বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মসলা গবেষণা কেন্দ্র বলছে চীন থেকে আনা চাইভের একটি জাত এখন কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে এবং তাদের মতে এই চাইভই হয়ে উঠতে পারে পেঁয়াজের বিকল্প।
সবজিতে পেঁয়াজের পাতা কিংবা মাছের চচ্চড়িতে যেভাবে পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয় সেভাবে অনায়াসেই চাইভ ব্যবহার করা সম্ভব। স্যুপ আর সালাদে এখনি ব্যাপক চাহিদা হয়েছে এই চাইভের। ফলে বাংলাদেশে এর সম্ভাবনাও ভালো বলে মনে করছেন কৃষি ইন্সটিটিউটের গবেষকরা।
সিলেট ছাড়া পাহাড়ি কিছু এলাকার অধিবাসীদের মধ্যে আগে থেকেই স্থানীয়ভাবে চাইভ উৎপাদন হয়ে আসছে এবং ববৈহার হয়ে আসছে।
তবে যেসব এলাকায় পেঁয়াজ বেশি উৎপাদন হয় সেখানে এই চাইভ উৎপাদনের সম্ভাবনা বেশি বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
রোগ বালাই কম হওয়া আর উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় কৃষকদের জন্য এটি সামনে লাভজনক ফসল হয়ে উঠবে বলেও আশা করছেন তারা।
চাইভ আসলে কি?
ঢাকার রেস্তোরাঁয় স্যুপ পরিবেশনের পর দেখা যায় স্যুপের বাটিতে লম্বাটে ধরণের এক ধরণের সবজি থাকে, যেটি কৃষিক্ষেত্রে মসলা জাতীয় ফসল চাইভ হিসেবেই পরিচিত।
চাইনিজ রেস্তোরাঁর অনেক খাবারেই এটি দেখা যায়। এর স্বাদ অনেকটা পেঁয়াজ পাতার মতো। সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিস বলছে, এর উৎপত্তিস্থল সাইবেরিয়া-মঙ্গোলিয়া-নর্থ চায়না অঞ্চল।
দেশে অনেকে পেঁয়াজ ও রসুনের বিকল্প হিসেবে এর ব্যবহার করলেও এর বহুল ব্যবহার স্যুপ আর সালাদে।
বাংলাদেশে সাধারণত আমদানি করা চাইভ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর সেটি আসে মূলত চীন থেকে।
কীভাবে আবাদ শুরু হলো বাংলাদেশে?
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ নুর আলম চৌধুরী জানান, ২০১৪ সালে চীন থেকে এর জার্মপ্লাজম নিয়ে আসা হয়। পরে তিন বছর বাংলাদেশে ট্রায়াল দিয়ে সফলতা পাওয়ায় এখন তা কৃষকদের মাঝে বিতরণ শুরু হয়েছে। এখনো উল্লেখযোগ্য না হলেও আস্তে আস্তে জনপ্রিয়তাও পাচ্ছে এই চাইভ।
মাটির নীচের অংশে পেঁয়াজের চারার আকৃতির হয় কিন্তু উপরের দিকে ২০ থেকে ৪০টি পর্যন্ত পাতা হয়ে থাকে একটি চাইভ থেকে। ৩০-৪০ সেমি. উচ্চতার গাছে প্রতিটি পাতার দৈর্ঘ্য হয় ২৩-৩০ সেমি.। আবার বারবার এই পাতা নিয়ে ব্যবহার করা যায়। ফলে এর খরচও খুব কম।
সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিস বলছে, এটি সারা বছরই চাষাবাদ করা সম্ভব এবং এর মধ্যেই চাইভের উচ্চফলনশীল একটি জাত উদ্ভাবন করে বিতরণ শুরু করেছে কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট।
কোন মাটিতে বেশি হয় চাইভ?
কৃষি তথ্য সার্ভিস বলছে, পাবনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মেহেরপুর, রাজশাহীসহ যেসব এলাকায় পেঁয়াজ বেশি হয় সেখানেই এই চাইভের সম্ভাবনা বেশি।
সাধারণত সেচ ও পানি নিষ্কাশনের সুবিধা আছে এবং জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ বেলে দোআঁশ মাটি চাইভ চাষের জন্য বেশি উপযুক্ত।
এছাড়া বৃষ্টিপাত আর ২৫ ডিগ্রির নীচের তাপমাত্রাকে এর জন্য অনুকূল বলে মনে করা হয়। এর রোগ বালাই খুব কম হয়। আর পোকাও খুব এটা আক্রমণ করে না। তাই চাইভ চাষে খরচও অনেকটা কম।
সাধারণত চারা লাগানোর ৬০-৭০ দিনের মধ্যে ফসল পাওয়া যায় এবং একবার রোপণ করে বছরে ৫/৬ বার ফসল সংগ্রহ করা যায়।
সূত্র: বিবিসি বাংলা অনলাইন
চীন সরকারের অনুরোধে ‘কোরআন মজিদ’ অ্যাপ নিয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিলো অ্যাপল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।