নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের টঙ্গীতে চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে এবং বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে কারখানার ভেতরে অবস্থান নিয়েছেন শ্রমিকেরা। টঙ্গীর কাদেরিয়া এলাকার ফেমাস গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ফেমাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের শ্রমিকেরা গত মঙ্গলবার থেকে আজ শনিবার বেলা ২টা পর্যন্ত আট দফা দাবি জানিয়ে কারখানায় এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারখানাটিতে ১২৭ জন শ্রমিক কাজ করতেন। গত মঙ্গলবার বিকেলে কর্তৃপক্ষ কারখানার সব শ্রমিককে চাকরিচ্যুতের বিষয়টি মৌখিক ঘোষণা করেন। ঘোষণার পর শ্রমিকেরা কারখানার ভেতরে অবস্থান নেন। বুধবার সকালে কারখানা কর্তৃপক্ষ নোটিশ বোর্ডে চাকরিচ্যুত ও কারখানা বন্ধের নোটিশ ঝুলিয়ে দেয়।
কারখানাটির সব শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের গত অক্টোবর মাসের বেতন, অতিরিক্ত মজুরি পরিশোধ করেননি মালিক। এ সময় শ্রমিকেরা তাঁদের পাওনা পরিশোধের দাবি জানালে কারখানার মালিক অপারগতা প্রকাশ করেন। শ্রমিকেরা তাৎক্ষণিক এর প্রতিবাদ জানিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী কারখানার ভেতরে অবস্থান করছেন।
এরপর কারখানার মালিকের সঙ্গে কথা বলার জন্য শ্রমিকেরা কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কারখানার মালিক কথা বলতে রাজি হননি। পরে পাওনা আদায়ে সহযোগিতা চেয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শিল্প পুলিশসহ (আইআরআই) বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের কাছে আবেদন করেছেন শ্রমিকেরা।
এরপর কারখানার মালিকের সঙ্গে কথা বলার জন্য শ্রমিকেরা কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কারখানার মালিক কথা বলতে রাজি হননি। পরে পাওনা আদায়ে সহযোগিতা চেয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ও শিল্প পুলিশসহ (আইআরআই) বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের কাছে আবেদন করেছেন শ্রমিকেরা।
শ্রমিকদের আট দফা দাবিগুলো হলো, কারখানা বন্ধের নোটিশের তারিখ থেকে পরবর্তী তিন মাসের মূল বেতন, প্রতিবছর এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ বোনাস (সার্ভিস বেনিফিট), গ্র্যাচুইটি প্রদান, অর্জিত ছুটির টাকা প্রদান, কারখানার মূল লভ্যাংশের শেয়ার প্রদান (প্রফিট শেয়ার), অক্টোবর মাসের বেতন, গ্রুপ বিমার সুবিধা, বকেয়া রেশন সুবিধাসহ বিভিন্ন সুবিধা পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকেরা।
শ্রমিকেরা বলেন, ‘গত অক্টোবর মাসের বেতন, শ্রমের অতিরিক্ত মজুরিসহ (অতিরিক্ত সময়ে কাজ) আমাদের আট দফা দাবি জানিয়েছি। কারখানার মালিক পাওনা পরিশোধ না করে চাকরিচ্যুতের কথা জানিয়ে দেন। তারপর কারখানাও বন্ধ করে দেওয়া হয়।’
ফেমাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ দিন ধরে কারখানার ভেতরে দিন-রাত পালাক্রমে সব শ্রমিক অবস্থান করছেন। কারখানার মালিক আমাদের কোনো দাবি মেনে নেননি। বকেয়া বেতনও পরিশোধ করছেন না। আমরা জানতে পেরেছি, কারখানাটি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের বকেয়া বেতনসহ বিভিন্ন যৌক্তিক দাবি আদায়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল বিকেলে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কার্যালয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করতে আমাদের শ্রমিকদের পক্ষ থেকে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিকে যেতে বলা হয়েছে।’
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শক সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, ‘কারখানার মালিকের প্রতিনিধি মো. রানা আমাদের জানিয়েছেন আগামীকাল রোববার বিকেলে কারখানার মালিক মোহাম্মদ হাসান আমাদের কার্যালয়ে আসবেন। সেই সঙ্গে সব শ্রমিকের প্রতিনিধি হিসেবে ১০ জন শ্রমিকও আসবেন।’
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক (টঙ্গী জোন) কৃপা সিন্ধু বালা জানান, পাঁচ দিন ধরে কারখানার ভেতরে শ্রমিকেরা অবস্থান করছেন। কারখানায় বিশৃঙ্খলা ও ভাঙচুর থেকে বিরত থাকতে শ্রমিকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। কারখানার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। তাঁকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কারখানার ভেতর শিল্প পুলিশের সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
ফেমাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড কারখানার মালিক মোহাম্মদ হাসানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
রাস্তা নির্মাণে বন বিভাগের বাধা, প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।