আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্বে বাড়ছে চতুর্থ প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তির ব্যবহার। বিজ্ঞানীরা বলছেন, নতুন প্রজন্মের এসব প্রযুক্তি আগের তুলনায় আরও উন্নত, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব। প্রশ্ন আসছে, এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান কী? নীতিনির্ধারকরা বলছেন, চোখ আছে প্রযুক্তির সবশেষ সংস্করণের দিকে। তবে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি কমিশনের অনুমোদনের পরই কেবল তা ব্যবহার করবে বাংলাদেশ।
পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে প্রযুক্তির উন্নততর সংস্করণে চলছে নানামুখী গবেষণা। যার ফলাফল চতুর্থ প্রজন্মের প্রযুক্তি। প্রোরিভ বা যুগান্তকারী নামের প্রকল্পের আওতায় রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলের সেভিয়ারস্কে গড়ে উঠছে ৩০০ মেগাওয়াটের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। যেখানে বসছে চতুর্থ প্রজন্মের রিঅ্যাক্টর বিআরইএসটি ওডি -৩০০।
নতুন প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তির প্রয়োগে এখানেই থেমে নেই রাশিয়া। দেশটির বুলেইয়রস্ক নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে গিয়েও দেখা যায়, কেন্দ্রটিতে চলছে পঞ্চম ইউনিট নির্মাণের প্রস্তুতি। যেখানে বসবে চতুর্থ প্রজন্মের রিঅ্যাক্টর বিএন-১২০০। আর তা উৎপাদনে আসার কথা ২০৩২ সাল নাগাদ।
সম্প্রতি রাশিয়ার সোচিতে অনুষ্ঠিত অ্যাটমএক্সপোর মূলবার্তা ছিলো চতুর্থ প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তির বিকাশ। প্রশ্ন আসে, এমন কী বিশেষত্ব আছে এতে? যা বিশ্বকে দেবে নতুন কিছু।
রুশ বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা যা বলছেন, তাতে সহজ ভাষায় দাঁড়ায়, অর্থনীতি-নিরাপত্তা আর পরিবেশগত দিক বিবেচনায় চতুর্থ প্রজন্মের প্রযুক্তি হবে আরও উন্নত, সাশ্রয়ী ও নিরাপদ। কমাবে কার্বন নিঃসরণ।
অত্যাধুনিক রিঅ্যাক্টর বা চুল্লি সক্ষম হবে আরও দক্ষতার সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনে। জ্বালানির প্রাপ্যতা নিয়েও ভাবতে হবে না তেমন। ব্যবহৃত জ্বালানি স্পেন্ট ফুয়েল পুনরায় ব্যবহারের মাধ্যমে করা যাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন। রিঅ্যাক্টর বা চুল্লির আকৃতি ছোট হওয়ায় অল্প জায়গাতেই তৈরি করা যাবে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।
রাশিয়ার বেলাইয়ারস্ক নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের হেড অব টেকনিক্যাল প্রুপের আন্দ্রে স্মেলভ বলেন, চতুর্থ প্রজন্মের মূল মানদণ্ড হলো পারমাণবিক জ্বালানির ভবিষ্যৎ অগ্রগতি। এ প্রযুক্তি হবে পরিবেশবান্ধব ও অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক। আর সবকিছুর আগে থাকবে নিরাপত্তা।
বাংলাদেশের একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প রূপপুরে বসানো রিঅ্যাক্টর ভিভিইআর ১২০০ থ্রি প্লাস জেনারেশন প্রযুক্তির, যা চতুর্থ প্রজন্মের আগে সবশেষ সংস্করণ। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, রূপপুরের দ্বিতীয় প্রকল্পে কোন ধরনের প্রযুক্তির কথা ভাবছে বাংলাদেশ?
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মো. শৌকত আকবর বলেন, আমরা প্রথমে দেখবো ডিজাইনটা কেমন। তারপর আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সাথে যোগাযোগ করা হবে। একটা চতুর্থ প্রজন্মের জন্য একটা কনস্ট্রাকশন করতে গেলে গাইডলাইন কী হবে সেটা দেখা হবে। যখন আমরা আন্তর্জাতিক গাইডলাইন পাবো এবং নতুন দেশগুলোকে আত্মস্থ করার মতো সমস্ত ধরনের সুপারিশ আইএইএ পক্ষে থাকবে, তখন আমরা যোগাযোগ করবো।
রাশিয়ার অ্যাটম এক্সপোর বিভিন্ন প্রদর্শনীর মাধ্যমে জানানো হয়, আগামীর পরমাণু শিল্পে নেতৃত্বে থাকবে চতুর্থ প্রজন্মের প্রযুক্তিই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।