বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : টুইটার বিশ্বের দ্বিতীয় বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মাইক্রোব্লগিংয়ের একটি ওয়েবসাইট। ২০০৬ সালের মার্চ মাসে টুইটারের যাত্রা শুরু হয়। তবে ২০০৬ এর জুলাই মাসে জ্যাক ডর্সি আনুষ্ঠানিকভাবে টুইটার-এর উদ্বোধন করেন। টুইটার সারা বিশ্ব জুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। টুইটারের মূল কার্যালয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিস্কো শহরে। এছাড়াও, টেক্সাসের সান অ্যান্টোনিও এবং ম্যাসাচুসেটসের বস্টনে টুইটারের সার্ভার ও শাখা কার্যালয় রয়েছে।
টুইটার সম্পর্কে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যা কিনা চমকে দেওয়ার মতো। টুইটারের লোগোতে যে টুইট পাখিটি রয়েছে তাকে ল্যারি বলা হয়। একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে, সিগারেট এবং অ্যালকোহলের চেয়ে টুইটার নাকি বেশি আসক্তিযুক্ত। আমেরিকার ইন্টেলিজেন্ট এজেন্সি সিআইএ একদিনে পাঁচ মিলিয়ন পর্যন্ত টুইট পড়ে থাকে। প্রতি মিনিটে প্রায় ৩৫০,০০০টি টুইট পাঠানো হয়। একদিনের সকল টুইটগুলো যদি আপনি কোন বইয়ের মধ্যে পাবলিশ করতে চান তাহলে সেই বইয়ের মোট পৃষ্ঠার সংখ্যা হবে প্রায় ১০ কোটি। টুইটারে বর্তমানে প্রতি সেকেন্ডে ৬০০০ টুইট হয়, আর প্রতিদিন প্রায় ৫০০ মিলিয়ন।
গ্লোবাল ব্যবহারকারীর দিকে থেকে টুইটার সোশ্যাল মিডিয়ার জায়গা অনেক নিচে। যেখানে ফেসবুকের একটিভ ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২.৯ বিলিয়ন সেখানে টুইটার-এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা মাত্র ৪৩৬ মিলিয়ন। তবে বাংলাদেশের মানুষ টুইটার বেশি ব্যবহার না করলেও ইউরোপে ও আমেরিকাতে এমনকি পাশের দেশ ভারতেও টুইটার-এর ব্যবহারকারী অনেক বেশি।
লাভ-লোকসান ছাড়াও ব্যবহারকারীদের নিজের দিকে টেনে আনার ক্ষেত্রেও ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম-সহ বহু সমাজমাধ্যমের থেকে পিছিয়ে টুইটার। চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে দৈনিক ২৩.৮ কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে এর। অথচ ফেসবুকের দাবি, তাদের সাইটে দৈনিক ১৯৮ কোটি লোকজনের যাতায়াত।
হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম মিলিয়ে মেটা-র ক্ষেত্রে তা দৈনিক ৩০০ কোটি ছাড়িয়ে যায়। পিন্টারেস্ট, স্ন্যাপচ্যাট বা টিকটকও নাকি মুনাফায় টুইটারের থেকে বহু যোজন এগিয়ে রয়েছে।
সাম্প্রতিক যে কারণে টুইটার আলোচনাতে এসেছে তার কারণ ইলন মাস্কের প্রায় ৪৪০০ কোটি ডলার দিয়ে টুইটার কিনে নেয়া। এ খবর আমরা প্রায় সবাই জানি। কিন্তু একটা কোম্পানি কিনে ফেলা কি এতই সহজ? শুধু টাকা থাকলেই কি যেকোনো কোম্পানি কিনে ফেলা যায়? উত্তর হল, না। তাহলে ইলন মাস্ক কিভাবে কিনল?
