Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্য: জরুরি পরামর্শ
    লাইফস্টাইল ডেস্ক
    লাইফস্টাইল

    টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্য: জরুরি পরামর্শ

    লাইফস্টাইল ডেস্কMd EliasAugust 27, 202510 Mins Read
    Advertisement

    রাত তিনটা। ঢাকার ধানমন্ডির একটি ফ্ল্যাটে ষোলো বছরের আরাফাত ল্যাপটপের স্ক্রিনে আটকে আছে। চোখে অনিদ্রার কালো ছাপ, হাতে কয়েকটা ফাঁকা কফি কাপ। পরীক্ষার চাপ, সোশ্যাল মিডিয়ার তুলনা, বাবা-মায়ের প্রত্যাশার বোঝা—সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে শ্বাস নেওয়ারও জায়গা নেই। সে জানালার ধারে গিয়ে দাঁড়ায়। নিচে রাস্তায় একা এক ট্রাক চলে যাচ্ছে। এক ঝলক মনে হলো, “শান্তি পেতাম যদি ঝাঁপ দিতাম…” এই চিন্তা আসামাত্রই সে পিছিয়ে এল। কিন্তু যে যন্ত্রণা তাকে ওই ধার পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেল, তা কি শুধু আরাফাতের একার গল্প? না, এ তো লাখো বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরীর নীরব চিৎকার!

    টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্য

    টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্য আজ শুধু পারিবারিক উদ্বেগের বিষয় নয়; এটা জাতীয় জরুরি অবস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বাংলাদেশে ১০-১৯ বছর বয়সী প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের মানসিক সমস্যা আছে, কিন্তু ৯০% ক্ষেত্রেই তা অলক্ষিত বা অবহেলিত থেকে যায়। আমরা যখন পরীক্ষার রেজাল্ট, কোচিং সেন্টারের র্যাঙ্কিং নিয়ে ব্যস্ত, তখন আমাদের সন্তানদের মন ক্রমাগত বিষণ্ণতা, উদ্বেগ, আত্মহননের চিন্তায় আক্রান্ত হচ্ছে। এই নিবন্ধে আমরা খুঁজে বের করব কেন এই সংকট এতটা গভীর, কীভাবে চিহ্নিত করবেন বিপদ সংকেত, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—কীভাবে আমরা একটি প্রজন্মকে ধ্বংস হওয়া থেকে বাঁচাতে পারি।

    টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকট: অদৃশ্য মহামারীর মুখোমুখি বাংলাদেশ

    ঢাকার এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ফারহানা আহমেদের ক্লিনিকে গত ছয় মাসে কিশোর রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৪০%। তিনি বলছেন, “একটা মেয়ে এসেছিল—ফার্স্ট ইয়ারের মেডিকেল স্টুডেন্ট। পরীক্ষায় ৮০% পেয়েও কাঁদছিল, কারণ তার বন্ধু পেয়েছে ৮৫%। এই ‘পর্যাপ্ত নয়’ এর সংস্কৃতি আমাদের কিশোর মনে বিষ ঢালছে।” বাংলাদেশে টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের মূলে আছে একাধিক স্তরবিন্যাস:

    • শিক্ষার নামে মানসিক নিপীড়ন: “একটা A- পেলেই জীবনে ধ্বস” — এই মন্ত্রে চালিত হচ্ছে পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রাজশাহীর একটি স্কুলে গত বছর ১৪ জন শিক্ষার্থী কাউন্সেলিং নিতে বাধ্য হয় পরীক্ষাভীতি ও শিক্ষকের অপমানজনক মন্তব্যের কারণে।
    • ডিজিটাল বিষণ্ণতার বিস্ফোরণ: সকালে ঘুম ভাঙা থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকের স্ক্রলিং। গবেষণা বলছে, দিনে ৩ ঘন্টার বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করলে বিষণ্ণতার ঝুঁকি ৬০% বেড়ে যায়। চট্টগ্রামের ১৭ বছর বয়সী সাদমানের কথা ভাবুন, যে ইনফ্লুয়েন্সারদের ‘পারফেক্ট’ লাইফ দেখে নিজের জীবনকে ‘ব্যর্থ’ ভেবে রাতের পর রাত কাঁদে।
    • অর্থনৈতিক চাপের ছায়া: মধ্যম আয়ের পরিবারের ছেলে রিয়াদ (১৬) টিউশনি করে সংসারে সাহায্য করে। তার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হবার, কিন্তু এখন সে ভাবে, “বাবা-মায়ের মুখে ভাত দেব, নাকি বই কিনব?” বাংলাদেশে ২০% টিনএজার দারিদ্র্যের কারণে উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত—এবং এই হতাশা গভীর মানসিক ক্ষত তৈরি করে।
    • জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা ও লজ্জার সংস্কৃতি: কুমিল্লার গ্রামে বসবাসকারী সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী মৌসুমীকে প্রতিবেশী এক যুবক হয়রানি করত। মা বললেন, “চুপ করে থাক, নইলে সমাজে মুখ দেখাতে পারব না।” এই ‘চুপ করো’ সংস্কৃতি কিশোরীদের মধ্যে পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD) বাড়াচ্ছে।

