অন্যরকম খবর ডেস্ক : প্রায় দু’শ বছরের ঐতিহ্য। হাওয়াই দ্বীপের প্রাণভোমরা। প্রজন্মেরর পর প্রজন্ম এই বটবৃক্ষের ছায়াতলেই শীতল হয়েছে গোটা দ্বীপবাসী। ঝড়, সাইক্লোন, টাইফোনের ঢাল হয়েছে। বুক দিয়ে আগলে রেখেছে প্রাণের দ্বীপ। শুধু মানুষ নয়, রংবেরঙের নানান প্রজাতির শত শত পাখির আশ্রয়স্থলও ছিল এই বুড়ো বট গাছ। এখন নিজেই অসহায়।
এটি ডাল-পাতা ছাড়া জীবন্ত লাশের মতো দাঁড়িয়ে আছে। দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে হাওয়াই দ্বীপের লাহাইনা শহরের এই প্রাচীন ‘মায়াতলা’। ১৫০ বছরের পুরোনো বটগাছ! ৪৭টি বড় বড় শাখা নিয়ে প্রায় দুই একরজুড়ে ছিল এর বিস্তৃতি।
লাহাইনার অনেক ঐতিহাসিক বিস্ময়গুলোর এই গাছ। দাবানলের আঘাত সহ্য করে বেঁচে থাকবে কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। গাছের শিকড় সুস্থ থাকলে এটি বেঁচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে লাহাইনা কর্তৃপক্ষ। তবে আপাতদৃষ্টিতে গাছের শিকড় পুড়ে গেছে বলে মনে করছেন তারা। হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সটেনশন ফরেস্টার ড. জেমস বি ফ্রাইডে বলেন, গাছের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নিয়ে তিনি আশাবাদী নন। তবে দাবানলের পরও গাছের বেঁচে থাকা নিয়ে কিছুটা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন লাহাইনা রিস্টোরেশন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক থিও মরিসন। বৃহস্পতিবার সকালে জানিয়েছেন-বটগাছের প্রাণ যাওয়া কঠিন।
বটগাছটি অর্ধ একরেরও বেশি জায়গাজুড়ে বিস্তৃত। লাহাইনা রিস্টোরেশন ফাউন্ডেশন জানায়, ভারত থেকে আনা ৮ ফুটের চারাটি ১৮৭৩ সালে লাহাইনায় প্রোটেস্ট্যান্ট মিসনের স্মৃতিরক্ষার্থে রোপণ করা হয়েছিল। রোপণের সময় গাছটির দৈর্ঘ ছিল আট ফুট। স্থানীয়দের সতর্কতা আর পরম যতেœ গাছের বর্তমান দৈর্ঘ্য ৬০ ফুট ছাঁড়িয়েছে। বটগাছের ছায়ায় গড়ে উঠেছিল একটি প্রাকৃতিক সমাবেশস্থল। ১৫০ বছর ধরে শিল্পমেলা ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নিজস্ব অনুষ্ঠান এখানে অনুষ্ঠিত হতো। ২০১৬ সালে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মাউয়ের বাসিন্দা অ্যামি ফুকা বলেছিলেন, ‘এটি শহরের ে কন্দ্রস্থলের মতো।’
শুধু বটগাছ নয়। ধ্বংস হয়েছে শহরের অন্যান্য প্রাচীন স্থাপনা। ১৮৩০-এর দশকের বাল্ডউইন হোম মিউজিয়াম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। লাহাইনা রিস্টোরেশন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক থিও মরিসন সিএনএনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ইংরেজি ও হাওয়াই অধিবাসীদের কয়েক দশকের প্রার্থনাস্থল ওয়াইওলা চার্চ দাবানলের শিকার হয়েছে।
ঐতিহাসিক বটগাছের পাশেই রয়েছে একটি পুরোনো কোর্টহাউজ। এতে ঐতিহ্য জাদুঘর গড়ে তোলা হয়েছিল। এই পুরোনো কোর্টহাউজটির ছাদ আগুনে পুড়ে গেছে। ধ্বংস হয়েছে ভেতরের জাদুঘরও।
একটি উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায়, এই দ্বীপের চীনা অভিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক ও ধর্মীয় ওও হিং টেম্পল মিউজিয়াম দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতীয় উদ্যান পরিষেবা অনুযায়ী ১৯০৯ সালে মাউইতে আসা চীনা অভিবাসীরা গড়ে তুলেছিলেন ওয়া হিং সোসাইটি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।