২০০৪ সালে ওডিও নামের একটা পডকাস্ট সার্ভিস কোম্পানি চালু হয় যার প্রতিষ্ঠাতা ছিল ইভান উইলিয়াম (যে কি না এক্স-গুগল কর্মকর্তা এবং বিখ্যাত ব্লগিং সাইট Bologger.com এর প্রতিষ্ঠাতা) তার সাথে যোগ দেয় তার আরেক এক কলিগ বিজ স্টোন ও আমেরিকান উদ্যোক্তা নোয়া গ্লাস। কিন্তু ২০০৫ সালে অ্যাপল তাদের আইটিউন প্লাটফর্মে পডকাস্ট এড করার ঘোষণা দেয়ার পর ওডিও-এর প্রতিষ্ঠাতারা চিন্তায় পরে যায় কারণ তারা জানত তাদের পক্ষে অ্যাপল-এর সাথে প্রতিযোগিতা করা সম্ভব না।
তাই তারা একটি সাইট প্রজেক্ট শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা তাদের কর্মকর্তাদের নতুন আইডিয়া নিয়ে ভাবতে বলে তখন ইঞ্জিনিয়ার জ্যাক ডরসি একটা সর্ট মেসেজিং সার্ভিস চালু করার প্রস্তাব দেয়। নোয়া গ্লাস এর নাম প্রস্তাব করে Twttr. ২০০৬ সালের জুন মাসে ডরসি প্রথম টুইট করে “just setting up my twttr”. ওই বছরের জুলাই মাসে পূর্ণ ভার্শন চালু হয়। কিন্তু ওডিও-এর ইনভেস্টররা এই সাইট প্রজেক্টকে খুব একটা ভালো চোখে নেয় নি। তাই ইভান উইলিয়াম ওডিও কোম্পানির সব শেয়ার কিনে নেয় এবং আশ্চর্যজনকভাবে নোয়া গ্লাসকে ফায়ার করে।
টুইটার লঞ্ছ এর ৬ মাস পর এর নামে ভাওয়েল এসে Twitter নামকরণ হয়। ২০০৭ সালে South By Southwest (@sxsw) Interactive conference চলাকালে প্রতিদিন ৬০,০০০ টুইট হত। সেখান থেকে Twitter এর যাত্রা কিছুটা তরান্বিত হয়। ওই বছরই ডরসি কোম্পানির প্রথম সিইও হিসেবে নিযুক্ত হন।
টুইটার-এর ব্যবহার মূলত বেড়ে যায় বিভিন্ন ব্রেকিং নিউজ প্রচারের মাধ্যমে। আর তা প্রচার করে সাধারণ মানুষ। কারণ টুইটার সংক্ষিপ্ত টেক্সটভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া হওয়ার কারণে এখানে যারা ঢুকে তাদের মধ্যে হেডলাইন পড়ার একটা ইচ্ছা থাকে তাই এখানে নিউজগুলো বেশি ভাইরাল হয়। যেমন ২০০৯ সালের আমেরিকার হাডসন নদীতে প্লেন ক্রেস-এর নিউজ একজন ফেরি পেসেঞ্জার ছবি তুলে টুইট পিক ডট কম যা কিনা টুইটারের ছবি শেয়ারিং সাইট সেখানে পাবলিশ করলে হাজার হাজার মানুষ সে ছবি দেখতে গেলে সারভার ক্রাশ করে।
২০০৮ সালের যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে বারাক ওবামার টুইটার ব্যবহারও এর জনপ্রিয়তা বাড়ায়। ওবামা (@BarackObama) এখনো টুইটারের সবচেয়ে বেশি ফলোয়ার নিয়ে এক নাম্বারে আছেন। তার ফলোয়ার সংখ্যা ১৩১ মিলিয়ন এরও বেশি। এরকম বিভিন্ন ইভেন্ট আছে যেখানে টুইটার একাই বাজিমাত করেছে।
কিন্তু এতো কিছুর পরেও ২০০৯ সাল পর্যন্ত Twitter-এর আয় ছিল “0”। ২০০৯ সালে এসে বিং ও গুগল এর সাথে ১০ ও ১৫ মিলিয়ন ডলার এর চুক্তি করে তাদের সার্চ ইঞ্জিনে টুইট যোগ করা হয়। অর্থাৎ এখন সার্চ দিলে টুইটার-এর টুইটও রেজাল্ট এ আসবে। তবে তা শুধু মোবাইল ফোনে। ডেস্কটপে এ ফিচার আসে ২০১৫ সালে।
