জুমবাংলা ডেস্ক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শেখ রাসেল স্কুলের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ৩০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে স্কুলের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হয় বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু এই চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ করেন নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিকদার কনস্ট্রাকশন।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৩০ জুলাই ১০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে জুবেরি ভবন মাঠের ১.৩ একর জায়গাজুড়ে শেখ রাসেল স্কুলের চারতলা নতুন ভবন নির্মাণের এই কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিকদার কনস্ট্রাকশন।
শিকদার কনস্ট্রাকশনের অভিযোগ, নির্মাণ কাজ গত ৩০ জুলাই শুরুর কয়েকদিন পর থেকেই চাঁদা দাবি করে আসছিলেন ছাত্রলীগের নেতারা। আগস্ট মাসের প্রথম দিকে ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটির সুপারভাইজার মমতাজ উদ্দিন ডনের কাছে এই চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু সুপারভাইজার মমতাজ উদ্দিন ডন চাঁদা দিতে রাজি হননি।
সুপারভাইজার ডন জানান, সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু এসে প্রশ্ন করেন তাদের না জানিয়ে, তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে আমি কেন কাজ শুরু করেছি। একপর্যায়ে তারা আমার কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তবে আমি প্রথম থেকেই তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভাইয়ের নামে এমন একটি প্রতিষ্ঠানের কাজেও আপনারা চাঁদা দাবি করতে পারেন না, বলেও তাদের জানিয়েছি। পরে চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধের হুমকি দিয়ে চলে যান তারা। তারপরও আমরা কাজ বন্ধ না করায়, তারা বিভিন্ন উপায়ে কনস্ট্রাকশন সাইটে এসে কাজ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে গেছেন।
সুপারভাইজার ডন জানান, সর্বশেষ রোববার দুপুর ২টার দিকে কনস্ট্রাকশন কাজের ম্যানেজার আশরাফুল আলমকে ডেকে নিয়ে গিয়ে চাঁদা না দেয়া অবধি কাজ বন্ধ রাখার হুমকি দেয় রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুরঞ্জিত প্রাসাদ বৃত্তসহ আরও একজন নেতা।
ম্যানেজার আশরাফুল আলম বলেন, দুপুর ২টার দিকে ছাত্রলীগের দু’জন নেতা এসে আমাকে কাজ বন্ধ করতে বলেন। আমি কাজ বন্ধ না করায়, আমাকে গালাগালি করে এবং একই সঙ্গে কাজের মালামাল সরবরাহকারী আবু বক্করকে মারতেও উদ্যত হন।
তিনি বলেন, পরবর্তীকালে তারা আমাকে তুলে নিয়ে যায়। সেখানে আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়, ৩০ টাকা লাখ দিতে না পারলে কী পরিমাণ টাকা দিতে পারব। এ বিষয়ে সমাধান না হওয়া অবধি যেন আমরা কাজ বন্ধ রাখি, সে হুমকিও দেয়া হয় আমাকে।
এ দিকে শেখ রাসেল স্কুলের নির্মাণ কাজ বন্ধের খবর পেয়ে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সাংবাদিক।
সরেজমিন দেখা যায়, ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে নির্মাণ শ্রমিকরা বসে রয়েছেন।
সেখানে নির্মাণ শ্রমিকদের প্রধান মিস্ত্রি শফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের দু’জন নেতা এসে আমাদের ম্যানেজারকে হুমকি দিয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন থেকে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছেন। কিন্তু চাঁদা না দেয়ায় তারা আজ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমরা কনস্ট্রাকশন সাইটের কোনো কাজের সঙ্গেই সম্পৃক্ত না। ছাত্রলীগের মর্যাদা নষ্ট করার জন্যই এই ষড়যন্ত্র করা হয়ে থাকতে পারে।
সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয়। আর ছাত্রলীগ নেতা বৃত্তর কথা বলা হচ্ছে। আমি কথা বলেছি তার সঙ্গে। সে এ ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানে না বলে জানিয়েছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, রোববার বিকালে কনস্ট্রাকশনে একটি ঝামেলার কথা শুনেছি। তবে চাঁদাবাজি কিনা এখনও জানি না। সূত্র : যুগান্তর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।