জুমবাংলা ডেস্ক: চার ভাইয়ের মধ্যে তিন ভাই উচ্চ শিক্ষিত হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত। নিজেও ডিগ্রি পাশ করে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন। উদ্দেশ্য গ্রামে থেকে পরিবারের সম্পত্তি দেখভালের পাশাপাশি চাষাবাদ করে সফলতা অর্জন করা।
সেই লক্ষ্যে মাছ চাষ, গরুর ফার্ম, মুরগীর খামার করেন তিনি। কিন্তু প্রত্যাশিত সফলতা অর্জন করতে পারেননি। পরে নিকটাত্মীয়ের বাড়ির ছাদে লাগানোর ড্রাগন ফল দেখে তার আগ্রহ জন্মে। তার কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে কিছু চারা নিয়ে এসে নিজের ক্ষেতে শুরু করেন ড্রাগন ফলের আবাদ। সেই শুরু গত দুই বছরে নিজের পরিশ্রমের সফল রূপ দেখছেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের লোহাগড় গ্রামের মোজাম্মেল হোসেন মিঠু।
বর্তমানে তার বাগানের প্রতিটি গাছে শোভা পাচ্ছে বেশ কয়েক ধরণের ড্রাগন ফল। রোগ-বালাই কম হওয়ার পাশাপাশি চাষ পদ্ধতি সহজ হওয়ায় এবং বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় বিদেশি এ ফল চাষে এরইমধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করতেছে আশপাশের চাষিরা। অনেকেই জানতে চাইছেন, কিভাবে অল্প সময়ে ফলন আনতে সক্ষম হয়েছি আমরা।
ফলের বাগানের পরিচর্যা করতে করতে মিঠু জানান, গত দুই বছর কষ্ট করে ড্রাগন গাছগুলোর যত্ন করেছি। ইতিমধ্যেই ফল পেতে শুরু করেছি। এখন প্রতিমাসে অন্তত দুই বার ফল কেটে বাজারজাত করছি। ক্রমেই বাড়ছে এর চাহিদা। ফলে এবছর নতুন করে বাগানের পরিধি বাড়িয়েছি। কয়েকদিন পূর্বে বাগানের পাশের জমি কিনেছি। স্বপ্ন দেখছি ড্রাগন ফলের বিশাল বাগান করার। এখনই লাভের কথা ভাবছি না, কারণ অন্তত ২০/২৫ বছর ধরে এই গাছে ফলন পাবো। এছাড়া এবছর থেকে কৃষকদের আগ্রহ দেখে চারা করার কাজও শুরু করেছি।
তিনি আরও জানান, ইউটিউবের ভিডিও দেখে ৭০ শতক জমিতে বেড তৈরি করে ৭০০ ড্রাগন চারা রোপণ করেন। বেড তৈরি থেকে শুরু করে চারা রোপণ ও গাছের পরিচর্যায় এ পর্যন্ত তার প্রায় ৭ লক্ষ লাখ টাকারও বেশি খরচ হয়েছে। বর্তমানে প্রতিটা গাছে ড্রাগন ফল ধরেছে। পর্যায়ক্রমে ফলন আরও বৃদ্ধি পাবে বলেও আশা করছেন তিনি। পাইকারি ও খুচরা ফল বিক্রি করে তিনি এখন সফল কৃষক।
দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাতুল ইমরান বলেন, পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ড্রাগনে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, মিনারেল রয়েছে। একটি ড্রাগন ফলে ৬০ ক্যালরি পর্যন্ত শক্তি এবং প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম, বিটা ক্যারোটিন ও লাইকোপিনের মতো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। ডায়াবেটিস ও ক্যানসার প্রতিরোধে ড্রাগন ফল খুবই কার্যকরী।
আরেক উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুরে আলম বলেন, মিঠুর মতো চাষিদের কারণে এটি দেশীয় ফল হিসেবেই মানুষের কাছে পরিচিতি লাভ করেছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজারের ফলের দোকানগুলোতে এখন দেশীয় ফলের মতোই মিলছে ড্রাগন ফল। কৃষি বিভাগ সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করে আসছে।
চাকুরী ছেড়ে আজ কোটিপতি! চা বিক্রি করে ভাগ্য বদলালেন এই নারী!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।