জুমবাংলা ডেস্ক : চোখের চিকিৎসার জন্য প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আনল অপটিকস ও অপটোইলেক্ট্রনিক্স টেকনোলজিতে শীর্ষ স্থানীয় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান জায়েস। ভিজ্যুম্যাক্স ৮০০ এবং কোয়াটেরা ৭০০ নামের এ প্রযুক্তি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তি রোগীদের উন্নত সেবা প্রদানে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবীদের সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করবে।
এ উপলক্ষে শুক্রবার (২ জুন) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জায়েস ও বাংলাদেশ আই হসপিটাল যৌথভাবে ‘অপথালমিক কনক্লেভ ২০২৩’ নামের এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আই হসপিটালের চেয়ারম্যান ডা. মাহবুবুর রহমান চৌধুরীসহ নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, প্রখ্যাত সার্জনগণ এবং বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত অন্যান্য পেশাজীবীরা।
ভিজ্যুম্যাক্স ৮০০ একটি যুগান্তকারী ফেমটোসেকেন্ড লেজার প্ল্যাটফর্ম, যা চোখের বিভিন্ন চিকিৎসা নির্ভুল ও নিরাপদ প্রক্রিয়ায় সম্পাদন করতে সহায়তা করে।
এর উন্নত প্রযুক্তি ও কার্যকর ডিজাইনের ফলে সার্জনরা আরো নির্ভরযোগ্যতার সঙ্গে স্বল্প সময়ে ল্যাসিক এবং স্মাইলের মতো কর্নিয়াল রিফ্র্যাক্টিভ সার্জারি সম্পন্ন করতে পারবেন। অভিনব এই ডিভাইসটি রোগীদের স্বাচ্ছন্দ্য, দ্রুত আরোগ্য লাভ ও দৃষ্টির স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে। বাংলাদেশে চোখের চিকিৎসার অগ্রগতিতে জায়েসের ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নকে এই উদ্যোগ বেগবান করবে।
ভিজ্যুম্যাক্স ৮০০ এর সঙ্গে রয়েছে সার্জিক্যাল মাইক্রোস্কোপ কোয়াটেরা ৭০০, যা অনন্য কার্যকরিতা ও মানসম্মত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আধুনিক সার্জারির বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা মেটাতে সহায়তা করে।
মাইক্রোস্কোপটি মানসম্পন্ন ইমেজ দেওয়ার পাশাপাশি ডেপথ পারসেপশন বৃদ্ধি ও উন্নত ভিজ্যুয়ালাইজেশন দিতে সক্ষম। চোখের ছানি অপারেশনের ক্ষেত্রে এটি একটি বিশেষ মাইলফলক। এতে রয়েছে জায়েসের পেটেন্ট করা কোয়াট্রো পাম্প, যা আইওপি ও ফ্লোয়ের ওপর নির্ভর না করেই চেম্বার স্ট্যাবিলিটি বজায় রাখতে পারে। এর ডিজিটালি ইন্টিগ্রেটেড সার্জিক্যাল ওয়ার্কফ্লো অন্যান্য ডিভাইস থেকে ডেটা নিয়ে জায়েসের ক্যাটার্যাক্ট ওয়ার্কফ্লো-এর সঙ্গে সমন্বয় করে।
এই প্রক্রিয়ার ফলে জায়েস কোয়াটেরা ৭০০ ছানি অপারেশনের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের জন্য সিঙ্গেল স্টেরাইল ককপিট হিসেবে কাজ করে।
ফ্যাকো সার্জারিতে এর ফলে পাওয়া যায় সম্পূর্ণ নতুন এক অভিজ্ঞতা। এর বিশেষ ডিজাইন সার্জিক্যাল ওয়ার্কফ্লোকে আরো বেশি কার্যকর করে তোলে। এমনকি জটিল সমস্যাতেও এটি উপযোগী রোগীদের ক্ষেত্রে ভালো ফলাফল নিশ্চিত করতে পারে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, আশা করি জায়েস বাংলাদেশে উন্নত সেবা প্রদান করবে। এ ক্ষেত্রে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে। তবে চিকিৎসা সরঞ্জামাদি আনার পাশাপাশি তাদেরকে এখানে গবেষণা ও প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে কার্ল জায়েস ইন্ডিয়া (ব্যাঙ্গালোর) প্রাইভেট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মিগুয়েল গঞ্জালেজ ডিয়াজ বলেন, “জায়েস গ্রুপের জন্য বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রাণবন্ত এই দেশে আমাদের উপস্থিতি এবং অংশীদারিত্ব জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বহুমুখী স্বাস্থ্যসেবা ও মেধাবী চিকিৎসকদের কারণে বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি ও অংশীদারিত্বের অনেক সুযোগ রয়েছে। রোগীদের চিকিৎসার উন্নতি করতে এবং এই খাতে উদ্ভাবনী সেবা নিয়ে আসার ব্যাপারে আমরা স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখি। অত্যাধুনিক মেডিকেল ডিভাইসগুলি বাংলাদেশে নিয়ে আসার মাধ্যমে আমরা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদেরকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি সেবার মান উন্নত করতে ও এই অঞ্চলের সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবার অগ্রগতিতে অবদান রাখতে চাই। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতের অগ্রগতির যাত্রায় অংশ নিতে পেরে আমরা আনন্দিত।”
জায়েস গ্রুপের সার্ক অঞ্চলের রিজিওনাল হেড বিকাশ সাক্সেনা বলেন, “আমরা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা কমিউনিটিতে ভিজ্যুম্যাক্স ৮০০ এবং কোয়াটেরা ৭০০ নিয়ে আসতে পেরে আনন্দিত। উদ্ভাবন এবং উৎকর্ষের প্রতি জায়েস সবসময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নির্ভুল ও নিরাপদভাবে দৃষ্টির স্বচ্ছতা দিতে সক্ষম অত্যাধুনিক প্রযুক্তি প্রদানের মাধ্যমে আমরা স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত পেশাজীবীদের সহযোগিতা করে রোগীদের সেবার মান বৃদ্ধি করতে চাই বাংলাদেশে চোখের চিকিৎসা ও সার্জারির অগ্রগতিতে অবদান রাখতে পেরে এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় একটি ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা পালন করতে পেরে আমরা খুশি”
বাংলাদেশে ভিজ্যুম্যাক্স ৮০০ এবং কোয়াটেরা ৭০০-এর উন্মোচন এই অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবাকে এগিয়ে নিতে জায়েসের প্রতিশ্রুতির একটি প্রতিফলন। নেতৃত্বস্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে জায়েস স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার অগ্রগতিতে সহযোগিতা করতে চায়। এর মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসার উন্নতিতে অবদান রাখতে সচেষ্ট থাকবে প্রতিষ্ঠানটি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।