    বিশেষজ্ঞ সতর্কীকরণ: জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ২০২৩ রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে কিশোর আত্মহত্যার হার গত দশকে ৭০% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ। ডা. মোহিত কামাল, শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, বলছেন, “এটি কোনো ‘মন খারাপ’ নয়; এটা মস্তিষ্কের রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতা, জেনেটিক প্রবণতা ও পরিবেশগত চাপের জটিল মিশ্রণ।”

    টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা চেনার ১০টি সূক্ষ্ম সংকেত

    টিনএজারদের মানসিক সমস্যা প্রায়ই “বয়ঃসন্ধির জটিলতা” বলে উপেক্ষা করা হয়। খুলনার এক মা শিরিন আক্তার বললেন, “আমার মেয়ে সারাদিন ঘুমাত, খাওয়া কমিয়ে দিয়েছিল। শাশুড়ি বললেন, ‘বিয়ের বয়স হয়েছে, তাই মন খারাপ!’ পরে জানলাম, সে ডিপ্রেশনে ভুগছিল।” সচেতনতার অভাবে আমরা বিপদ সংকেতগুলো মিস করি। এখানে কিছু সূক্ষ্ম লক্ষণ যা কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়:

    1. ঘুমের ধরণে আকস্মিক পরিবর্তন: রাত জাগা বা দিনে অতিরিক্ত ঘুমানো (Hypersomnia)।
    2. প্রিয় কাজে অনীহা: যে ফুটবল পাগল ছেলে মাঠে যাওয়া বন্ধ করল, যে মেয়েটি গান গাইত সে গিটারটাকে কোণঠাসা করে রাখল।
    3. শারীরিক ব্যথা বেড়ে যাওয়া: মাথাব্যথা, পেটব্যথা বা অবসাদ যার কোনো শারীরিক কারণ ডাক্তার খুঁজে পাচ্ছেন না।
    4. আবেগের চরম উত্থান-পতন: এক মিনিটে হাসি, পরের মিনিটে রাগ বা কান্না—মুড সুইং-এর চেয়েও তীব্র।
    5. নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া: পরিবার-বন্ধুদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া, কক্ষের দরজা বন্ধ রাখা।
    6. পড়াশোনায় আকস্মিক অবনতি: মনোযোগ হারানো, পরীক্ষায় আগের চেয়ে খারাপ রেজাল্ট।
    7. আত্ম-সমালোচনার বৃদ্ধি: “আমি ফেল করব,” “কেউ আমাকে পছন্দ করে না”—এমন নেতিবাচক কথা ঘন ঘন বলা।
    8. খাদ্যাভ্যাসে চরম পরিবর্তন: অতিরিক্ত খাওয়া বা একেবারে না খাওয়া (Eating Disorder-এর লক্ষণ)।
    9. আত্মঘাতী ইঙ্গিত: “তোমাদের আমি না থাকলে ভালো হতো,” “বেঁচে থাকা কঠিন” জাতীয় কথা বলা।
    10. অনিয়ন্ত্রিত রাগ বা ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ: মারামারি, মাদক নেওয়া, রাস্তায় বেপরোয়া বাইক চালানো।

    জরুরি তথ্য: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অর্ধেকেরও বেশি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ১৪ বছর বয়সের মধ্যেই শুরু হয়। প্রাথমিক চিহ্নিতকরণ ও হস্তক্ষেপ জীবন বদলে দিতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কিশোর স্বাস্থ্য রিপোর্ট পড়ুন।

