প্রযুক্তি সদা পরিবর্তনশীল। বিগত ২০ বছরে প্রযুক্তি যেভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, ভাবতে পারেন ২০ বছর পর তা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? এই পরিবর্তন আমাদের জীবন এবং জীবিকা দুটোতেই প্রভাব ফেলে চলেছে। পরিবর্তনের এই নতুন যুগের নামই চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, যা প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।
মেশিন লার্নিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, অগমেন্টেড রিয়ালিটি, ভার্চুয়াল রিয়ালিটি, থ্রিডি প্রিন্টিং, রোবোটিকস ও আইওটি ইত্যাদি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই প্রযুক্তিগুলোকে যুগান্তকারী প্রযুক্তিও বলা হয়; কেননা এরা সমাজের বিদ্যমান চাহিদা পূরণ করার প্রচলিত প্রথাকে পাল্টে দিচ্ছে। ফলে চাকরির বাজারে এরা যোগ করছে নতুন মাত্রা। অনেক কাজ এবং দক্ষতাকে প্রতিস্থাপন করছে প্রযুক্তি দিয়ে। ফলে চাকরি হারাচ্ছে মানুষ।
শেখার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা থাকতে হবে। দক্ষতা বাড়ানোর জন্য এআই-টুলসের সহায়তা নিতে হবে। শিক্ষার্থীরা গ্রেডস্কোপ, নুয়েন্স ড্রাগন স্পিচ রিকগনিশন, আইভি চ্যাটবট, কগনি, কার্নেগি লার্নিং প্লাটফর্ম, সেঞ্চুরি টেকের মতো এআই টুলস ব্যবহার করতে পারেন। ভাষাশিক্ষার জন্য ব্যবহার করতে পারেন নৌজি, লেখার দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্লাটিও ব্যবহার করতে পারেন।
সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যাথ শেখার জন্য কুয়েরিয়াম একটি ভালো এআই টুল। তাছাড়া কোর্সেরা, ইউডেমি, খান একাডেমি, টেন মিনিট স্কুলের মতো সাইটগুলো থেকেও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রযুক্তিবিষয়ক কোর্স করতে পারেন অনায়াসে। কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামের বাইরেও অনেক কোর্স করতে হবে নিজ উদ্যোগে।
সমন্বিত কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা-প্রশিক্ষণ (টিভিইটি) শক্তিশালী ও জনপ্রিয় করতে হবে। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির যোগাযোগ বাড়াতে হবে। তাদের কারিকুলাম হতে হবে সবুজ অর্থনীতি, সুনীল অর্থনীতি এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বাংলাদেশের সমাজে টিভিইটিকে শিক্ষাকে জনপ্রিয় করে তোলাটা দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমেই কারিকুলামকে যুগোপযোগী করতে হবে। প্রতিটি প্রোগ্রামকে অ্যাক্রেডিটেশনের আওতায় আনতে হবে। আউটকাম বেজড এডুকেশন (ওবিই) নিশ্চিত করতে হবে। বিদেশী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও দেশীয় ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। মিড লেভেল ম্যানেজমেন্টের ট্রেনিং প্রোগ্রাম, ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম চালু করতে হবে। সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের প্রজেক্ট, ইন্টার্নশিপ, প্রেজেন্টেশন, ইনোভেশন, কেস-স্টাডিতে উৎসাহিত করা প্রয়োজন।
শেখার মানসিকতা; নিজের দক্ষতা বাড়ানো; নিজের উৎকর্ষ সাধনে সচেষ্ট থাকা; অভিযোজন ক্ষমতা বাড়ানো দরকার। দলবদ্ধ হয়ে কাজ করার দক্ষতা; কমিউনিকেশন; নেতৃত্বদানের দক্ষতা; নতুন নতুন ভাষা শেখায় গুরুত্ব দিতে হবে। উদ্ভাবনী ও সৃজনশীল চিন্তাভাবনা; ক্রিটিক্যাল থিংকিং; বিশ্লেষণাত্মক স্কিল; দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার দক্ষতা; সমস্যা সমাধানের দক্ষতা; সময়ের সঠিক ব্যবহার এবং সময়ানুবর্তিতা; পরিকল্পনা এবং সংগঠিত করার দক্ষতাও থাকতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।