নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: হাতুড়ি পেটানোর টুং-টাং শব্দে মুখর হয়ে ওঠেছে গাজীপুরের কামারের দোকানগুলো। সকাল থেকে রাত অব্দি চলছে নতুন- পুরাতন দা-বটি ছুরি, চাপাতি তেরি বা শাণ দেয়ার কাজ। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে তাদের এ ব্যস্ততা বেড়ে গেছে।
যারা পশু কোরবানি দেন তাদের মাংস প্রস্তুত করতে এসব দা-বটি ছুরি, চাপাতি প্রয়োজন। তাই অনেকে এ উপলক্ষে নতুন করে দা-বটি ছুরি, চাপাতি কিনছেন আবার কেউ কেউ পুরাতনগুলোতে শাণ দিয়ে নিচ্ছেন। তাই ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে কামারদের ব্যস্ততা। বাড়তি কিছু রোজগারের জন্য বছরের এ সময়গুলোর প্রতীক্ষায় থাকেন কামারেরা। অনেকে বাড়তি চাপ সমাল দিতে নতুন কর্মচারী নিয়েছেন। দোকানগুলোতে এখন প্রতিক্ষণই চলছে ওই সবসামগ্রী আগুনের শিখায় তাপ দেওয়া, হাতুরি দিয়ে পেটা করে তেরি ও শান দেয়ার কাজ।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের উত্তর বিলাশপুর এলাকার আহম্মদ আলী দোকান দিয়েছেন একই সিটি করপোরেশনের হাড়িনাল বাজারে। তিনি জানান, বছর অন্য সময়গুলোতে টুকিটাকি কাজ থাকে। এবার করোনার কারণে লকডাউনের সময়র কাজ একেবারেই বন্ধ ছিল। গত কয়েকদিন যাবত কাজের চাপ কিছুটা বাড়তে থাকে। এরজন্য তিনি তার নিয়মিত দুই জন কর্মচারীর পাশাপাশি আরো তিন কর্মচারী নিয়োগ করেছেন। সোমবার দিবাগত রাত তার দোকানে রাত দেড়টা পর্যন্ত কাজ চলেছে। অন্যান্য কোরবানির ঈদের চেয়ে এখনো কাজ কম জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, বাকি দিনগুলোতে কাজ আরও বাড়বে। সিটি অন্য হাট বাজারগুলোতেও কামারের দোকানে ব্যস্ততা দেখা গেছে।
পুরাতন দা-বটি ছুরি, চাপাতি শান দেওয়ার পাশাপাশি আহম্মদ আলী বিক্রির জন্য এসব সামগ্রী তৈরি করে দোকানে সাজিয়ে রেখেছেন। এ প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, বটি আকার ভেদে শান দিতে নেন ৪০ টাকা থেকে ৮০ টাকা, আর বিক্রি করেন ৩০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায়। একইভাবে চাপাতি (কোপা) শান দিতে নেন ১০০ টাকা, বিক্রি করেন ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, ছোট ছুরি শানে ৩০ টাকা বিক্রি ৮০ থেকে ১২০ টাকা, বড় ছুরি শানে ৫০ থেকে ১০০ টাকা ও বিক্রি ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বোর্ডবাজার এলাকার মো. জয়নাল আবেদীন তালুকদার বলেন, ‘অন্য সময় সাধারণত কসাইয়ের দোকান থেকে আমরা মাংস নেই। সে ক্ষেত্রে আমাদের ছুরি, চাপাতি ইত্যাদির প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু কোরবানির ঈদে নিজেরাই পশু জবাই ও মাংস প্রস্তুত করি। যার কারণে এগুলোর প্রয়োজন হয়।’
তিনি জানান, ঈদ উপলক্ষে কামারের দোকানে বেশ ভিড় রয়েছে। শান দেওয়ার দামও তুলনামূলক বেশি।
বাড়ির পাশের কামারের দোকান থেকে বড় ছুড়ি ১৫০ টাকা, ছোট ছুরি ৬০ টাকা এবং চাপাতি ৩০০ টাকা করে শান দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।