    পরিবারই প্রথম রক্ষাকবচ: টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অভিভাবকদের গাইডলাইন

    “আমার বাবা কখনো জিজ্ঞেস করেননি, ‘তুমি কেমন আছ?’ তিনি শুধু জানতে চান, ‘পরীক্ষার রেজাল্ট কী?'” — ঢাকার এক কলেজ ছাত্র রাব্বির এই কথায় ধরা পড়ে হাজারো কিশোরের মৌন যন্ত্রণা। পরিবারই টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রথম সুরক্ষাকবচ। কিন্তু কীভাবে বাবা-মায়েরা পারেন এই ভূমিকা পালনে? মনোবিদ ড. সেলিনা হোসেনের পরামর্শ:

    • শুনুন বিচার নয়: সন্তান যখন তার সমস্যার কথা বলে, তখন সমাধান দেবার আগে শুধু শুনুন। বলুন, “বুঝতে পারছি, এটা তোমার জন্য কষ্টকর।”
    • ভালোবাসার ভাষা: শারীরিক স্পর্শ (হালকা কাঁধে হাত), চোখে চোখ রেখে কথা বলা, ছোট নোটে উৎসাহের কথা লেখা—এগুলো “আমি তোমাকে দেখছি” বার্তা দেয়।
    • ভুলের জায়গা রাখুন: “তুমি এই কাজটি কেন করলে?” এর বদলে বলুন, “কী শিখলে এই অভিজ্ঞতা থেকে?” ভুলকে শেখার সুযোগ হিসেবে দেখান।
    • সামাজিক তুলনা বন্ধ করুন: “ওর ছেলে তো আইনেস্টে চান্স পেয়েছে!” জাতীয় কথা আত্মবিশ্বাস ধ্বংস করে। তার নিজের গতির সাথে তুলনা করুন।
    • ডিজিটাল ডিটক্সের সময়: সপ্তাহে অন্তত একদিন পরিবারের সবাই ফোন বন্ধ রেখে গল্প করুন, খেলায় যোগ দিন বা একসাথে রান্না করুন।

    সফল অভিজ্ঞতা: বরিশালের রিনা আক্তার তার মেয়ের আচরণে পরিবর্তন দেখে সন্দেহ করেন। স্কুল কাউন্সেলরের সাথে কথা বলে তিনি জানতে পারেন, মেয়ে সাইবার বুলিংয়ের শিকার। রিনা মেয়ের সাথে প্রতিদিন ১৫ মিনিট “আনকন্ডিশনাল টক টাইম” রাখেন। ছয় মাসে মেয়ের আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে। রিনার মন্তব্য, “সমাধান নয়, শুধু তার পাশে থাকা জরুরি ছিল।”

    স্কুল ও সমাজের ভূমিকা: টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব

    ঢাকার একটি নামকরা স্কুলের প্রিন্সিপাল ড. নুসরাত জাহান বললেন, “আমরা যদি শুধু শিক্ষার্থীর মাথায় তথ্য ঢালি, কিন্তু মনকে ভুলে যাই, তাহলে সে শিক্ষা পূর্ণাঙ্গ নয়।” বাংলাদেশে মাত্র ৫% স্কুলে নিয়মিত কাউন্সেলিং সেবা আছে। স্কুল ও সমাজ কী করতে পারে?

    • মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্তি: ক্লাস ৬ থেকেই স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট, ইমোশন রেগুলেশন, কমিউনিকেশন স্কিল শেখানো হোক।
    • কাউন্সেলিং ইউনিট স্থাপন: প্রতিটি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় প্রশিক্ষিত কাউন্সেলর থাকা বাধ্যতামূলক করা।
    • সহিংসতা বিরোধী ক্যাম্পেইন: বুলিং (শারীরিক বা সাইবার) এর শূন্য সহনশীলতা নীতি চালু করা। সিলেটের একটি স্কুলে “বাডি সিস্টেম” চালু হয়েছে, যেখানে সিনিয়ররা জুনিয়রদের মানসিক সহায়তা দেয়।
    • শিক্ষক প্রশিক্ষণ: শিক্ষকদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকেত চিহ্নিতকরণ ও প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া বিষয়ে প্রশিক্ষণ।
    • কমিউনিটি সাপোর্ট গ্রুপ: স্থানীয় মসজিদ, মন্দির, যুব ক্লাব বা সামাজিক সংগঠনকে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতায় সম্পৃক্ত করা।

