রিয়াজুল হক : বিভিন্ন কারণে আমাদের হাতে ছেঁড়া-ফাটা নোট চলে আসে। অনেকেই দুশ্চিন্তায় পড়ে যান, টাকা চলবে কিনা? আমরা হয়তো অনেকেই জানি না একটা নোট কতটুকু ছেঁড়া-ফাটা থাকলে তার মূল্যমানে কোন সমস্যা হয় না।
বাংলাদেশ ব্যাংক (নোট রিফান্ড) রেগুলেসন্স এ্যাক্ট-২০১২ এর আলোকে ছেঁড়া-ফাটা নোট ব্যাংক শাখায় গ্রহণ এবং উহার বিনিময় মূল্য প্রদান প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৪-০১-২০১৩ তারিখ একটি পরিপত্র জারি করে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তা মূলত দুইটি বিষয় নিশ্চিত হয়ে অল্প ছেঁড়া-ফাটা ও ময়লা নোটের বিপরীতে সম্পূর্ণ বিনিময় মূল্য প্রদান করে থাকবেন।
(ক) উপস্থাপিত নোটটিতে সম্পূর্ণ নোটের ৯০% এর বেশি অংশ বিদ্যমান থাকবে এবং আসল নোট হিসেবে শনাক্ত হতে হবে।
(খ) উপস্থাপিত নোট একাধিক খণ্ডে খণ্ডিত নয় এবং খণ্ড দুইটি একই নোটের অংশ হতে হবে।
খণ্ডিত নোটের ক্ষেত্রে নোটের এক দিকে হালকা সরু কাগজ দিয়ে এমনভাবে জোড়া লাগাতে হবে, যেন আসল নোট সহজেই বোঝা যায়। দুই খণ্ডে বিচ্ছিন্ন হয়নি, কিন্তু সামান্য নাড়াচাড়ায় নোটটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে এমন জীর্ণ নোটের ক্ষেত্রেও এক পিঠে হালকা সরু কাগজ লাগাতে হবে, যেন নোটটি পরীক্ষা করতে কোন অসুবিধা না হয়।
অনেক সময় নোটের অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে থাকে, অর্থাৎ অত্যধিক জীর্ণ, আগুনে পোড়া, ড্যাম্প বা সম্পূর্ণ নোটের ৯০ ভাগ বা তার চেয়ে কম থাকলে, নোট গ্রহণের সাথে সাথে তার মূল্য প্রদান করা হয়না। এক্ষেত্রে, নোটের মূল্যমান, সিরিজ নম্বর, জমাদানকারীর নাম ও পূর্ণ ঠিকানা সম্বলিত আবেদন পত্রের সঙ্গে ব্যাংক নোটটি গ্রহণ করবে। জমাদানকারীর আবেদনপত্রসহ গৃহীত নোট শাখার ফরওয়াডিং পত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারিকৃত পরিপত্রের বিধি মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকটস্থ শাখায় নোটটি প্রেরণ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নোটটি পাবার আট সপ্তাহের মধ্যে নোট রিফান্ড রেগুলেশন্সের আওতায় নোটটির মূল্য প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে এবং মূল্য প্রদানযোগ্য হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের হিসাবে প্রদান করবে।
টাকায় কোন সমস্যা মনে হলে অবশ্যই নিকটস্থ যে কোন ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করা প্রয়োজন। অনেকেই অজ্ঞতাবশতঃ সামান্য ছেঁড়া-ফাটা বা ময়লা নোট চলবে কিনা, এই সন্দেহে কষ্টে উপার্জিত টাকা বিভিন্ন মধ্যস্বত্বভোগী দালালের নিকট কম মূল্যে বিক্রি করে দেয়। অথচ বিভিন্ন দুষ্টচক্র থেকে পরিত্রাণ পেতে একটু কষ্ট করে ব্যাংকে গেলে, বিনিময়মূল্য হিসেবে পুরো টাকা বা যথাযথ পরিমাণ টাকা ফেরত পেতে পারতো।
লেখক: যুগ্ম-পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।