আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একুশ শতকের এই আধুনিক বিশ্বের গতি থামিয়ে দিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস। বন্যপ্রাণী বাদুড়ের সংস্পর্শে এই ভাইরাস মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঠিক একই ভাবে বন্যপ্রাণীর সংস্পর্শে ১৯১১ সালে উত্তর-পূর্ব চীন জুড়ে আরেকটি ভাইরাস মহামারি রূপ নিয়েছিল যা গ্রেট মাঞ্চুরিয়ান প্লেগ নামে পরিচিত।
জানা গেছে, ১৯১০ সালে যে গ্রেট মাঞ্চুরিয়ান প্লেগ ছড়িয়ে পড়েছিল তা বেশ ভয়াবহ ছিল। ১৯১০ সাল থেকে এই মহামারি শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৬৩ হাজার মানুষের। এই মহামারিতে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো বেশ উদ্বেগজনক ছিল- প্রথমে জ্বর এবং পরে কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া (হেমোপটাইসিস)।
বর্তমানে চীনের হিলংজিয়াং প্রদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর হারবিন ওই সময় মাঞ্চুরিয়া নামে পরিচিত ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্ববর্তী সময়ে চীন, রাশিয়া ও জাপানিদের কাছে এই অঞ্চলটির গুরুত্ব বেশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। এই অঞ্চলটির বেশিরভাগ অংশই চীনাশাসিত ছিল। তবে ডালিয়ান বন্দর নগর ছিল জাপানের নিয়ন্ত্রণে এবং কাছাকাছি মাঞ্চুরিয়ার রেলপথসংলগ্ন বন্দর অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছিল রাশিয়া। ওই সময় হারবিন শহরকে একটি আন্তর্জাতিক শহরে মতো বিবেচনা করা হতো। কারণ এটি ছিল বহু রাশিয়ানদের আবাসস্থল। মূলত যারা চীন ইস্টার্ন রেলওয়ে (সিইআর) কাজ করেছিলেন তারা এখানে বসবাস করতেন।
একইসঙ্গে বিশ্বের বৃহত্তম ট্রান্স সাইবেরিয়ান রেললাইনের সঙ্গে চীনা ইস্টার্ন রেলওয়ে ও জাপান নিয়ন্ত্রিত ডালিয়ান বন্দর নগরের যোগাযোগ থাকায় এই শহরটি জাপানি, আমেরিকান এবং ইউরোপীয়ানদের নিকট ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য এক চারণভূমিতে পরিণত হয়।
তৎকালীন সময়ে ইউরোপ ও আমেরিকা ও জাপানের ব্যবসায়ীদের মধ্যে টারবাগান মারমোট নামে এক ধরনের কাঠবিড়ালি পশমের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকে। আর এই প্রাণিটির আবাসস্থল ছিল মঙ্গোলিয়া এবং পার্শ্ববর্তী মাঞ্চুরিয়ার তৃণভূমি এবং স্তেপ অঞ্চল। স্থানীয় শিকারিরা এই প্রাণীগুলো শিকার করে পশম সংগ্রহ করতো। এই প্রাণীর সংস্পর্শই ছিল গ্রেট মাঞ্চুরিয়া মহামারির কারণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