    উদাহরণ: রাজশাহীর একটি কলেজে “সাইকোলজিক্যাল ফার্স্ট এইড” কোর্স চালু হয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেরা সহপাঠীদের প্রাথমিক মানসিক সহায়তা দিতে শিখছে। এই উদ্যোগ আত্মহত্যা প্রবণতা ৩০% কমিয়েছে।

    কখন ও কিভাবে পেশাদার সাহায্য নেবেন: টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকটে পদক্ষেপ

    কুমিল্লার এক বাবা তার সন্তানের আত্মহত্যার চেষ্টার পর বললেন, “আমি জানতাম না যে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নেওয়াটা এত জরুরি। ভেবেছিলাম নিজে ঠিক হয়ে যাবে।” পেশাদার সাহায্য নেওয়াই মানসিক শক্তি, দুর্বলতা নয়। কখন সাহায্য চাইবেন?

    • আত্মঘাতী চিন্তা বা আচরণ: সন্তান যদি মৃত্যু বা আত্মহননের কথা বলে বা আচরণ করে (গলায় দড়ি রাখা, ওষুধ জমা করা ইত্যাদি)। এটা জরুরি অবস্থা। সরাসরি হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিন।
    • লক্ষণ দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হওয়া: যদি বিষণ্ণতা, উদ্বেগ বা আচরণগত পরিবর্তন টানা দুই সপ্তাহ ধরে চলতে থাকে।
    • দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত: স্কুলে যেতে না পারা, বন্ধু বা পরিবারের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হওয়া, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা হারানো।
    • মাদক বা অ্যালকোহলের অপব্যবহার: মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য এসবের আশ্রয় নেওয়া।

    সহায়তা নেওয়ার উপায়:

    1. জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হেল্পলাইন: ফোন করুন ০১৭০৭-৭১৪৪৯৮ (২৪/৭ সার্ভিস)।
    2. কমিউনিটি ক্লিনিক: অনেক সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বেসিক কাউন্সেলিং পাওয়া যায়।
    3. প্রাইভেট থেরাপিস্ট: মনোরোগ বিশেষজ্ঞ (Psychiatrist) বা ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টের (Clinical Psychologist) সাথে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিন।
    4. অনলাইন থেরাপি: “মনটাকে”, “চাইল্ড সাইকোলজি সেন্টার, ঢাকা” এর মতো প্ল্যাটফর্মে অনলাইন কাউন্সেলিং সুবিধা আছে।
    5. সহপাঠী বা শিক্ষক: বিশ্বস্ত শিক্ষক বা বড় ভাই-বোনের সাথে কথা বলতে উৎসাহিত করুন।

    আর্থিক সহায়তা: সরকারি হাসপাতালে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা অনেকটাই বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে তথ্যের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

    টিনএজারদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা: নিজের যত্ন নিজে নেওয়ার কৌশল

    মনের যত্নও ঠিক দাঁত ব্রাশ করার মতোই দৈনন্দিন অভ্যাস। সিলেটের ১৮ বছর বয়সী তাসনিমা, যে একসময় প্যানিক অ্যাটাকে ভুগত, এখন বলছে, “আমি শিখেছি, আমার মনও তো আমার শরীরেরই অংশ। এরও এক্সারসাইজ দরকার।” টিনএজারদের জন্য কিছু প্রাকটিক্যাল টিপস:

