আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জার্মানিতে তিন বছরের মধ্যে নাগরিকত্ব পাওয়ার যে বিধান বিদায়ী সরকার চালু করেছিল, তা বাতিলের পথে হাঁটছে নতুন সরকার। সম্প্রতি গঠিত নতুন জোট সরকার তাদের চুক্তিপত্রে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে। তবে পাঁচ বছর পর নাগরিকত্ব প্রাপ্তির আইন বহাল রাখা হবে বলে জানিয়েছে জোটটি।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যবর্তী নির্বাচনের পর চলতি সপ্তাহে সরকার গঠনের লক্ষ্যে জোট গঠন করে রক্ষণশীল সিডিইউ/সিএসইউ এবং মধ্য-বামপন্থী এসপিডি। নতুন জোট সরকারের চুক্তি অনুযায়ী, তারা নাগরিকত্ব আইনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে।
বিদায়ী চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বাধীন সরকার বিদেশিদের জন্য নাগরিকত্ব প্রাপ্তি সহজ করতে একাধিক সংস্কার এনেছিল। এর মধ্যে অন্যতম ছিল— যদি কেউ জার্মান সমাজে সফলভাবে একীভূত হয় এবং সি১ লেভেলের ভাষাজ্ঞান অর্জন করে, তাহলে মাত্র তিন বছরের মধ্যেই তাকে নাগরিকত্ব দেওয়া যাবে।
তবে এই বিধান শুরু থেকেই সমালোচনার মুখে পড়ে। সিডিইউ/সিএসইউ দলীয়ভাবে দাবি করে, মাত্র তিন বছরে নাগরিকত্ব দেওয়া হলে সেটি হবে ‘অতি সহজলভ্য’, যা জার্মানির নাগরিকত্বের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করতে পারে।
জয়ের পর সেই অবস্থানের প্রতিফলন ঘটিয়ে নতুন সরকার তিন বছরের নাগরিকত্ব প্রাপ্তির সুযোগ বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে। তবে, পাঁচ বছর জার্মানিতে বৈধভাবে বসবাসের পর নাগরিকত্ব পাওয়ার আগের বিধান বহাল থাকবে। এ ছাড়া, নাগরিকত্বের জন্য আবেদনকারীদের সমাজে একীভূত হওয়ার উপযুক্ত প্রমাণ দাখিল করতে হবে।
বহাল থাকছে দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ
ওলাফ শলৎস সরকারের বড় একটি সংস্কার ছিল দ্বৈত নাগরিকত্বের অনুমোদন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশ থেকে আগত অভিবাসীরা চাইলে জার্মান নাগরিকত্ব গ্রহণের পাশাপাশি নিজের দেশের নাগরিকত্বও রাখতে পারতেন। রক্ষণশীলদের সমালোচনা সত্ত্বেও, নতুন জোট সরকার এই সুবিধা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নাগরিকত্ব বাতিলের প্রস্তাব গুরুত্ব পায়নি
নির্বাচনের আগে সিডিইউ/সিএসইউর পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছিল, যদি কোনো দ্বৈত নাগরিক সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত হন, ইহুদিবিদ্বেষী হন বা চরমপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাস করেন, তাহলে তার জার্মান নাগরিকত্ব বাতিল করা হবে।
তবে এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে এসপিডি ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, যার মধ্যে ছিল জার্মানির মাইগ্রেশন অ্যাসোসিয়েশন। শেষ পর্যন্ত জোট গঠনের আলোচনায় নাগরিকত্ব বাতিল সংক্রান্ত এই বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।