আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা বাড়লেও ২০২৩ সালে জার্মানিতে আশ্রয় প্রক্রিয়ার সময়সীমা কমেছে। দেশটির বার্তা সংস্থা ডিপিএ-এর এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। খবর ইনফোমাইগ্রেন্টসের।
জার্মান সরকারের দেয়া তথ্য বলছে, সংশ্লিষ্ট আবেদনের জন্য ২০২৩ সালে গড়ে ৬ দশমিক ৮ মাস সময় নেয়া হয়েছিল, ২০২২ সালে যা ছিল ৭ দশমিক ৬ মাস।
সরকার বলেছে, আশ্রয় আবেদনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের জন্য আদালতের কার্যক্রমের সময়কাল ২০২৩ সালে প্রায় পাঁচ মাস কমেছে।
২০২২ সালে ২৬ মাসের তুলনায় গড়ে ২০ দশমিক ৭ মাস লেগেছে। সম্পূর্ণ আশ্রয় প্রক্রিয়াটি এখনো যথেষ্ট দীর্ঘ। তবে সারা দেশে এই সময়সীমা আলাদা।
পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেটে এ সময়সীমা পাঁচ মাস। কেন্দ্রীয় এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য হেসে এবং লোয়ার স্যাক্সনিতে এর গড় সময়কাল দুই বছরেরও বেশি। ব্র্যান্ডেনবুর্গে আশ্রয় আবেদনকারীদের সাধারণত তিন বছরেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়।
রেডাকসিওন নেটৎজভেয়ার্ক ডয়েচলান্ড এডিটোরিয়াল নেটওয়ার্কের (আরএনডি) সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছেন কট্টর-বাম ডি লিংকে পার্টির সদস্য ক্লারা বাঙ্গার। ক্লারা সরকারের কাছে তথ্যের জন্য অনুরোধ করেছেন।
তিনি প্রশাসনিক আদালতের ক্ষেত্রে আরো দক্ষ কর্মী এবং সংগঠনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন৷ বিশেষ করে আদালতের কার্যক্রেমর সময়সীমা কমানোর জন্য আহ্বানও জানিয়েছেন৷
দীর্ঘ আশ্রয় প্রক্রিয়া শরণার্থীদের জন্য দুঃখজনক এবং সমস্যার৷ বাঙ্গারের কথায়, তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকেন৷ সংহতিকরণেও সমস্যা হয়৷
ক্লারার ভাষ্য, ‘এটা মেনে নেয়া যায় না৷ আশ্রয়প্রার্থীদের অবস্থান স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত তাদের গড়ে দেড় বছর অপেক্ষা করতে হয়৷’
যদিও গত ফেব্রুয়ারিতে নতুন আশ্রয় আবেদনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। জার্মানির ন্যুরেমবুর্গে বৃহস্পতিবার দেশের ফেডারেল অফিস ফর মাইগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজিস এ তথ্য জানিয়েছে।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে জার্মানিতে আশ্রয় চেয়ে প্রথমবারের মতো আবেদন জমা পড়েছে ১৯ হাজার ৪৯৪টি। সংখ্যাটি ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির তুলনায় ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ কম৷ আর এ বছরের জানুয়ারি তুলনায় তা ২৬ দশমিক ১ শতাংশ কম।
২০২৩ সালের জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারিতে বিভিন্ন দেশের মোট ৫৪ হাজার ৩৩৩ জন মানুষ জার্মানিতে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন। আর এ বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা কমে হয়েছে ৪৭ হাজার ৯০।
২০২৪ সালের প্রথম দুই মাসে আশ্রয় আবেদন মঞ্জুরের হার ৪৫ শতাংশ। অবশিষ্ট ৫৫ শতাংশ আবেদন খারিজ করেছে জার্মান কর্তৃপক্ষ।
শরণার্থী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা দ্রুত বেড়ে চলায় জার্মানি তথা ইউরোপের রাজনীতির মূল লক্ষ্যই এখন অভিবাসন। একাধিক দেশে চরম ডানপন্থিরা এ বিষয়ে মানুষের ভয়ভীতির ফায়দা তুলে নিজেদের শক্তি বাড়াচ্ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্তরে এই সংকট সামাল দেয়া পুরোপুরি সম্ভব হচ্ছে না। ফলে জাতীয় স্তরে মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলো বাধ্য হয়ে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে।
বামপন্থি দল ‘ডি লিংকে’ সরকারের এ জাতীয় কড়া পদক্ষেপকে চরম ডানপন্থি শক্তির মনোভাবের সঙ্গে তুলনা করেছে৷ একাধিক মানবাধিকার গোষ্ঠী এমন পদক্ষেপকে অমানবিক হিসেবে বর্ণনা করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।