এরপর ২০১০ সালে তারা প্রমোটেড টুইট নামে আরেকটা সার্ভিস চালু করে যেখানে টাকা দিয়ে কোন কোম্পানির বা ব্যাক্তির টুইট, একাউন্ট, হেস ট্যাগ অন্যের ফিডে দেখানো যাবে। কিছুটা ফেসবুক এড এর মতো। এই সার্ভিস দিয়ে তারা ২০১৫ সালে ৪০০ মিলিয়ন ডলার আয় করে। এরপর এই সিস্টেম উন্নত হতে থাকে, বর্তমানে টুইটার-এ ৫ ধরণের এড কেম্পাইন রান করা যায়। আর এড থেকে ২০২২ প্রথম কোয়ার্টারে টুইটার এর আয় প্রায় ১.১১ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে ২০১৩ সালে শেয়ার মার্কেটে আপিও লাঞ্চ করে পাবলিক কোম্পানি তে পরিণত হয় এবং ১.৮ বিলিয়ন ডলার তহবিলে নেয়। আর এর মার্কেট ভেল্যু দাঁড়ায় ৩১ বিলিয়ন ডলার। এরপর ২০২২ সাল পর্যন্ত টুইটারে অনেকগুলো ফিচার যুক্ত হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল Twitter Explore. আর ২০১৮ সালে টুইটার এ টুইট এর শব্দের সংখ্যা বাড়িয়ে ১৪০ থেকে ২৮০ করা হয়।
টুইটার-এর এই ঘুরে দাঁড়ানোর পরেও কিভাবে ইলন মাস্ক-এর মাঝে ঢুকে গেলেন তা জানতে হলে আমাদের টুইটার-এর সিইওদের ক্লেস নিয়ে একটু জানতে হবে। টুইটারে-এর প্রথম সিইও ডরসিকে প্রায় কোম্পানি থেকেই বের করে দিয়ে আবার সেই উইলিয়াম যে কিনা এর আগে নোয়া গ্লাসকে বের করে দেয় সে সিইও পদে বসে পরে। কিন্তু ডরসি বসে থাকার লোক না সে টুইটার এর ইনভেস্টর দের সাথে ভিতরে ভিতরে গোপন মিটিং করে ২০১০ সালে আবার সিইও পরিবর্তন করান।
এবার সিইও হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় ডিক কসটেলো যে কি না এর আগে সিইও পদে ছিল। ২০১৫ সালে ডরসি তাকে সরিয়ে আবার সিইও হিসেবে নিযুক্ত হন। আর সর্বশেষ ২০২১ সালে ডরসি আবার ইনভেস্টরদের চাপে সরে গেলে নতুন সিইও হন আরেক ইঞ্জিনিয়ার পরাগ আগারওয়াল।
ওয়ার্ল্ড স্ট্রিট নিউজ-এর এক রিপোর্ট অনুযায়ী ডরসিই নাকি ইলন মাস্ককে উৎসাহিত করে টুইটার কেনার জন্য। আর কেনার পর এক টুইটে সে সাপোর্ট ও করে। ২৬ এপ্রিল সে এই টুইট করে। আর ইলন মাস্কের ৫৪.২ ডলার দিয়ে শেয়ার কিনে নেয়াতে ডরসি পাবে ৯৭৮ মিলিয়ন ডলার কারণ তার কাছে টুইটারের ২.৪% শেয়ার আছে। এছাড়াও পেপাল মাফিয়া নামে খ্যাত পিটার থিল ও ডেভিড সেক এবং ইলনের ভাই কিম্বাল এখানে ইন্ধন যোগায়।
যেহেতু ডোরসি সেই প্রথম থেকেই টুইটার এর সাথে আছে তাই সে জানে কোথায় পুস করলে কাজ হবে। আর তাই ইলন মাস্কের কাজটাও সহজ হয়ে যায়, কিভাবে অফার করলে ইনভেস্টররা ও বোর্ড মেম্বেররা না করতে পারবে না তা ডরসি থেকে ভালো কেউ জানার কথা না।
