জুমবাংলা ডেস্ক: গণফোরামের নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন ড. কামাল হোসেনের বিরোধীরা। একইসঙ্গে ড. কামাল হোসেনকে দলের প্রধান উপদেষ্টা ও ডা. মো. মিজানুর রহমানকে সভাপতি পরিষদের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরামের বিক্ষুব্ধ অংশের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।
এর আগে গত শনিবার ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি এবং ডা. মো. মিজানুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে দলটির ১০১ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সংবাদ সম্মেলনে এ কমিটি ঘোষণার পর ১০১ সদস্যের নাম পড়ে শোনান নতুন সাধারণ সম্পাদক।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, গণফোরামের সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পর্কহীন, দল থেকে পদত্যাগকারী নিষ্ক্রিয় কিছু ব্যক্তি নিয়ে গণফোরাম নাম দিয়ে ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি এবং ডা. মো. মিজানুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। ড. কামাল হোসেনকে ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে প্রধান উপদেষ্টা ও মিজানুর রহমানকে সভাপতি পরিষদের সদস্য নির্বাচিত করা হয়েছিল। কিন্তু তারা কেউ গণফোরামের নির্বাচিত কমিটি থেকে পদত্যাগ না করে গঠনতন্ত্র পরিপন্থীভাবে এ কমিটি ঘোষণা করেছেন। এমতাবস্থায় ড. কামাল হোসেনকে দলের প্রধান উপদেষ্টা ও ডা. মো. মিজানুর রহমানকে সভাপতি পরিষদের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
সংবাদ সম্মেলনে দেশবাসী ও গণফোরামের নেতাকর্মী-শুভাকাঙক্ষীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করেন ড. কামাল হোসেনের বিরোধীরা।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে এসে ১৯৯২ সালের ২৯ আগস্ট গণফোরাম নামে আলাদা রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন ড. কামাল হোসেন। প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) থেকে বেরিয়ে আসা সাইফউদ্দিন আহম্মেদ মানিক।
এভাবেই চলতে থাকে দলটি। সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপিসহ আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এর শীর্ষ নেতা হন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। নির্বাচনে মাত্র একটি আসন পায় দলটি। তবে এই নির্বাচনের পর বিএনপির সঙ্গে জোট গঠনসহ নানা ইস্যুতে অভ্যন্তরীণ সংকট তৈরি হয় গণফোরামের ভেতরে।
এর মধ্যে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ২০১৯ সালের ২৬ মে অনুষ্ঠিত গণফোরামের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দলটিতে টানাপোড়েন প্রকাশ্যে আসে। ওই সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে মোস্তফা মহসিন মন্টুকে সরিয়ে দলের নবাগত ড. রেজা কিবরিয়াকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর থেকেই বহিষ্কার-পালটা বহিষ্কারের পথ ধরে ভাঙনের মুখে হাঁটতে থাকে গণফোরাম।
সম্মেলনের পরপরই দলটির শীর্ষ নেতারা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে আলটিমেটাম দিয়ে আলাদা আলাদা কাউন্সিল আয়োজনেরও উদ্যোগ নেয়। এ অবস্থায় ড. রেজা কিবরিয়াকে সরিয়ে দেওয়াসহ কমিটি বাতিল করে দিয়ে ড. কামাল হোসেন ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করেন তার দলকে। তবে এতসবেও শেষরক্ষা হয়নি। কিছুদিন না যেতেই ড. কামাল হোসেনকে বাদ দিয়ে গণফোরামের বর্ধিত সভা শেষে আলাদা কমিটি গঠন করেন দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু। বিক্ষুব্ধদের বাদ দিয়ে শনিবার ঘোষিত হয় আরেকটি নতুন কমিটি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।