    • মাইন্ডফুলনেসের শুরু: দিনে শুধু ৫ মিনিট। চোখ বন্ধ করে শ্বাসের গতিবিধি লক্ষ করুন। ভাবুন না, শুধু শ্বাস নিন-ছাড়ুন।
    • ইমোশনাল ফার্স্ট এইড কিট বানান: এমন জিনিসের তালিকা রাখুন যা মন ভালো করে—পছন্দের গান, বন্ধুর চ্যাট, পোষা কুকুরের ছবি, এক কাপ চা। খারাপ লাগলেই এই “কিট” ব্যবহার করুন।
    • ডিজিটাল বাউন্ডারি: রাত ৯টার পর নোটিফিকেশন বন্ধ, শোবার ঘরে ফোন নিষিদ্ধ, সপ্তাহে একদিন “সোশ্যাল মিডিয়া ডিটক্স”।
    • শারীরিক সক্রিয়তা: প্রতিদিন ২০ মিনিট হাঁটা, নাচ, সাইক্লিং বা যোগব্যায়াম—এন্ডোরফিন মুক্তির সেরা উপায়।
    • ক্রিয়েটিভ আউটলেট: ডায়েরি লেখা, আঁকা, গান বাজানো, বাগান করা—অভিব্যক্তি প্রকাশের নিরাপদ মাধ্যম।
    • সোস্যাল কানেকশন: অন্তত একজন “সেফ পারসন” রাখুন, যার কাছে কোনো শর্ত ছাড়াই মনের কথা বলা যায়।

    বিজ্ঞান ভিত্তিক তথ্য: নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্টের মতো কার্যকরী বিষণ্ণতা কমানোর ক্ষেত্রে, এমনটাই বলছে হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষণা।

    জেনে রাখুন (FAQs)

    ১. টিনএজারদের মানসিক সমস্যা কি সত্যিই এতটা গুরুতর? এটা কি শুধু বয়সের জটিলতা নয়?
    না, এটি কেবল “বয়সের জটিলতা” নয়। কৈশোর মস্তিষ্কের গঠন ও রাসায়নিক পরিবর্তনের সময়। এই সময়ে অবহেলিত মানসিক সমস্যা প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে স্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আত্মহত্যা ১৫-১৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ। তাই প্রাথমিক হস্তক্ষেপ অপরিহার্য।

    ২. সন্তান মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিলে সামাজিক কুন্ঠা বা কলঙ্কের ভয় আছে। কী করব?
    মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা অন্য যেকোনো শারীরিক অসুস্থতার মতোই চিকিৎসাযোগ্য। ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের চিকিৎসায় যেমন লজ্জা নেই, এখানেও নেই। পরিবারের সমর্থন ও সচেতনতাই সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবে। গোপনে চিকিৎসা নেওয়ার চেয়ে সন্তানের সুস্থতাই প্রাধান্য পাক।

    ৩. টিনএজার সন্তান কী মানসিক কষ্টে আছে, তা সরাসরি জিজ্ঞেস করলে কি আরও খারাপ হবে?
    বরং উল্টোটা। সরাসরি জিজ্ঞেস করলে সে বুঝবে আপনি তার অনুভূতি গুরুত্ব দিচ্ছেন। প্রশ্ন করুন এভাবে: “আমি লক্ষ করছি তুমি কিছুদিন ধরে চুপচাপ, কিছু বলতে চাও?” বা “তোমার কি কখনো মনে হয়, সবকিছু থেমে যাক?” প্রশ্নের উত্তর “হ্যাঁ” হলে রাগান্বিত বা ভীত হবেন না। শান্তভাবে শুনুন এবং পেশাদার সাহায্য নিন।

    ৪. মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা খুব ব্যয়বহুল। কম খরচে সাহায্য পাওয়ার উপায় কী?
    বাংলাদেশে সরকারি স্বাস্থ্য সেবার আওতায় মানসিক স্বাস্থ্যও পড়ে। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (NIMH), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, PGI (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট) হাসপাতালে নামমাত্র ফিতে চিকিৎসা হয়। জেলা সদর হাসপাতালেও মনোরোগ বিভাগ আছে। এছাড়া “আসুন কথা বলি”, “কেয়ার বাংলাদেশ” এর মতো বিনামূল্যের হেল্পলাইন আছে।

    ৫. সন্তান মানসিক চিকিৎসা নিচ্ছে, কিন্তু স্কুল/সমাজ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছে না। সমাধান?
    সন্তানের অনুমতি নিয়ে স্কুলের কাউন্সেলর বা প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলুন। তাদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা ও একাডেমিক সমর্থনের ধরন (যেমন: পরীক্ষার সময় বাড়তি সময়, কিছু অ্যাসাইনমেন্টের এক্সটেনশন) লিখিতভাবে জানান। বাংলাদেশে “মানসিক স্বাস্থ্য আইন, ২০১৮” মানসিক স্বাস্থ্যজনিত কারণে বৈষম্য নিষিদ্ধ করেছে।

