জুমবাংলা ডেস্ক : সড়কে মোটরযান চালাতে গেলে কিছু আইন সবারই জানা প্রয়োজন। থাকতে হয় ড্রাইভিং লাইসেন্স, ইন্স্যুরেন্সসহ গাড়ির নানা কাগজপত্র। চাওয়া মাত্র সেগুলো ট্রাফিক সার্জেন্ট বা সংশ্লিষ্টদের দেখাতে হয়। অপারগ হলে বা ত্রুটি থাকলে বিভিন্ন মেয়াদে জেল-জরিমানা গুণতে হয়। গাড়িটিও চলে যেতে পারে থানায় বা ডাম্পিংয়ে।
নিয়মিত চেকিংয়ের পাশাপাশি মাঝেমধ্যে মোবাইল কোর্ট বসিয়েও গাড়ির কাগজপত্র যাচাই করে ট্রাফিক বিভাগ বা বিআরটিএ। এ ধরণের আইনি ঝামেলা এড়াতে দুই চাকার হোক বা চার চাকার, গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামার আগে আইন-কানুন জেনে প্রস্তুত হয়ে নামাই মঙ্গল। আসুন জেনে নিই মটরযান আইনের প্রধান কিছু ধারা-
ধারা: ১৩৮। লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোঃ কোন ব্যক্তি ৩ ধারা (১) উপধারা লংঘন করে (লাইসেন্স ছাড়া) কোন মোটরযান চালালে সর্বোচ্চ চার মাসের কারাদণ্ড অথবা পাঁচশত টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয়বিধ শাস্তি পেতে হবে।
ধারা: ১৩৯। নিষিদ্ধ হর্ণ কিংবা শব্দ উৎপাদনকারী যন্ত্র লাগানো ও ব্যবহারঃ যদি মোটরযানে এমন ধরণের হর্ণ বা শব্দ উৎপাদনকারী যন্ত্র সংযোজন বা ব্যবহার করা হয় যা সংশ্লিষ্ট এলাকায় যথাযোগ্য কর্তৃপক্ষ প্রণীত কোন বিধি বা প্রবিধান মোতাবেক নিষিদ্ধ, তা হলে নির্দিষ্ট সর্বোচ্চ একশ’ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে।
ধারা: ১৪১। লাইসেন্স সংক্রান্ত অপরাধসমূহ :
(১) এই অধ্যাদেশ অনুসারে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার অযোগ্য কোন ব্যক্তি প্রকাশ্য স্থানে কোন মোটরযান চালালে কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স যোগাড় বা এর জন্য আবেদন করে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার অযোগ্য হওয়ার পর পূর্ববর্তী ড্রাইভিং লাইসেন্সের এনডোর্সমেন্টের কথা প্রকাশ না করে পুনরায় ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করলে সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড অথবা পাঁচশ’ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
(২) এই আইন অনুসারে কন্ডাক্টরস লাইসেন্স ধারণ করার ও পাওয়ার অযোগ্য কোন ব্যক্তি প্রকাশ স্থানে ‘স্টেজ-ক্যারেজ’ করলে সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড কিংবা দুইশ’ টাকা পর্যন্ত জরিমানা কিংবা উভয় শাস্তি পেতে হবে।
(৩) মোটরযান চালানোর সময় এই আইন অনুযায়ী কর্মরত যে কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক চাওয়ামাত্র বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখাতে হবে। অন্যথায় পঞ্চাশ টাকা জরিমানা করা হবে।
ধারা: ১৪২। নির্ধারিত গতির চেয়ে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালালেঃ এমন অপরাধের জন্য প্রথমবার সর্বোচ্চ এক মাস কারাদণ্ড কিংবা সর্বাধিক তিনশ’ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডণীয় হবেন এবং তৎপরবর্তী অনুরূপ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড কিংবা সর্বাধিক পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডণীয় হবেন এবং তার ড্রাইভিং লাইসেন্স অনধিক এক মাস মেয়াদের জন্য সাসপেণ্ড করা হবে।
ধারা: ১৪৩। বেপরোয়াভাবে কিংবা বিপজ্জনকভাবে গাড়ি চালালেঃ প্রথমবার এই অপরাধ করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড কিংবা পাঁচশ’ টাকা জরিমানা হবে এবং তার ড্রাইভিং লাইসেন্স একটা নির্ধারিত মেয়াদের জন্য সাসপেন্ড থাকবে।
ধারা: ১৪৪। মদ্যপান কিংবা মাদকদ্রব্য সেবনের পর মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালালেঃ গাড়ির উপর যথাযথ নিয়ন্ত্রণ কার্যকর করতে অক্ষম, এমতাবস্থায় যদি কেউ গাড়ি চালান কিংবা চালানোর চেষ্টা করেন, তবে অনুরূপ অপরাধ প্রথমবার সংঘটনের জন্য সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড কিংবা সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড হবে।
