আজকাল ঘরে ঘরে সবার দেখা যাচ্ছে সর্দি-কাশি, ফুসফুসে সংক্রমণ আর শ্বাসকষ্ট। চিকিৎসকের পরামর্শ মতে সঠিক ওষুধপত্র গ্রহণের পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে দারুণ পথ্য হতে পারে লাল টুকটুকে চুকাই রোজেলার চা, আচার, চাটনি বা জ্যাম জেলি।
গরম ভাতের সঙ্গে শুকনা মরিচ ও রসুনে ভাজা চুকাই বা মেস্তার শাক অত্যন্ত উপাদেয়। এ ছাড়া এর ফুলের লাল পাপড়িগুলো ছাড়িয়ে নিয়ে তা যুগ যুগ ধরে রান্নায় ব্যবহার করা হয় গ্রামবাংলায়। ছোট মাছের চচ্চড়ি, ভর্তা, খাট্টা, ডাল, চাটনি—সবকিছুতেই টক স্বাদের চুকাই বা মেস্তা এক অনন্য মুখরোচক স্বাদ নিয়ে আসে।
দেখতে অদ্ভুত মনোহর এই লাল টুকটুকে চুকাই ফুলের রসালো পাপড়িগুলোর রূপ ও গুণ দুই-ই উল্লেখ করার মতো। এতে আছে গসিপেক্টাইন, হাইবিসিসটাইন ও সাবডারেটিন নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা কিনা আজকালকার বহুল প্রচলিত বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত ও জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড খাদ্যে থাকা খুবই ক্ষতিকর ফ্রি-র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এতে কমলালেবুর তুলনায় প্রায় ৯ গুণ এবং পেয়ারার তুলনায় প্রায় আড়াই গুণ বেশি ভিটামিন সি আছে। এ ছাড়া চুকাই বা মেস্তায় পাওয়া যায় ভিটামিন বিওয়ান, বিটু, বিসিক্স, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, প্রোটিন ইত্যাদি।চুকাই বা মেস্তা একাধারে অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণসম্পন্ন।
এই চুকাই ফুলের লাল রঙের পাপড়ি শুকিয়ে গরম পানিতে ভিজিয়ে চা বা পানীয় বানালে তার রূপ, স্বাদ, গন্ধা—সবকিছুই হয় অনন্য, যা বেশির ভাগ ঔষধি পানীয়ের সঙ্গে তুলনা করলে খুবই ব্যতিক্রমধর্মী। স্বাদ বাড়ানোর জন্য এতে সামান্য মধু, গোলমরিচের গুঁড়া, ভাজা জিরার গুঁড়া বা বিট লবণও দেওয়া যায়। এই পানীয় ঠান্ডা বা গরম যেভাবে ইচ্ছা, দিনে যতবার ইচ্ছা পান করা যায়।
শুধু গ্যাস্ট্রিক-আলসারের রোগীদের এই অম্ল স্বাদযুক্ত চা সেবনের বেলায় একটু সাবধান হওয়া উচিত। হাড়ের ক্ষয়রোগ, হাড়ের গিঁটে বাত, মূত্রজনিত বা মূত্রনালির সমস্যা, মুখের ঘা ইত্যাদি রোগেও চুকাইয়ের চা পান করে অনেক সুফল পাওয়া যায়। চুকাই ফুলের পাপড়ি শুকিয়ে তা দিয়ে প্রস্তুত করা চা পুরো বিশ্বে উচ্চ রক্তচাপ, রক্তের তারল্যসংকট, হৃদ্রোগ, রক্তের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিসের মতো প্রাণঘাতী রোগের চিকিৎসায় সমাদৃত।
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel