর্চা হচ্ছে। অনেকেই শেয়ার করেছেন বিভিন্ন ক্যাপশন দিয়ে।
এদিকে সেই সময়ের স্মৃতি মনে করে রুনা খান লেখেন, ‘আম্মা তখন শুটিংয়ে যেত আমার সাথে, দুদিনের শুটিং নিজের চোখে দেখেছে, ওখানে কিছু বলেনি। বাসায় ফিরে বলেছিল, জীবনে কোনোদিন আর এমন চরিত্র করতে দেবে না! পৃথিবীর সবচেয়ে নামি পরিচালক, দামি অভিনেতা সাথে থাকলেও না!’
তিনি জানান, ‘টানা ৭ দিন জ্বর ছিল আমার বাসায় ফেরার পর। মাথা, গাল, পিঠ সব ফোলা, ব্যথা। চড়ের চোটে মুখের ভেতরে জিব, গালের ভেতরের চামড়া কাটা। অন্তত ১৫ দিন ঝাল কিছু খেতে পারিনি!’
‘মোশাররফ করিম জীবনের প্রথম মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার পান এই নাটকের জন্য। আর আমি সেই অনুষ্ঠানে দাওয়াত পর্যন্ত পাইনি সেবার!’
নাটকটি করার পর মোশাররফ করিম রুনার কাছে মাফ চেয়েছেন বলেও জানান এই অভিনেত্রী। তিনি লেখেন, ‘তারপর মোশাররফ করিমের সাথে যত কাজ করেছি, প্রতি শুটিংয়ে অন্তত ১ বার করে মাফ চেয়েছে, তোরে এত মারছি দেয়াল আলমারিতে! পারলে মাফ করে দিস! কোনো উপায় ছিল না আমার! ’
রুনা আরও লেখেন, ‘অরণ্য আনোয়ারের সাথে যারা কাজ করেন তারা জানেন পারিশ্রমিক কীভাবে দেন। বাজারে আপনি ১০ টাকা পেলে, সে দেবে ৮ টাকা! তবে আগেই বলে নেবে এবং শুট শেষে অবশ্যই টাকা হাতে, বাসায়, ব্যাংকে পৌঁছে দেবার জন্য পাগল হয়ে যাবে! বলে ২ টাকা কম দেবে, কিন্তু চালাকি করে ১ পয়সাও মেরে দেবে না!’
চড় খাওয়ার প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ‘পুরো নাটকে প্রতিটা মারের দৃশ্য দর্শক ১ বার দেখেছে। কিন্তু পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রী তিনজনেই দাঁতে-দাঁত চেপে, মনে-মন চেপে অন্তত ৩-৫ বার শট নিয়েছে-দিয়েছে!
শুধু যদি একটা ভালো কাজ হয় এই আশায়! এই নাটক আমাকে, স্বীকৃতি, অর্থ, জনপ্রিয়তা কিছুই দেয়নি! তবে অরণ্য আনোয়ারের ‘দেয়াল আলমারী’ এখন পর্যন্ত মোশারফ করিমের সাথে আমার সবচেয়ে প্রিয় নাটক।
অভিনেত্রীর মা বলেছিলেন জানিয়ে তিনি লেখেন, ২০ বছরে পর্দায় যে কোনো চরিত্র করার ব্যাপারে আমার মার কোনো নিষেধ নেই, শুধু একবারই বলেছিল যেন ‘সখিনা’র মতো চরিত্র আর জীবনে কোনোদিন না করি!
আমি আম্মাকে বলেছিলাম, আম্মা আমি তো ২ দিন ক্যামেরার সামনে সখিনার জীবন কিছুটা যাপন করেছি মাত্র, আমাদের দেশে বহু ‘সখিনা’ সারাটা জীবন ক্যামেরার বাইরে ঘরে-পরিবারে-সমাজে-দেশের সবার চোখের সামনে এই জীবনযাপন করে! আমি দুদিন মার খেয়ে যদি ওদের ২-৩ যুগের মার খাওয়ার কিছুটা দর্শককে-সমাজকে চোখে আঙুল দিয়ে একটু হলেও দেখাতে পারি, আমি সেটা করতে চাই আম্মা!
সারা জীবন রুনা শুধু অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন জানিয়ে লেখেন, ‘বুদ্ধি হবার পর থেকে আমি নিজের মুখ পর্দায় দেখার স্বপ্ন দেখেছি! বোধ হবার পর থেকে আমি কেবল পর্দায় ভালো অভিনেতা হবার স্বপ্ন দেখে যাচ্ছি! মৃত্যুর আগপর্যন্ত আমি এই স্বপ্ন দেখে যাব!’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।