কে এই ঝো লো? তাকে কেন্দ্র করে কেন ডিক্যাপ্রিওকে জিজ্ঞাসাবাদ?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের অন্যতম বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ইন্টারপোলের রেড নোটিসের তালিকায় থাকা মালয়েশিয়ান ধনকুবের ঝো লোর সঙ্গে হলিউড তারকা লিওনার্ডো ডিক্যাপ্রিওর সম্পর্কের নতুন তথ্য সামনে এসেছে।
ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই’র অপ্রকাশিত নথিপত্রের বিস্তারিত তথ্য বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে ব্লুমবার্গ। সেখানে বলা হয়েছে, ঝো লো এর সঙ্গে সম্পর্কের জেরে ২০১৮ সালে ডিক্যাপ্রিওকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল গোয়েন্দা সংস্থাটি।
মালয়েশিয়ান ব্যবসায়ী ঝো লো এর বিরুদ্ধে সাড়ে ৪০০ কোটি ডলার পাচারের অভিযোগ রয়েছে। বিপুল পরিমাণ এই অর্থ তিনি মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিল থেকে তুলে নিয়েছিলেন, যাকে বলা হয় ‘ওয়ান-মালয়েশিয়া বারহাদ স্ক্যান্ডাল’ বা ‘১এমডিবি’ জালিয়াতি।
মালয়েশিয়ার আদালতে ২০২১ সালে লো এর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। ‘১এমডিবি’ কেলেঙ্কারির তদন্ত বন্ধে লো সরকারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
আট বছর ধরে পলাতক ওই ব্যবসায়ী এখন চীনে রয়েছেন বলে মনে করা হয়। তাকে গ্রেপ্তারে ২০১৬ সালে ‘রেড নোটিস’ জারি করে ইন্টারপোল।
ব্লুমবার্গের তথ্য বলছে, ২০১০ সালে একটি নাইটক্লাবে লো এর সঙ্গে দেখা করেছিলেন টাইটানিক তারকা ডিক্যাপ্রিও। তার সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেছিলেন।
এফবিআই’র নথি অনুসারে, লো এর সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি সামনে এলে মার্কিন গ্রান্ড জুরিকে ডিক্যাপ্রিও বলেছিলেন, “আমি তার জন্য কাজ করছিলাম….আর সেই ব্যবসাটিও সামাজিক হচ্ছিল, যে কারণে আমরা পরস্পরকে আরও জানছিলাম। আমাদের মধ্যে বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।”
বেশি বেশি সিনেমা নির্মাণে দুজনে ১০০ কোটি ডলারের মেগাফান্ড তৈরির পাশপাশি এশিয়ায় রাইডসহ ওয়ার্নার ব্রোস থিম পার্কের ধারণা নিয়েও আলোচনা করেছিলেন। বেলিজে একটি পরিবেশ বান্ধব রিসোর্ট গড়ে তোলার ভাবনা নিয়েও তাদের আলোচনা হয়।
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ডিক্যাপ্রিও লো-কে ‘মাই ম্যান’ সম্বোধন করেছিলেন। অন্যদিক লো তাকে ‘এল-ডগ’ বলে সম্বোধন করেন। তারা দুজনেই তাদের মায়েদের সঙ্গেও সাক্ষাত করেন।
ডিক্যাপ্রিও অভিনীত ২০১৩ সালে অস্কার-মনোনীত চলচ্চিত্র ‘দ্য উলফ অফ ওয়াল স্ট্রিট’-এ অর্থায়নের পাশাপাশি ডিক্যাপ্রিওকে বিভিন্ন বিলাসবহুল উপহার দিয়েছিলেন লো। এসবের মধ্যে ছিল মার্লন ব্র্যান্ডনের ৬ লাখ ডলার মূল্যের অস্কার মূর্তি এবং ৯০ লাখ ডলারের জিন-মিশেল বাসকিয়েট পেইন্টিং।
২০১৮ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, লো এর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি অভিযোগ তদন্তের সময় ডিক্যাপ্রিও ওই উপহারগুলো তদন্ত কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে দেন।
এফবিআইর জিজ্ঞাসাবাদে ডিক্যাপ্রিও বলেন, তাকে বলা হয়েছিল- লো এর বিপুল সম্পদের পেছনে রয়েছে আবুধাবির অজানা একটি উৎস, যেটি তাকে ‘বিজনেস ওয়ার্ল্ডের মোজার্ট’ বানিয়েছে।
অন্যদিকে লো এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে হলিউড তারকা কিম কার্ডাশিয়ানকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে এফবিআই, ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে সেই কথাও বলা হয়েছে।
কার্ডাশিয়ান তদন্তকারীদের জানান, একবার তিনি লাস ভেগাসের একটি ক্যাসিনোতে লো এর সঙ্গে ভোর ৫টা পর্যন্ত ছিলেন। সেখানে জিতে নেওয়া সাড়ে ৩ লাখ ডলার তিনি লো-কে ফেরৎ দিতে চেয়েছিলেন। তবে লো সেই প্রস্তাবে রাজি হননি।
নথিতে বলা হয়েছে, কার্ডাশিয়ান যখন ক্যাসিনো কাউন্টারে চিপগুলো ক্যাশ আউট করতে গিয়েছিলেন, সেসময় ওই চিপগুলোতে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ ডলার ছিল। তার হাতে আড়াই লাখ ডলার বিলের একটি ব্যাগ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।