জুমবাংলা ডেস্ক : ‘মনে খুবই দুঃখ রে বাপ। রাতে ঠান্ডায় না খেয়ে ঘুমাইছিনু। ছেলে ও ছেলের বউ আলাদা খায়। ছেলের বউ ভালো মন্দ রান্না করে খায়, তবু খাইতে ডাকে না। ছেলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন এলে কত ভালোবাসা তাদের জন্য। আমার মেয়ে বাড়িতে এলে কথাই বলে না।’
বলছিলেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের জুম্মাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মমেনা বেওয়া (৭০)। তিনি ওই এলাকার মৃত ইলিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী।
মমেনা বেওয়া বলেন, আমার খুব দুঃখ। ঠান্ডার দিন শীতের কাপড় নাই। ঠান্ডার কারণে রাতে রান্না করতে পারি নাই। না খেয়ে ছিলাম সারা রাত। পরে কেঁদে কেঁদে ঘুমাই পড়ছিলাম কখন জানি না। ছেলে কত কী বাজার করে নিয়ে এসে খায় বউকে নিয়ে, আমাকে দেয় না। প্রতি শুক্রবার ভিক্ষা করে এনে এক সপ্তাহ ধরে খাই। শেষ হলে আবার ভিক্ষা করতে যাই। এই শীতে মেম্বার-চেয়ারম্যান কেউ কিছু দেয় নাই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৫-৩০ বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন মমেনা বেওয়া। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। ভিক্ষা করে ছেলে-মেয়েকে মানুষ করেছেন। মেয়েকে বিয়েও দিয়েছেন। কিন্তু একমাত্র ছেলে কাশেম আলী মাকে দেখাশোনা করেন না। ফলে এই বয়সেও ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন মমেনা বেওয়া।
প্রতিবেশী এন্তাজুল হক বলেন, বৃদ্ধা মমেনা বেওয়ার এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। ছেলে কাশেম আলী সবজির ব্যবসা করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে আলাদা খান। আর মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছেলে দেখাশোনা না করায় এই বয়সে ভিক্ষা করেই কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছেন। ছেলে থাকতেও তাকে দেখার মতো কেউ নেই।
মমেনা বেওয়ার পুত্রবধূ শাহিনা বেগম বলেন, আমার শাশুড়ি ইচ্ছা করেই আলাদা খান। আমাদের সঙ্গে খাইলে নাকি তার পেট ভরে না। আমরা বার বার বলেছি ভিক্ষা করিয়েন না, আমার মেয়ে বড় হয়ে গেছে, তাকে বিয়ে দিতে হবে। ভিক্ষা করতে বাধা দেওয়ায় আমাদের সঙ্গে খান না। আমাদের কোনো কথাও মানেন না।
এদিকে, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. আব্দুল বাতেন সরকার বলেন, আগামী ১১ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় কুড়িগ্রামে আসছেন। এ উপলক্ষে রংপুর র্যাব-১৩ এর পক্ষ থেকে আমার ইউনিয়নের জন্য এক হাজার কম্বল দেওয়া হয়েছে। তালিকা করে তা বিতরণ করা হবে। সূত্র : ঢাকা পোস্ট।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।