জুমবাংলা ডেস্ক: মাশরুম সম্পর্কে মানুষের নেতিবাচক ধারণা ছিল। দিন দিন সেই ধারনার কিছুরটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সেই ধারনাকে পুরোপুরি পাল্টে দিতে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে মাশরুম চাষ কেন্দ্র। এই কেন্দ্র থেকে দেশে মাশরুমের চাহিদার বিশাল একটি অংশ পূরণ করা হয়। বর্তমানে দেশের বাজারে মাশরুমের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। পাশাপাশি মাশরুম চাষেও বিস্তার লাভ করছে।
জানা যায়, মাশরুম চাষের জন্য জমি, বীজ, কীটনাশক ও সার কিছুরই প্রয়োজন পড়ে না। জৈব পদ্ধতিতে মাত্র দুই-তিন সপ্তাহেই মাশরুম উৎপাদন করা সম্ভব হয়। এরপর মাশরুম বাজারজাত করার জন্য প্রস্তুত হয়।
চাষিদের ভাষ্য মতে, দিনে দিনে মাশরুম সম্পর্কে মানুষের ভিন্ন ধারণা পাল্টাচ্ছে, বাড়ছে চাষ। সময়ের ব্যবধানে মাশরুম হয়ে উঠছে জনপ্রিয়। এই মাশরুম চাষের সম্ভাবনা সৃষ্টিকে কাজে লাগাচ্ছে কৃষি বিভাগও।
মাশরুম চাষি জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি ২০০৭ সালে মাশরুম চাষের স্বপ্ন দেখি। মাশরুম চাষে তেমন ধারনা না থাকায় মাশরুম ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণ নেই। মানুষ আগে মাশরুম কে ব্যাঙের ছাতা বলে খাদ্য তালিকা থেকে দূরে রাখতো। এ অঞ্চলের মানুষের ধারনা পাল্টাতে অনেকটা বেগ পেতে হয়েছে। এখন মানুষের ধরনা পাল্টেছে। সে সাথে বেড়েছে চাষ। এখন ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মাশরুমের অর্ডার পাই, বিশেষ করে বিভিন্ন সুপার শপে মাশরুমের চাহিদা বেশি।
তিনি আরো বলেন, মাশরুম ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণ শেষে সেখান থেকে ৩০ টাকা দিয়ে একটি স্পন কিনে আমার মাশরুম চাষের যাত্রা শুরু হয়। মাশরুম চাষে স্পন গুলো অর্গানিকভাবে তৈরী করতে হয়। আমি কাঠের গুঁড়া, গমের ভূষি, ধানের কুড়া, খড় ও চুন ব্যবহার করে থাকি। এছাড়াও আরো কিছু উপকরন আছে যেগুলো দিয়ে মাশরুম চাষ করা যায়। একটি মাশরুম চাষের জন্য দুই-তিন সপ্তাহ সময় লাগে। খরচও খুব বেশি নয়। সে হিসেবে দামও ভালো। মাশরুম পরিচর্যার জন্য প্রতিদিন ১৫-১৭ জন নারী-পুরুষ কাজ করেন।
জাহিদুল আরো বলেন, ৫টি শেডে প্রায় ৯ হাজার মাশরুমের স্পন থেকে প্রতিদিন ১৩০-১৫০ কেজি মাশরুম উৎপাদন হয়। প্রতি কেজি মাশরুম বিক্রি হয় ২০০-২২০ টাকায়। চট্রগ্রাম, রাজশাহী, খুলনাসহ দেশের বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ বছর ৯ হাজার মাশরুম স্পন থেকে প্রায় ৫০ মেট্রিক টন মাশরুম উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, মাশরুম চাষ আরো ছড়িয়ে দিতে সরকারিভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চাষিদের সব ধরনের সহযোগীতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই অঞ্চলে শুধু জাহিদুল একা নয়, এ মাশরুম চাষ কেন্দ্রে অনেকেই পেয়েছেন আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ। বর্তমানে সেখানে পাঁচজন পুরুষ ও ছয়জন নারী কর্মী রয়েছে। যাদের সংসারের ব্যয় এখন এ মাশরুম চাষ থেকে আসে।
আম বাগানে হচ্ছে মিষ্টি কুমড়ার চাষ, অল্প খরচে কয়েকগুণ বেশি লাভ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।