আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টে বক্তৃতা করে সমর্থন চেয়েছেন। এবার এশিয়া ও আফ্রিকার পার্লামেন্টেও বলতে চান জেলেনস্কি। খবর ডয়চে ভেলে’র।
রোববার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলির পার্লামেন্টে বক্তৃতা করতে চান তিনি। সেখানে রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে সমস্ত তথ্য দিতে চান তিনি। এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলির কাছেও তিনি সমর্থন চাইবেন। এর আগে ইউরোপের একাধিক দেশের পার্লামেন্টে বক্তৃতা দিয়েছেন জেলেনস্কি। বক্তৃতা দিয়েছেন জাতিসংঘেও।
সোমবারের প্রাত্যহিক ভিডিও বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন পরিস্থিতির কথা গোটা বিশ্বকে জানানো দরকার। সকলের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়া দরকার। প্রতিটি দেশের সংবাদমাধ্যমে যেন ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করা হয়। এ কথা বলতে গিয়েই এশিয়া এবং আফ্রিকার পার্লামেন্টগুলিতে বক্তৃতা করার কথা বলেন তিনি। বস্তুত, এর আগে ইউরোপের একাধিক পার্লামেন্টে ভার্চুয়াল বক্তৃতা দিয়েছেন তিনি।
বেলারুশের কয়েক বিলিয়ন ডলার ক্ষতি
ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সরাসরি সাহায্য করছে বেলারুশ। যে কারণে, রাশিয়ার মতো বেলারুশের উপরেও একাধিক নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে ইউরোপ এবং অ্যামেরিকা। তারই জেরে বেলারুশের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রতি বছর ১৬ থেকে ১৮ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি করে বেলারুশ। দেশের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভর করে এই রপ্তানির উপর। এবছর তার কিছুই করা যায়নি। কারণ, নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে কেউ বেলারুশের জিনিস আমদানি করতে চাইছে না।
অ্যামেরিকা এবং ইউরোপ যুদ্ধ শুরুর পর বেলারুশের কাছ থেকে কোনো জিনিস কেনেনি। বস্তুত, দেশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই টালমাটাল চলছে বেলারুশে। ইউরোপ এবং অ্যামেরিকা লুকাশেঙ্কোর বিরোধী শিবিরকেই সমর্থন করছে। লুকাশেঙ্কোর সরকার বৈধভাবে সরকার গঠন করেনি বলে বিরোধীদের যে অভিযোগ, ইউরোপ এবং অ্যামেরিকা তা সমর্থন করে। ফলে আগেই বেলারুশের উপর কিছু নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা হয়েছিল। তবে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর নিষেধাজ্ঞা অনেক কড়া হয়।
খারকিভে গ্যাস সরবরাহ শুরু
রাশিয়ার হামলার ফলে খারকিভের দুইটি গ্যাস স্টেশন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ফলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। রোববার থেকে ফের ওই দুইটি গ্যাস স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। ইউক্রেনের প্রশাসন জানিয়েছে, দুইটি গ্যাস স্টেশনেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করা হয়েছে। এর ফলে তিন হাজার মানুষ ফের গ্যাস পেতে শুরু করেছেন।
ব্লাসেলসে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টে পৌঁছেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের একাধিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সেখানে তার বৈঠক হওয়ার কথা। ইইউ সূত্র জানিয়েছে, যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফে ইউক্রেনকে আরো ৫০০ মিলিয়ন ইউরো সাহায্য দেওয়া হতে পারে।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবকের সঙ্গেও কুলেবার বৈঠক হতে পারে। সেখানে আরো সামরিক অস্ত্রের প্রয়োজনের কথা জানাতে পারেন কুলেবা।
সুইডেনের অবস্থান
সুইডেনের সরকারি দল সোস্যাল ডেমোক্র্যাট নেতারা ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন। সম্প্রতি সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার জন্য দেশের ভিতর আলোচনা শুরু করেছিল। ফিনল্যান্ডের পার্লামেন্ট ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছে। সুইডেনেও বিষয়টি পার্লামেন্টের আলোচনায় উঠবে। তার আগে শাসক দলের সদস্যরা ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধের কারণেই পূর্ব ইউরোপের দেশগুলি রাতারাতি ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।