তবে ভিতরের এসব কারণ নিয়ে সন্দেহ থাকলেও একটা ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই আর তা হল ইলন মাস্কের প্ল্যান ছিল ক্যাল্কুলেটিভ এবং সূক্ষ্ম। প্রথমে ৯% শেয়ার কিনে নেয়া পরে এমন এক অফার দেয়া যেটা ইনভেস্টররা পছন্দ করবে ও বোর্ড মেম্বারদের উপ চাপ সৃষ্টি করবে এসবই ছিল কৌশলী মুভ।
অবশেষে ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে টুইটার কিনে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী মার্কিন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। একই সঙ্গে নিজের অ্যাকাউন্ট পরিবর্তন করে নাম দিয়েছেন ‘টুইটার বস’। মালিকানা পাওয়ার পর মি মাস্ক টুইট করেন “দি বার্ড ইজ ফ্রি (পাখি এখন মুক্ত)।” টুইটারের প্রতীক একটি পাখি।
টুইটার কেনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রথমে প্রতিষ্ঠানটির তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে ছাটাইয়ের ঘোষণা দিলেন ইলন মাস্ক। এর মধ্যে প্রধান নির্বাহী (সিইও) পরাগ আগারওয়াল, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা নেড সেগাল রয়েছেন।
টুইট বার্তায় ইলন মাস্ক বলেন, এই প্ল্যাটফর্মে অর্থ উপার্জনই আগ্রহের বিষয় নয়। আরও বেশি টাকা উপার্জনের জন্যও এটা করিনি। আমি মানবতাকে সাহায্য করার জন্য কাজটি করেছি। এর আগে একাধিক শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ তুলে ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কেনার চুক্তি বাতিল করতে চেয়েছিলেন ইলন মাস্ক।
তবে ইলন মাস্ক টুইটার কেনার ঘোষণা দেয়ার পরের সপ্তাহ এবং মাসগুলোতে শেয়ার বাজারে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম পড়ে যাচ্ছিল। কোম্পানি হিসেবে টুইটারের দামও তখন কমতে থাকে। তখন অনেক বিশ্লেষকই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন, মাস্ক টুইটারের জন্য বেশি দাম দিয়ে ফেলেছেন কিনা।
তবে মাস্ক প্রকাশ্যে ভিন্ন কিছু প্রশ্ন তুলেন। তার একটা হচ্ছে, টুইটারে আসল ব্যবহারকারী একাউন্টের সংখ্যা কত?
ফোর্বস এবং ব্লুমবার্গ বিশ্বের সেরা ধনীদের যে তালিকা করেছে, ইলন মাস্ক আছেন তার শীর্ষে। তার সম্পদের পরিমাণ নাকি ২৫০ বিলিয়ন, অর্থাৎ দু’হাজার ৫০০ কোটি ডলার। ইলন মাস্ক অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করে যাচ্ছেন, টুইটারে বট বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সৃষ্টি করা ভুয়া একাউন্টের সংখ্যা অনেক বেশি।
মাস্কের টুইটার কেনা নিয়ে ‘গবেষণা’ করতে বসে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো সাইটগুলি আমজনতার মধ্যে জনপ্রিয় হলেও টুইটার ক’জন ব্যবহার করেন? তা তো রাজনীতিক, সাংবাদিক এবং খ্যাতনামীদের মতো সমাজের তথাকথিত উচ্চবর্গের মধ্যে জনপ্রিয়। আমজনতার মনপসন্দ কি হয়ে উঠতে পেরেছে টুইটার? তবে এ সংস্থা কেনার আসল কারণ কী? এ কি ৫১ বছরের মাস্কের খামখেয়ালিপনা?
