জুমবাংলা ডেস্ক: উত্তরের বিভিন্ন জেলায় রাত থেকে টানা বৃষ্টির কারণে সেখানকার জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ।
শুক্রবার ভোর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়, থেমে-থেমে মেঘের গর্জন বর্ষার আমেজ নিয়ে আসে প্রকৃতিতে। টানা বৃষ্টির কারণে বেড়েছে শীতের প্রকোপ।
নীলফামারীতে রাত থেকে গুঁড়ি-গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও সকালে মুসলধারে বৃষ্টি হয়েছে। এতে শীতের প্রচন্ডতা বেড়ে যাওয়ায় জরুরি কাজ ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হননি।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান জানিয়েছেন, সকাল ৯ টায় জেলায় ১১ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া একই সময়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কুড়িগ্রামে কয়েকঘণ্টা টানা বৃষ্টির কারণে শ্রমজীবী মানুষ কাজে যেতে পারেনি। বিশেষ করে দিনমজুর, মিস্ত্রি ও নির্মাণ শ্রমিকরা ঘর থেকে বের হতে পারেনি। রাস্তাঘাটে যানবাহন ও লোক চলাচল ছিল কম। বিপাকে পড়েছে দৈনিক আয়ের উপর নির্ভরশীল রিকশা ও ভ্যান চালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষরা।
কুড়িগ্রামের ছয়ানিপাড়া বস্তির বাসিন্দা ভবেন চন্দ্র জানান, মাঘের মাঝামাঝি বৃষ্টির কারণে রাস্তায় রিকশা নিয়ে চলা যাচ্ছেনা। যাত্রীও নেই। একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এখানকার জনজীবন।
পলাশবাড়ী গ্রামের দিনমজুর আকবর আলী জানান, এখন বোরো রোপনের ভরা মৌসুম চলছে। শীত উপেক্ষা করে তারা কাজ করছিলেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে কাজে যেতে পারেননি তার মতো অনেক দিনমজুর।
এদিকে বৃষ্টির কারণে আলু ক্ষেতে ছত্রাকের আক্রমণের আশঙ্কা দেখা গিয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক এলাকায় আলুতে লেট ব্লাইট বা ছত্রাকের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। সদর উপজেলার শিবরাম গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, গত কয়েকদিনের টানা শৈত্যপ্রবাহের কারণে তার আলু ক্ষেতে মড়ক দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির কারণে মড়ক আরো বাড়ে কনা এই নিয়ে চিন্তিত তিনি।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, বৃষ্টি ও স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া আলুতে ব্লাইটের আক্রমনের জন্য উপযোগী পরিবেশ। সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, আলু চাষীদের এই বৈরী আবহাওয়া সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে এবং একসঙ্গে একাধিক ওষুধ স্প্রে করে ছত্রাকের আক্রমণ ঠেকাতে হবে।
উত্তরের জেলা পঞ্চগড়েও বৃষ্টি হচ্ছে। শুক্রবার সকাল ৯টায় ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ বলেন, ‘শৈত্যপ্রবাহ কেটে গেলেও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আর হিম শীতল বাতাসে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। এতে বিপর্যস্ত জনজীবন হয়ে পড়েছে।
বৃষ্টির কারণে জনজীবনে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কাজে যোগ দিতে পারেননি খেটে খাওয়া মানুষ। বিশেষ করে কৃষি শ্রমিক আর রিকশা- ভ্যানচালকদের দুর্ভোগ বেশি দেখা গেছে। শহরের সড়ক, মহাসড়কেও মানুষের চলাচল কমে গেছে।
বৃষ্টি হচ্ছে রংপুর বিভাগের অন্য জেলাতেও। সেখানেও জনজীবনে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কনকনে শীতের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ।
বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে শুক্রবার ভোর থেকেই চলছে লাগাতার বৃষ্টি। ছুটির দিনেও কাজের সন্ধানে বের হওয়া খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন দুর্ভোগে।
শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে রাজশাহী আবহাওয়া অফিস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।