বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: ২০২২ সালের নভেম্বরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর চ্যাটজিপিটি প্রকাশ্যে আনে ওপেনএআই। এরপর থেকে জেনারেটিভ এআই খাতে বড় উদ্ভাবনের সন্ধান করছেন বিনিয়োগকারীরা। অনেকের মতে এটি প্রযুক্তি খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। আর তাই এখন প্রযুক্তি খাতের বিনিয়োগকারীদের মূল আকর্ষণের কেন্দ্র এটি। খবর ফ্রিমালয়েশিয়াটুডে।
কয়েক দশক ধরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হিসেবে জায়গা করে নিয়েেছ। তবে নভেম্বরে ওপেনএআই আসার পর সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক খোসলা ভেঞ্চারসের শেরনাজ ডাভের বলেন, ‘প্রতিনিয়ত আমাদের কাছে বিভিন্ন প্লাটফর্ম আসে, যেখানে নতুন কোম্পানিগুলোর বিস্ফোরণ ঘটে। ইন্টারনেট ও মোবাইলের ক্ষেত্রে এ বিষয় দেখেছি। এদিক থেকে পরবর্তী প্লাটফর্ম হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
জেনারেটিভ এআইয়ের অন্যতম উদাহরণ চ্যাটজিপিটি। ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত বিপুল তথ্যের ভিত্তিতে এর উত্তর দেয়ার সক্ষমতা তৈরি করা হয়েছে। ব্যবহারকারীর একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এটি মুহূর্তের মধ্যে একটি ছবি, কবিতা এমনকি কয়েক হাজার শব্দের রচনাও লিখে দিতে পারে।
নভেম্বরের শেষ দিকে অনেকটা নীরবেই প্রকাশ্যে আসে চ্যাটজিপিটি। এরপর থেকে অ্যাপ বা প্লাটফর্মটিতে ব্যবহারকারী বেড়েই চলছে। এর জনপ্রিয়তা দেখে মাইক্রোসফট ও গুগলের মতো প্রতিষ্ঠান নিজস্ব চ্যাটবট তৈরিতে উঠেপড়ে লেগেছে। মাইক্রোসফট মূলত ওপেনএআইতে বড় বিনিয়োগ করছে। এছাড়াও চ্যাটজিপিটিনির্ভর বিং সার্চের নতুন সংস্করণ চালু করেছে। অন্যদিকে গুগল বার্ড নামের চ্যাটবট চালু করে। তবে ভুল উত্তরের কারণে প্রতিষ্ঠানটি বড় ধরনের লোকসানে পড়ে। প্রযুক্তিবিদরা জানান, এসব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রকল্প এখনো সাধারণের ব্যবহারের জন্য উপযোগী নয়।
আরেকটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম সিগন্যালফায়ারের অংশীদার ওয়েন হু বলেন, ‘উন্মোচনের মাত্র পাঁচদিনের মধ্যে ১০ লাখ মানুষ চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করেছে। ফেসবুকের তুলনায় প্লাটফর্মটিতে ব্যবহারকারীর অংশগ্রহণ ৬০ গুণ বেশি।’ অর্থনৈতিক মন্দাসহ বিভিন্ন কারণে যখন বিশ্বের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যয় কমাচ্ছে ও ব্যাপক হারে কর্মী ছাঁটাই করছে তখনই জেনারেটিভ এআইয়ের এ বিষয়টি প্রকাশ্যে এল। ডাভের বলেন, ‘অন্য বিভাগগুলো মূল্যায়ন ও রাজস্ব বাড়াতে হিমশিম খেলেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর কোম্পানিগুলো এখনো সেভাবে প্রভাবিত হয়নি।’ হু বলেন, ‘জেনারেটিভ এআই কোম্পানিগুলোর বাজার মূল্য আকাশচুম্বী হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলো অন্যান্য বিষয়েও চুক্তি করেছে।’ তিনি বলেন, ‘চ্যাটজিপিটির নির্মাতা ওপেনএআইয়ের বাজারমূল্য ৩ হাজার কোটি ডলার।’
জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় যেসব উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান সিদ্ধহস্ত অর্থ সহায়তার জন্য বা পরিষেবা সম্পর্কে জানাতে তাদের আর কারো মনোযোগ আকর্ষণ করতে হয় না। সিক এআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা সারাহ ন্যাগি বলেন, ‘এটি আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে। চ্যাটজিপিটি আসার আগে সবাইকে জেনারেটিভ এআই কি এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ সে সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা দিতে হতো।’
চ্যাটজিপিটি যে ধরনের কাজ সম্পাদনে সক্ষম সে সম্পর্কে জানার পর ব্যক্তি থেকে প্রতিষ্ঠান সব দিকেই এর চাহিদা বাড়ছে। ন্যাগি বলেন, ‘গ্রাহকদের দিক থেকেও চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। অনেক সময় হিমশিম খেতে হয়। চ্যাটজিপিটি প্রকাশ্যে আসার পর কয়েক সপ্তাহ মাইক্রোসফট, গুগল, আলিবাবার মতো প্রতিষ্ঠান আলোচনায় িছল। তবে এদের বাইরে অনেক স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানও কাজ করছে। সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক কগনিটস বিনিয়োগ করেছে বলে জানা গেছে। সাধারণ ভেঞ্চার ক্যাপিটালের পাশাপাশি প্রযুক্তি জায়ান্টরাও তাদের কার্যক্রম ও পরিধি বাড়াতে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে নতুন প্রতিষ্ঠান অ্যান্থ্রোপিক ও এর চ্যাটবট ক্লডের ১০ শতাংশ অধিগ্রহণে ৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে গুগল। হু বলেন, ‘চ্যাটজিপিটি গোল্ড রাশ’ অভূতপূর্ব হতে পারে। এছাড়া জেনারেটিভ এআইয়ের পরিধি আরো বাড়তে পারে।
মাসে যত টাকার বিনিময়ে ফেসবুক পেজ-অ্যাকাউন্ট ভেরিফায়েড হবে, ঘোষণা জুকারবার্গের
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।