ধারা: ১৪৫। শারীরিকভাবে অনুপযুক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোঃ প্রথমবার অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ শ’ টাকা জরিমানা হবে এবং তার ড্রাইভিং লাইসেন্স নিদিষ্ট মেয়াদে বাতিল করা হবে।
ধারা: ১৪৭। কতিপয় অপরাধ করতে সহায়তার জন্য শাস্তিঃ কোন ব্যক্তি ১৪৩ কিংবা ১৪৫ ধারা অনুযায়ী কোন একটি অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করলে তিনি সেই অপরাধের জন্য নির্ধারিত শাস্তি পাওয়ার যোগ্য হবেন।
ধারা: ১৪৮। মোটরগাড়ির দৌড়বাজি কিংবা গতি পরীক্ষাঃ এ ধরণের অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ এক মাস কারাদণ্ড অথবা পাঁচশ’ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় শাস্তি পাওয়ার যোগ্য হবেন এবং তার ড্রাইভিং লাইসেন্স সর্বোচ্চ এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করা যেতে পারে।
ধারা: ১৪৯। নিরাপত্তাবিহীন অবস্থায় গাড়ি ব্যবহারঃ সর্বোচ্চ এক মাস কারাদণ্ড কিংবা সর্বাধিক দুইশ’ পঞ্চাশ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডণীয় হবেন। সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড কিংবা সর্বাধিক এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড হবে।
ধারা: ১৫০। ধোঁয়া বাহির হওয়া মোটরযান ব্যবহারঃ স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ ধোঁয়া বের হওয়া গাড়ি প্রকাশ্য স্থানে চালালে সর্বোচ্চ দুইশত টাকা জরিমানা হবে।
ধারা: ১৫১। এই অধ্যাদেশের সাথে সঙ্গতিবিহীন অবস্থায় গাড়ি বিক্রি অথবা গাড়ির পরিবর্তন করাঃ সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ড কিংবা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া হতে পারে।
ধারা: ১৫২। রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সার্টিফিকেট অথবা পারমিট ব্যতীত মটরগাড়ি ব্যবহারঃ কোন ব্যাক্তি ৩২, ৪৭, ৫১ (১) উপধারা অনুযায়ী পারমিট ব্যতীত মোটরগাড়ি চালালে প্রথমবারের অপরাধের জন্য সর্বাধিক তিন মাস কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
ধারা: ১৫৪। অননুমোদিত ওজন অতিক্রমপূর্বক গাড়ি চালানোঃ কোন ব্যক্তি ৮৬ অথবা ৮৮ ধারার অধীনে আরোপিত কোন নিষেধাজ্ঞা লংঘন করে অর্থাৎ অনুমোদিত মাত্রার অতিরিক্ত ওজন নিয়ে গাড়ি চালালে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা জরিমানা।
ধারা: ১৫৫। অবীমাকৃত মোটরযান চালানোঃ কোন ব্যক্তি ১০৯ ধারার বিধান লংঘন করে অর্থাৎ বীমা না করে কোন মোটরযান চালালে কিংবা চালানোর অনুমতি দিলে সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা জরিমানা হবে।
ধারা: ১৫৬। অনুমতি ব্যতীত গাড়ি চালালেঃ কোন ব্যক্তি কোন মোটরযানের কিংবা অন্য কোন আইনানুগ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত সংশ্লিষ্ট মোটরগাড়ি চালিয়ে বাইরে গেলে সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড অথবা সর্বাধিক দুই হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় শাস্তি পাওয়ার যোগ্য হবেন।
ধারা: ১৫৭। প্রকাশ্য সড়কে অথবা প্রকাশ্য স্থানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিঃ সর্বোচ্চ পাঁচশ’ টাকা জরিমানা হবে এবং অনুরূপ মোটরযান কিংবা খুচরা যন্ত্র বা জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে।
ধারা: ১৬০। ওয়ারেন্ট ব্যতীত গ্রেফতারের ক্ষমতাঃ এক ইউনিফরমধারী পুলিশ অফিসারের সামনে কেউ ৩২, ৫১, ১৪৩, ১৪৪, ১৪৫, ১৪৬, ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ১৫৪ কিংবা ১৫৬ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য কোন অপরাধ করলে তিনি উক্ত অপরাধীকে ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেফতার করতে পারবেন। সূত্র : ডিএমপি নিউজ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।