    ৬. কি ভাবে বুঝব যে আমার সন্তানের মানসিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে?
    সুস্থতার লক্ষণ ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়: দৈনন্দিন কাজে ফিরে আসা (স্কুল, খেলাধুলা), পরিবার-বন্ধুদের সাথে স্বতঃস্ফূর্ত যোগাযোগ বাড়া, নিজের যত্ন নেওয়া (খাওয়া-ঘুমানো), ভবিষ্যৎ নিয়ে ইতিবাচক কথা বলা এবং স্ট্রেস মোকাবিলার দক্ষতা বাড়া। মনে রাখবেন, উন্নতি রৈখিক নয়—উঠানামা থাকতেই পারে।


    টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্য কেবল চিকিৎসার বিষয় নয়; এটি আমাদের সমাজের অস্তিত্বের প্রশ্ন। আরাফাত, রাব্বি, মৌসুমী, তাসনিমার মতো লক্ষ কণ্ঠস্বর আমাদের ডাকছে—শুধু শোনার জন্য, বোঝার জন্য, তাদের অস্তিত্বকে সম্মান দেওয়ার জন্য। প্রতিটি স্কুলে কাউন্সেলর, প্রতিটি বাসায় সংবেদনশীল আলোচনা, প্রতিটি নীতিনির্ধারকের অগ্রাধিকারই পারে এই প্রজন্মকে বিষণ্ণতার অন্ধকার থেকে টেনে তুলতে। আজই শুরু করুন: আপনার জীবনের কোনো কিশোর-কিশোরীকে জিজ্ঞেস করুন, “তোমার মন আজ কেমন আছে?” তাদের উত্তর শুনুন—সত্যিকারের মন দিয়ে। কারণ, একটি প্রশ্নই হয়তো কারও জীবন বদলে দেবে। আপনার সচেতনতাই হতে পারে কোনো তরুণ প্রাণের রক্ষাকবচ।

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    mental কিশোর উদ্বেগ কিশোর মানসিক সমস্যা জরুরি টিনএজ ডিপ্রেশন টিনএজারদের টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ বাংলাদেশে কিশোর আত্মহত্যা মানসিক মানসিক স্বাস্থ্য পরামর্শ লাইফস্টাইল সাইকোলজিক্যাল ফার্স্ট এইড স্বাস্থ্য
    Related Posts
    পা

    ঘরোয়া উপায়ে হাত-পায়ের কালো দাগ দূর করার দুর্দান্ত উপায়

    August 27, 2025
    নারী

    যেসব লক্ষণে বুঝবেন ছেলেটি আপনাকে বিয়ে করবে না

    August 27, 2025
    Nokh

    নখে সাদা দাগ হয় কেন, অনেকেই এর কারণ জানেন না

    August 27, 2025
    সর্বশেষ খবর
    টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্য

    টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্য: জরুরি পরামর্শ

    Gullak Actor Vaibhav Raj Gupta on Rare Opportunities for Diverse Roles

    Gullak Actor Vaibhav Raj Gupta on Rare Opportunities for Diverse Roles

    ওয়েব সিরিজ

    নতুন ওয়েব সিরিজে সম্পর্কের টানাপোড়েন, দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে!

    Why Germany Banned Apple's 'Carbon Neutral' Watch Claim

    Why Germany Banned Apple’s ‘Carbon Neutral’ Watch Claim

    ইসলামে প্রোডাক্টিভিটির গুরুত্ব

    ইসলামে প্রোডাক্টিভিটির গুরুত্ব: সাফল্যের চাবিকাঠি

    Amid Gun Violence Surge, Fatal South LA Shooting Claims 1 Life

    Amid Gun Violence Surge, Fatal South LA Shooting Claims 1 Life

    Apple Sets iPhone 17 Launch Event for September 9

    Apple Sets iPhone 17 Launch Event for September 9

    কাল ঘোষণা করা হবে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ, জানালেন ইসি সচিব

    web series

    এই ওয়েব সিরিজে সম্পর্কের টানাপোড়েন, ভুলেও মিস করবেন না

    ওমরাহ যাত্রী

    ওমরাহ যাত্রী ও শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুবিধা ঘোষণা

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.