কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সৃষ্টিশীল প্রযুক্তি দিয়ে এখন মুহূর্তেই অনলাইনভিত্তিক অনেক কাজই করে ফেলা যায়। এবার কয়েক মিনিটেই টেক্সট থেকে ভিডিও বানিয়ে দেবে এআই।
এআই সোরা নামে নতুন একটি টুল বা অ্যাপস নিয়ে এসেছে চ্যাপজিপিটি তৈরি করা প্রতিষ্ঠান ওপেন এআই। যা দিয়ে কয়েক মিনিটেই টেক্সট থেকে ভিডিও তৈরি করা যাবে। অর্থাৎ এখন থেকে ভিডিও তৈরি করতে আর খুব বেশি কষ্ট করা লাগবে না।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির দুনিয়ায় রীতিমতো একের পর এক বিপ্লব ঘটে চলেছে। চ্যাটজিপিটি আসার পর এরই মধ্যে সারাবিশ্বের প্রযুক্তিতে বিশাল পরিবর্তন এসেছে। এখন অনেক কিছুই করে দিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কিছু বিষয়ে লিখতে বললে লিখে দিচ্ছে। অনুবাদ করতে বললে তাও করে দিচ্ছে। কবিতা লিখছে।
আর এবার মুহূর্তেই ভিডিও বানিয়ে দেবে এআই। ওপেন এআই নিয়ে এসেছে টেক্সট থেকে ভিডিও এআই মডেল। নাম এআই সোরা। সামান্য কিছু টেক্সট লিখে দিলেই একটা আস্ত ১ মিনিটের ভিডিও বানিয়ে দিতে পারবে এই টুল। সোরা এআই-এর এক ব্লগে বলা হয়েছে, আমরা এআইকে শিখিয়ে দিচ্ছি কীভাবে চলমান বাস্তব জগতকে বুঝতে হয়, কীভাবে এই জগতের ভাষা আয়ত্ত করতে হয় এবং বাস্তব জগতের সমস্যা সমাধানের জন্য ‘রিয়াল ওয়ার্ল্ড ইন্টার্যাকশনে’র প্রশিক্ষণও দিয়ে দিচ্ছি আমরা।
এ ব্যাপারে ওপেন এআই-এর সিইও স্যাম অল্টম্যান তার এক্স হ্যান্ডলে বিশেষ এই টুলটি কীভাবে কাজ করে তা দেখিয়েছেন। সেই পোস্টে তিনি লিখেছেন, কমেন্ট ও ক্যাপশনের মাধ্যমে নেটিজেনরা জানাক তারা ঠিক কীরকম ভিডিও চান। আর সেই চাহিদাকে মাথায় রেখেই ভিডিও বানানো শুরু করবে সোরা এআই।
অল্টম্যানের এই পোস্ট দেখে তার বহু অনুসারীই কমেন্টেই নানারকম টেক্সট প্রম্পট লিখে দেন এবং তার থেকে যে ফল আসে তা স্যাম অল্টম্যান পোস্ট করেন এক্স হ্যান্ডলে। সেই ভিডিও দেখে কখনও মনে হবে না যে সেটা এআই দিয়ে তৈরি। একেবারে বাস্তবের মত।
ওপেন এআই জানিয়েছে, সোরা এআইয়ের সাহায্যে বহু চরিত্র সম্পন্ন একাধিক ঘটনা, জটিল ব্যাকগ্রাউন্ডসহ দৃশ্যও তৈরি করা যাবে। এই মডেলটি শুধু যে ব্যবহারকারীর কমান্ড প্রম্পটকে পড়ে কাজ করে তা নয়, বরং বাস্তব দুনিয়ায় কীভাবে এই সমস্ত উপাদানগুলো দেখতে হয়, কেমন তার রূপ হয় সে ব্যাপারেও ধারণা দেবে সোরা এআই।
ওপেন এআই জানাচ্ছে, সোরা মডেলটি খুব গভীরভাবে ভাষা বুঝতে সক্ষম, প্রম্পট ইন্টারপ্রিট করতে পারে এই মডেল, আবেদনযোগ্য চরিত্র সৃষ্টিতে সাহায্য করে সোরা। একটা সিঙ্গল জেনারেটেড ভিডিওর মধ্যে সোরা অনেকগুলো শট তৈরি করতে পারে।
তবে সোরা এআই-এর এত ক্ষমতা ও দক্ষতা নিয়ে সন্দিগ্ধ নেটিজেনদের একাংশ। অনেকেই গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন যে, এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যেই যদি এমন সব ভিডিও বানিয়ে ফেলা যায়, তাহলে আরও মানুষের আর কাজ কী!
অনেকের মনেই প্রশ্ন, এর কারণে অনেক ভিডিও-সম্পর্কিত কর্মজীবীদের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে আসবে। এতে অনেকেই বেকার হয়ে পড়বে, যা মোটেই ভালো খবর নয়! তাছাড়া ইচ্ছেমতো নকল ভিডিও তৈরি করা সম্ভব হবে।
এরই মধ্যে ডিপফেইকের মতো কিছু এআই অ্যাপস নিয়ে মানুষের মধ্যে এক উদ্বেগ কাজ করছে। ডিপফেইক অ্যাপস দিয়ে অনেক নারী জীবনে কালো মেঘ নেমে আসছে। এর কবল থেকে মুক্তি পাচ্ছে না নামি-দামি অভিনেত্রীরাও।
এখন অনেকেরই ভয়, এআই সোরা’র মাধ্যমে নকল প্রমাণও তৈরি করা সম্ভব হবে। তা নিয়ে মুখ খুলেছে ওপেন-এআই কর্তৃপক্ষ। তারা জানান, এআই সোরা’র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বস্ব দিয়ে কাজ করছেন তারা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।