জুমবাংলা ডেস্ক : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কলা ও মানববিদ্যা ভবনের ৩১৮ নম্বর কক্ষ। এই কক্ষের প্রথম সারির বেঞ্চে নিয়মিত ক্লাস করতেন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন। দীর্ঘ তিন মাস পর আজ আবার চবিতে ক্লাস শুরু হয়েছে। সেখানে ফরহাদের দুটি কোর্সের ক্লাস হয়েছে। তবে নিয়মিত এই শিক্ষার্থী আজ উপস্থিত ছিলেন না। শুধু আজ নয়, আর কখনই ক্লাসে সশরীরে উপস্থিত হবেন না ফরহাদ। তবে ছবি হয়ে আর বন্ধুদের স্মৃতিতে ক্লাসে ফিরলেন ফরহাদ। একই চিত্র দেখা গেছে ফরহাদের অগ্রজ হৃদয় তরুয়ার ক্লাসেও।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে চট্টগ্রাম নগরে গুলিবিদ্ধ হন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় তরুয়া। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ জুলাই তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে ৪ আগস্ট সরকার পতনের আন্দোলনে নিহত হন একই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ফরহাদ হোসেন। হৃদয় ওই বিভাগের তৃতীয় আর ফরহাদ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় নতুনভাবে চালু হওয়ার পর এই দুই শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতি বিশেষভাবে অনুভব করছেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
শহীদ হৃদয় তরুয়ার বন্ধু সোহেল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সবাই ক্লাস শুরু করেছি, কিন্ত আমাদের বন্ধু তরুয়া আর কখনও ক্লাসে ফিরবে না। আজ বেঁচে থাকলে সেও হয়তো আগের মতো হাসি মুখ নিয়ে ক্লাসে ফিরতো। তরুয়া আমাদের গর্ব। ও আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে। আজ ছবি ও ফুল হয়ে আমাদের সাথে ছিল ও। ওর স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখতে পদক্ষেপ নেবো।’
শহীদ ফরহাদ হোসেনের বন্ধু হাসিবুল হাসান বাবু বলেন,‘ফরহাদ নিয়মিত প্রথম সারির বেঞ্চে ক্লাস করতো। সবসময় পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। কখনও তেমন কোনো কারণ ছাড়া ক্লাসে অনুপস্থিত থাকতো না। অথচ আজ থেকে সে চির অনুপস্থিত। তবুও সে আমাদের মাঝে থাকবে। ফরহাদের স্মরণে আজ তার ছবি সামনের বেঞ্চে রেখে আমরা ক্লাস করেছি। এভাবেই বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা শহীদ ফরহাদ ও শহীদ তরুয়া ভাইকে বাঁচিয়ে রাখবো।’
ইতিহাস বিভাগের সভাপতি শামীমা হায়দার বলেন, ‘হৃদয় ও ফরহাদকে সারাজীবন মনে রাখবে ইতিহাস বিভাগ। তাদের স্মরণে নবীন বরণ অনুষ্ঠানে ভিডিও তথ্যচিত্র দেখানো হয়েছে। নতুন সিলেবাসেও এই দুজন শহীদকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
৬ অক্টোবর দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকার পর ক্লাস শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষক আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে গণ-অভ্যুত্থান উত্তাল এই সময়গুলোতে ক্যাম্পাস বন্ধ ছিল। দীর্ঘদিন পর ক্যাম্পাসে ফিরে উচ্ছ্বসিত ছিলেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। আলাদাভাবে ৪৮টি বিভাগ ও ৬টি ইনস্টিটিউটের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে বিভিন্ন বর্ষের ক্লাস ও পরীক্ষার কার্যক্রমও শুরু হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।