আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ডিএনএ পরীক্ষা সাধারণত পিতৃপরিচয় বা বংশ নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত হয়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসছে একের পর এক অজাচার বা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক এবং এর মধ্য দিয়ে লাভ করা সন্তানদের মধ্যে আন্তজৈবিক সম্পর্কের ঘটনা। বলা হচ্ছে, সব সমাজেই অজাচারের মতো ঘটনা কম-বেশি ঘটে থাকে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা ধারণার চেয়েও বেশি সংখ্যায় প্রকাশ পাচ্ছে।
এ বিষয়ে দ্য আটলান্টিকের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯৭৫ সালে একটি মনঃসমীক্ষার বইয়ে প্রকাশিত গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রে অজাচারের মতো ঘটনায় জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছিল—প্রতি লাখে মাত্র একজন। কিন্তু সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে, এই সংখ্যাটি এখন প্রতি সাত হাজারে একজনে এসে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি সিএনএনে প্রকাশিত এ-সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদনে ভিক্টোরিয়া হিল নামে এক নারীর ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ওই নারী একটি অপ্রিয় সত্যের মুখোমুখি হয়েছেন।
৩৯ বছর বয়সী হিল একটি ডিএনএ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার পর জানতে পারেন তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে তাঁর পারিবারিক লতা-সূত্রের যোগ রয়েছে। বিষয়টিতে তাঁরা দুজনই অবাক হয়েছিলেন। এ অবস্থায় তাঁর সাবেক প্রেমিকও ডিএনএ পরীক্ষায় অংশ নেন। এর ফলে যে সত্য বেরিয়ে এসেছে—তা মোটেও সুখকর ছিল না। সাবেক এই প্রেমিক-প্রেমিকা জানতে পারেন, তাঁরা আসলে ভাই-বোন। মা আলাদা হলেও তাঁদের বাবা হলেন একই ব্যক্তি।
ভিক্টোরিয়া হিল যাকে এত দিন নিজের বাবা জেনে এসেছেন, তিনি আসলে তাঁর জৈবিক পিতা ছিলেন না। সিএনএনকে হিল বলেন, ‘আমি এই ঘটনার দ্বারা আঘাত পেয়েছি। এখন আমি মানুষজনের ছবি দেখে ভাবছি—এই লোকগুলোও আমার ভাই কিংবা বোন হতে পারে।’
হিলের ধারণা অমূলক নয়। পরবর্তী সময় তিনি পরে জানতে পেরেছেন, তাঁর আরও অনেক ভাই-বোন রয়েছে। হিল বলেন, ‘আমি আমার সৎভাইয়ের সঙ্গে শুয়েছি। অন্য একজনের সঙ্গে গেছি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।’
মূলত একটি দুর্ঘটনাজনিত অজাচারের ঘটনা উন্মোচন করতে গিয়ে ভিক্টোরিয়া হিলের ঘটনা তুলে ধরেছে সিএনএন। হিলের মা সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য দান করা শুক্রাণু গ্রহণ করেছিলেন। যে চিকিৎসকের অধীনে তিনি এই পদ্ধতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলেন, সেই চিকিৎসকই নিজের শুক্রাণু আরও অনেকের মতো হিলের মায়ের ডিম্বাণুতে স্থাপন করেছিলেন। ডা. ডোনাল্ড ক্লেইনের মতো আরেক চিকিৎসকের বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ রয়েছে, যিনি ভারতে এভাবে অন্তত ৯০টি শিশুর জন্ম দিয়েছিলেন।
অজাচারের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুদের জন্মগত ত্রুটি এবং জিনগত রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে বলে দাবি করে আসছেন বিজ্ঞানীরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।