জুমবাংলা ডেস্ক: কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল এলাকায় বাঁকখালী নদীর উপকূলে বেসরকারি উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়েছে বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিশাল পাখাসম্পন্ন ১০টি উইন্ড টারবাইনের মধ্যে ৭টি থেকে পাওয়া যাচ্ছে ১৫-২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
বড় বড় টাওয়ারের ওপর বসানো এসব পাখার ঘূর্ণন থেকেই সৃষ্টি হচ্চছে বৈদ্যুতিক শক্তি। এ বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আলাদা কোনো জ্বালানি খরচ নেই। বাতাসই এখানে এর জ্বালানি। বাতাস হলেই পাখা ঘোরে, উৎপাদিত হয় বিদ্যুৎ।
গত ২৫ মে এই বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন ও বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, খনিজ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে কক্সবাজারের চাহিদা পূরণ সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কক্সবাজার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল কাদের গনি জানান, পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু করার পর থেকে এই বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১৫ থেকে ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। কাজ শেষ হওয়া ১০টি টারবাইনের মধ্যে ৭টি থেকে এই বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে।
আব্দুল কাদের গনি বলেন, বর্তমানে কক্সবাজার শহর ও শহর সংলগ্ন এলাকায় যে ৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা আছে তার কিছুটা এই বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে মেটানো হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের এই প্রকৌশলীর ভাষ্য, গেল জুন মাসে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৩০ লাখ কিলোওয়াট ইউনিটের বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, এই প্রকল্পের আওতায় আগামী ডিসেম্বর নাগাদ মোট ২২টি উইন্ড টারবাইন বসানো হবে। এরপরই পুরোদমে উৎপাদন শুরু হবে এ প্রকল্পে। সবগুলো টারবাইন বসানো হলে এখান থেকে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। বাতাসের নির্দিষ্ট গতিবেগে একেকটি টারবাইন থেকে সর্বোচ্চ ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে। সবগুলো টারবাইন চালু হলে কক্সবাজার শহর ও আশপাশের এলাকাগুলোর বিদ্যুতের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে।
বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মুকিত আলম খান জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউএস–ডিকে গ্রিন এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেড। এতে খরচ হচ্ছে ১১৬ দশমিক ৫১ মিলিয়ন ডলার। সদর উপজেলার খুরুশকুল, চৌফলদন্ডী, পিএম খালী ও পোকখালী- এ ৪ ইউনিয়ন মিলিয়ে বসানো হচ্ছে ২২টি টারবাইন। এর ভেতর ২টি টারবাইন স্ট্যান্টবাই থাকবে। টারবাইনগুলো যে টাওয়ারের ওপর বসানো সেগুলোর প্রতিটির উচ্চতা ৯০ মিটার। টারবাইনের প্রতিটি ব্লেড ৬০ মিটার লম্বা।
মুকিত আলম খান জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বাতাসের যে গড় গতি দরকার, প্রকল্প এলাকায় তার চেয়ে কখনো কখনো ৩ গুণ বেশি গতি পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (পিডিবি) ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার সেল-৩-এর উপ-পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ ফরিদি বলেন, কক্সবাজার বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের দাম হবে শূন্য দশমিক ১২ মার্কিন ডলার। চুক্তি অনুসারে কোম্পানিটি ২০ বছরের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।
২০২২ সালের ৩১ মার্চ কক্সবাজার বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।