জুমবাংলা ডেস্ক : সারা বিশ্বে প্রতি বছর ১০ কোটি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশেও এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়ছে। প্রতিবছর বেড়ে চলেছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা। শুধু ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ১ হাজার ৭০৫ জন মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আর একই বছরে সারা বিশ্বে এই সংখ্যা ৫ হাজার ৫০০ জনের বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুয়ায়ী, ২০০০ সালে প্রায় বিশ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে মারা যায়। তবে এই অবস্থার আরও অবনতি ঘটছে। চলতি বছর বিশ্বে ৪০ হাজার মানুষ এ রোগে মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেটস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন।
সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত অঞ্চল লাতিন আমেরিকা। ২০০০ থেকে ২০০৫ সালে সেখানে বছরে গড়ে পাঁচ লাখ মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। কিন্তু ২০২৩ সালে অঞ্চলটিতে ৪৬ লাখ মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। এদিকে ২০২৪ সালে এরই মধ্যে সেখানে প্রায় ৬০ লাখ ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ব্রাজিলের মানুষ।
একদিকে যেমন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তেমনি অঞ্চল ছাপিয়ে তা ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের সর্বত্র। এডিস মশা তাপমাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে সংবেদনশীল এবং বিশ্ব উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পরিসরও বাড়ছে।
বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ডেঙ্গুর সংক্রমণ হয় ১৯৬০ সালের দিকে। ২০০০ সালের জুন মাসে ডেঙ্গু সর্বপ্রথম মহামারি আকারে দেখা দেয় বাংলাদেশে। সে বছর মোট ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়, যার মাঝে মারা যায় ৯৩ জন। এরপর কম-বেশি প্রতিবছরই মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে, মারা গেছে। কিন্তু সেই সংখ্যা কখনোই ২০২৩ সালের মতো এত প্রকট আকার ধারণ করেনি।
২০২৩ সালে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়। এই বছরে আক্রান্তের হার যেমন বেড়েছে, তেমনি মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ ছুঁয়েছে।
আগের ২৩ বছরে দেশে ডেঙ্গুতে মোট মারা গেছেন ৮৬৮ জন। কিন্তু শুধু ২০২৩ সালে ১ হাজার ৭০৫ জন মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অর্থাৎ বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি বছরে বছরে আরও ভয়াবহ হচ্ছে।
অ্যানেফিলিস মশা ম্যালেরিয়া ছড়ায়, যা এখন সারা বিশ্বেই পাওয়া যায়। কিন্তু এডিস মশা এখনো সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েনি। কিন্তু জলবায়ুর বর্তমান প্রবণতা অনুযায়ী, এডিস মশা দক্ষিণ ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে আরও দুইশ কোটি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
নগরায়ন এই মশার বংশবিস্তার বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে। একটি ডেঙ্গু মশা তার দুই সপ্তাহের জীবনে একাধিক ব্যক্তিকে কামড়াতে পারে। কিছু স্থানে এই রোগ আগে ছিল না কিন্তু এখন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এই প্রবণতা এখন বাংলাদেশ ও ভারতে দেখা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্যালিফোর্নিয়া, দক্ষিণ ইউরোপ, আফ্রিকায় ডেঙ্গু আক্রান্তে সংখ্যা বেড়েছে।
ডেঙ্গু জ্বরের জন্য বিশ্বকে অবশ্যই প্রস্তুতি নিতে হবে। যদিও ধনী উত্তর গোলার্ধ ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, তবে এতে বিশ্বের দরিদ্র অংশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।