মাথা খাটাতে কে না পছন্দ করে! আর গল্পোচ্ছলে মজার বুদ্ধির ব্যায়াম হলে তো কথাই নেই। এরকমই একটি বই অঙ্কের খেলা। এটি রুশ গণিতবিদ ইয়াকভ পেরেলমানের নামকরা বই ফিগারস ফর ফান: স্টোরিজ, পাজলস অ্যান্ড কোনান্ড্রামস-এর বাংলা অনুবাদ। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের (বর্তমান রাশিয়া) প্রগতি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছিল বিমলেন্দু সেনগুপ্তের অনুবাদে। সম্পাদক ছিলেন নিসর্গবিদ দ্বিজেন শর্মা। অঙ্কের মজার সব হেঁয়ালি, বুদ্ধির খেলাসহ মাথা খাটানোর মতো দারুণ সব ধাঁধা নিয়ে বইটি।
পাঠকদের কাছে বইটা খুব কাজের হয়েছে বলেই আশা করছি আমি। আরও আশা করছি যে, বইটা শুধু আনন্দই দেয়নি, বুদ্ধি আর উদ্ভাবনী শক্তি বাড়াতে, জ্ঞানকে আরও ভালভাবে ব্যবহার করতেও সাহায্য করেছে। বইটা পড়ে নিশ্চয়ই বুদ্ধিটা একটু বাজিয়ে নিতে চাইবে তোমরা। তোমাদের ইচ্ছা পুরণ করতে এই পরিচ্ছেদে নানা রকমের কিছু ধাঁধা দেওয়া হলো।
মুরগি আর পাতিহাঁসের ডিম
ঝুড়িগুলোতে মুরগি আর পাতিহাঁসের ডিম আছে। কয়েকটায় মুরগির ডিম আর কয়েকটায় আছে পাতিহাঁসের ডিম। কোন ঝুড়িতে কয়টা ডিম আছে, তা ঝুড়ির গায়ে লেখা আছে। ৫, ৬, ১২, ১৪, ২৩ ও ২৯টি ডিম আছে। ব্যাপারী বলল, ‘যদি আমি এই ঝুড়িটা বিক্রি করি, তাহলে পাতিহাঁসের ডিম যা পড়ে থাকবে, মুরগির ডিম থাকবে তার চেয়ে দ্বিগুণ।
আকাশভ্রমণ
ক থেকে খ-তে পৌঁছতে একটা উড়োজাহাজের লাগে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট, আর ফিরে আসতে লাগে মাত্র ৮০ মিনিট। এটাকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবে?
উপহারের টাকা
দুই ছেলেকে তাদের প্রত্যেকের বাবা কিছু টাকা দিয়েছিলেন। একজন তাঁর ছেলেকে দিলেন ১৫০ রুবল, অন্যজন দিলেন ১০০ রুবল। ছেলেরা তাদের টাকা গুনে দেখল, একত্রে মিলিয়ে ওদের টাকা বেড়েছে মাত্র ১৫০ রুবল। এটা কীভাবে হলো?
দুটো ড্রাফটের ঘুঁটি
দুটো বিভিন্ন রঙের ঘুঁটিকে ছকের ৬৪টি ঘরের যেকোন জায়গায় রাখ। কতভাবে তাদের রাখা যেতে পারে বল তো?
সমাধান
১. ডিমের ব্যাপারী ২৯টা ডিমওয়ালা ঝুড়িটার কথাই ভেবেছিল। ২৩, ১২ আর ৫ লেখা ঝুড়িতে ছিল মুরগির ডিম, আর ১৪ আর ৬ লেখা ঝুড়িতে ছিল হাঁসের ডিম।
উত্তরটা মিলিয়ে দেখা যাক। বিক্রির পর থাকবে ২৩ + ১২ + ৫ = ৪০টা মুরগির ডিম আর ১৪ + ৬ = ২০টা হাঁসের ডিম।
তাহলে ধাঁধা অনুযায়ী হাঁসের ডিমের চেয়ে মুরগির ডিম থাকবে দ্বিগুণ।
২. এখানে বুঝিয়ে বলার মতো কিছুই নেই। উড়োজাহাজটা উড়ে যায়, আবার সেটা ফিরে আসে একই সময়ে। কারণ, ৮০ মিনিট আর ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট একই জিনিস। ধাঁধাটা আসলে অন্যমনস্ক পাঠকের জন্য দেওয়া হয়েছে। সে হয়তো ভাবতে পারে যে ৮০ মিনিট আর ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটে কিছু তফাত আছে।
৩. এটায় চালাকি হলো, এর মধ্যে একজন বাবা, অন্যজন বাবার ছেলে। ধাঁধাটায় আছে ৪ জন নয়, মাত্র তিনজন। দাদা, বাবা আর ছেলে। দাদা তাঁর ছেলেকে দিলেন ১৫০ রুবল, সে আবার নাতিকে তা থেকে দিল ১০০ রুবল (অর্থাৎ তার ছেলেকে)। তাহলে তার নিজের টাকা থাকল মাত্র ৫০ রুবল।
৪. একটা ঘুঁটিকে ৬৪টা ঘরের যেকোনটাতেই রাখা যেতে পারে। অর্থাৎ এটাকে রাখার ৬৪টা উপায় আছে। এটা যখন রাখা হয়ে গেল তখন দ্বিতীয়টাকে রাখার মতো আর আছে মাত্র ৬৩টা ঘর। তার মানে হলো, প্রথম ঘুঁটির ৬৪টা অবস্থার যেকোনটার সঙ্গে দ্বিতীয় ঘুঁটিটার ৬৩টা অবস্থা যোগ করা যেতে পারে। তাহলেই ড্রাফটের ছকে দুটি ঘুঁটি রাখার মতো ৬৪ × ৬৩ = ৪,০৩২টা বিভিন্ন অবস্থা হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।