টুইটারের পিছনে পানির মতো এত কোটি কোটি ডলার খরচ করছেন কেন মাস্ক? অধিগ্রহণের আগের দিন টুইটারের বিজ্ঞাপনদাতাদের উদ্দেশে একটি বিবৃতিতে একাধিক কারণ জানিয়েছেন তিনি। তবে সে সবই কি কেবল মাস্কের কথার কথা? সন্দিহান অনেকে।
২৭ অক্টোবরের ওই টুইটে মাস্কের দাবি, ‘‘আমি কেন টুইটার অধিগ্রহণ করলাম, তা ব্যক্তিগতভাবে সকলকে জানাতে চাই। কারণ, মানবতার ভবিষ্যতের খাতিরে সমস্ত পক্ষের স্বাধীন মতপ্রকাশের জন্য একটা ডিজ়িটাল মঞ্চ থাকা উচিত। যেখানে সুস্থ পরিবেশে কোনও রকমের গা-জোয়ারি ছাড়াই বিভিন্ন বিষয়ের মতামতের বিতর্ক হতে পারে।
এই মুহূর্তে নেটমাধ্যম যে কট্টর বাম এবং দক্ষিণপন্থীদের প্রকোষ্ঠে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার বিপদসঙ্কুল পথে দাঁড়িয়ে, তা মনে করেন মাস্ক। এবং এর জেরে সমাজে বিদ্বেষ বাড়তে পারে। সমাজে বিভাজন গড়ে উঠতে পারে। ওই টুইটে সে আশঙ্কাও করেছেন মাস্ক।
অবিশ্বাসীরা অবশ্য মাস্কের এই দাবির পরেও প্রশ্ন তুলতে কসুর করেননি। টুইটারের লোকসানের খতিয়ানও তুলে ধরেছেন তারা। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সেই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত টুইটারের নিট মূল্য ৪,০৮৩ কোটি ডলার। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত এটি মুনাফা করেছে ১২০ কোটি ডলার। তবে গত বছরের এই সময়ের থেকে তা ১ শতাংশ কম। এমনকি, মুনাফায় মেটা-র থেকে তা ২৫ গুণ কম। লোকসানের নিরিখে ২৭ কোটি ডলার পানিতে গিয়েছে টুইটারের।
যে যা-ই বলুক না কেন! টুইটার যে সোনা ফলাবে, তা মনে করেন খোদ মাস্ক। বিশ্বের ধনীতমের দাবি, তিনি বিশ্বাস করেন, যত কোটি ডলার খরচ করে টুইটার কিনেছেন, তার থেকে দশ গুণ বেশি মূল্য এটির। সে জন্যই কি ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের মধ্যে নিজের সম্পত্তি থেকে ১,৫০০ কোটি ডলার ঢেলেছেন তিনি?
টুইটার কিনতে বাকি অর্থ এসেছে ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড এবং অন্যান্য লার্জ ফান্ড থেকে। এই অধিগ্রহণে ১০০ কোটি ডলার ঢেলেছেন ওর্যাকল্-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসনও। এ ছাড়া, বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে বাকি ১,৩০০ কোটি ডলার তোলা হয়েছে।
তবে ইলন মাস্ক ‘ছোট্ট’ টুইট-পাখিকে নিয়ে কোন স্বপ্ন বুনছেন? ইলন মাস্কের কাছে রয়েছে টেস্লা-র মতো গাড়ি প্রস্ততকারী সংস্থা। স্পেসএক্স-এর মতো মহাকাশ গবেষণা সংস্থাও গড়ে তুলেছেন। আর্থিক মূল্যের বিচারে টুইটারের থেকে যেগুলো বহু গুণ ওজনদার। টেস্লার নিট মূল্য ৭০ হাজার ২৩৩ কোটি ডলার। অন্য দিকে, ১২ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের নিট মূল্যের স্পেসএক্স নাসা-র মতো মহাকাশ গবেষণা সংস্থাকে টক্কর দিতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।